লস এঞ্জেলেসে এক অভিবাসন অভিযানের সময় এক টিকটক নির্মাতা এবং এক মার্কিন মার্শাল গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (DHS)।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার, যখন ৪৪ বছর বয়সী মেক্সিকান নাগরিক কার্লিটোস রিকার্ডো পারিয়াস, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন বলে অভিযোগ, অভিবাসন কর্মকর্তাদের হাত থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। DHS জানায়, পারিয়াস তার গাড়ি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যানবাহনকে আঘাত করেন, যার পর কর্মকর্তারা গুলি চালান। এতে পারিয়াসের কনুইতে গুলি লাগে এবং এক মার্কিন মার্শাল রিকোশেট করা গুলিতে হাতে আহত হন। দুজনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তবে তারা দুজনেই আশঙ্কামুক্ত।
পারিয়াস লস এঞ্জেলেসের দক্ষিণাঞ্চলে অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) কার্যক্রম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত ভিডিও প্রকাশ করতেন। স্থানীয় এক সিটি কাউন্সিল সদস্য পূর্বে তাকে কমিউনিটিকে “সচেতন ও সুরক্ষিত রাখতে অবদানের জন্য” সম্মাননা দিয়েছিলেন।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন বলেন, “এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে, যেসব রাজনীতিবিদ ও কর্মী অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার প্রতিরোধে উৎসাহিত করেন, তাদের বক্তব্যের ফল কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।” তিনি দাবি করেন, সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হুমকির পরিমাণ ১০০০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।
মার্কিন অ্যাটর্নি অফিসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পারিয়াসের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অভিবাসন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল এবং তিনি পূর্বেও গ্রেপ্তার এড়িয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকালে কর্মকর্তারা তাকে একটি ধূসর টয়োটা ক্যামরিতে বাড়ি থেকে বের হতে দেখেন এবং গাড়িটি ঘিরে ধরেন। কিন্তু পারিয়াস তাদের নির্দেশ অমান্য করে গাড়িটি সামনের দিকে ও পেছনের দিকে চালিয়ে দুইটি সরকারি গাড়িতে ধাক্কা দেন।
অ্যাটর্নি বিল এসেলি বলেন, “একটি গাড়ি প্রাণঘাতী অস্ত্রের সমান।” কর্মকর্তারা জানালার কাচ ভেঙে তাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
লস এঞ্জেলেস সিটি কাউন্সিলম্যান কারেন প্রাইস, যিনি পারিয়াসকে পূর্বে সম্মাননা দিয়েছিলেন, বলেন, “রিকার্ড আমাদের কমিউনিটির একজন স্তম্ভস্বরূপ, একজন সাহসী নাগরিক সাংবাদিক, যিনি দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ লস এঞ্জেলেসের মানুষের না-বলা গল্পগুলো তুলে ধরেছেন।”
ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে অবৈধ অভিবাসন দমন অভিযানের অংশ হিসেবে ICE-এর অভিযানগুলো সম্প্রতি আরও জোরদার হয়েছে। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় আনুমানিক ১৪ লক্ষ অনিবন্ধিত অভিবাসী বাস করেন, যাদের অনেকেই বর্তমানে গোপনে অবস্থান করছেন।
লস এঞ্জেলেসে সাম্প্রতিক অভিবাসন অভিযানগুলো ব্যাপক প্রতিবাদ ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শহরে ও অন্যান্য অঞ্চলে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছেন, যাতে এসব প্রতিবাদ দমন করা যায়।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
এলএবাংলাটাইমস/ওএম