নিউইয়র্ক

বোস্টনে বোমা হামলাকারীর প্রান দন্ড

যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় বোমা হামলার দায়ে জোখার সারনায়েভকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন জুরি বোর্ড। প্রাণঘাতী ইনজেকশন দিয়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এতে হামলা থেকে রক্ষা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সারনায়েভের মৃত্যুদণ্ড হওয়াটাই ঠিক হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করা ব্যক্তিরা এতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তাঁদের মধ্যে হামলায় নিহত আট বছরের ছেলে রিচার্ড মার্টিনের মা-বাবাও রয়েছে।
২০১৩ সালের ১৫ এপ্রিল ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ঐতিহ্যবাহী বোস্টন ম্যারাথনে জোড়া বোমা হামলায় তিনজন নিহত ও ২৬০ জন আহত হন। চেচেন বংশোদ্ভূত দুই ভাই জোখার সারনায়েভ ও তামেরলান সারনায়েভ এই হামলায় জড়িত বলে দাবি পুলিশের। বোস্টন হামলার এক দিন পর পুলিশের সঙ্গে গুলিবিনিময়ে নিহত হন বড় ভাই তামেরলান। পরদিন আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয় ছোট ভাই জোখারকে। জোখার তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত সারনায়েভকে ইন্ডিয়ানার একটি কারাগারে রাখা হবে। বিবিসির খবরে জানানো হয়, মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়ার সময় সারনায়েভের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
এই রায়ে বোস্টন হামলা থেকে রক্ষা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে বলছেন, সারনায়েভের মৃত্যুদণ্ডই হওয়া উচিত ছিল। এটিই তাঁর অপরাধের উচিত শাস্তি। মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে থাকা ব্যক্তিরা এতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাঁরা বলছেন, কারও প্রাণ কেড়ে নেওয়ার মধ্যে দিয়ে সুবিচার প্রতিষ্ঠা হতে পারে না। তাঁদের মধ্যে হামলায় নিহত আট বছরের মার্টিন রিচার্ডের মা-বাবাও রয়েছেন। ১৯৮৪ সালের পর থেকে ম্যাসাচুসেটসে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি। তবে অপরাধ গুরুতর হওয়ায় সারনায়েভের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো।
বোস্টনের ওই হামলায় লিজ নর্ডেনের দুই ছেলে এখ প্রতিবন্ধী। তিনি বলেন, সারনায়েভের মৃত্যুদণ্ডের কথা শোনার পর মনে হলো তাঁর কাঁধ থেকে বড় একটি বোঝা নেমে গেল। তিনি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রতিটি ধাপ দেখতে চান বলে জানান।
মৃত্যুদণ্ডবিরোধী ব্যক্তিরা এই রায়ের পর ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন। গতকাল শুক্রবার রায় হওয়ার পর কোনো মন্তব্য না করে রিচার্ডের মা-বাবা আদালত প্রাঙ্গণ থেকে চলে যান।
হামলায় পা হারিয়েছেন হিদার অ্যাবট। হামলায় আহত ব্যক্তিদের সহায়তায় তিনি একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। ওই সংস্থার ফেসবুক পেজে তিনি বলেন, সারনায়েভের মৃত্যুদণ্ডে তিনি শান্তি পাননি।
বোস্টনের ওই ম্যারাথনে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে গিয়েছিলেন কারেন ব্রাসার্ড। হামলায় তাঁরা আহত হন। তিনি বলেন, কারও জীবন কেড়ে নেওয়ার মধ্যে আনন্দের কিছু নেই। এই রায়ে তিনি খুশি হতে পারছেন না।