নিউইয়র্ক

বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লংঘনের প্রতিবাদে নিউইয়র্কে মানববন্ধন

নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনাকারিদের নির্বিচারে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন দেশে ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং সিরিয়ার রিফ্যুজিদের উন্নত বিশ্বে আশ্রয় প্রদানের দাবিতে ২৮ মে শনিবার নিউইয়র্কে এক মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশী-আমেরিকানদের নেতৃত্বাধীন ‘ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ সংস্থার ব্যানারে জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায় এই কর্মসূচিতে ভিনদেশী মানবাধিকার কর্মীরাও অংশ নেন। এ সময় বাংলাদেশে মুক্তমনা লেখক-বুদ্ধিজীবী-শিক্ষক-রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যাকান্ডের সমালোচনায় করা হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, চীন, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের ৫ হাজারের অধিক রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আরো ৫০ হাজারের অধিক বিদেশীকে ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, টেক্সাস, আলাবামা, লুইঝিয়ানা, নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, আরিজোনাসহ বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক রাখা হয়েছে। নিজ নিজ দেশের সরকারী দলের নির্যাতনে অতীষ্ঠ হয়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন কোর্ট কারোর কথাই বিশ্বাস না করে সকলকেই অবিলম্বে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর সংশ্লিষ্ট দেশের দুতাবাস/কন্স্যুলেটের সাথে যোগাযোগক্রমে যাদের ট্র্যাভেল ডক্যুমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে তাদেরকেই হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের প্রক্রিয়াকে মানবতাবিরোধী বলে অভিহিত করা হয় মানববন্ধন থেকে। এ সময় ‘ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ সংস্থার প্রেসিডেন্ট শাহ শহীদুল হক সাঈদ এনআরবি নিউজকে প্রচন্ড ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দাদাগিরি দেখায়। অথচ নিজেরাই প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লংঘন করে চলেছে। এর চেয়ে দু:খের আর কি হতে পারে।’ ‘অথচ ইমিগ্র্যান্টদের শ্রম-মেধায় বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র’-উল্লেখ করেন শাহ সাঈদ।

গত সপ্তাহে ব্রঙ্কসে সিরাজুল ইসলাম খান নামক আরেক বাংলাদেশীর ওপর ধর্মীয় বিদ্বেষমূলকভাবে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও ব্রঙ্কসে আরো ৮ বাংলাদেশী আক্রান্ত হন। এহেন হামলাকে ‘হেইট ক্রাইম’ হিসেবে অভিহিত করে পুলিশ প্রশাসনকে সোচ্চার হবার আহবান জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।

গাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরব থেকে ৪০ হাজার গৃহকর্মীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়ার ঘটনারও নিন্দা জানানো হয় এ কর্মসূচি থেকে।

দাবির সমর্থনে পোস্টার, প্লেকার্ড হাতে নেতা-কর্মীরা অংশ নেন এ কর্মসূচিতে। হোস্ট সংগঠনের প্রেসিডেন্ট শাহ শহিদুল হক সাঈদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আখতার হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই মানব বন্ধন ও র‌্যালীতে অতিথির মাঝে ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন খান, সাংবাদিক মঈনউদ্দিন নাসের, লীগ অব আমেরিকার সাবেক সভাপতি এমাদ চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য আলী ইমাম সিকদার, সহ সভাপতি ফারুক হোসেন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদার, ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইট্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর উপদেষ্টা হাকিকুল ইসলাম খোকন, খায়রুল খায়ের, ইলিয়াছ গাজী, গ্রীণ টাচ এর নির্বাহী পরিচালক এম লিয়াকত আলী, বাংলাদেশ সোসাইটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও মূলধারার রাজনীতিক ওসমান চৌধুরী, সদস্য নাদির আইয়ুব, নাছির উদ্দিন আহমেদ, মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর এসোসিয়েশন এর সভাপতি রুহুল আমিন সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক নওশাদ হোসেন, সদস্য মঈন আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা টি. মোল্লা, নাদিম খান প্রমুখ।