খেলাধুলা

জার্মান থেকে অবসরই নিয়ে ফেললেন ওজিল

অবশেষে জার্মান জাতীয় দল থেকে সরে দাঁড়াতেই হল মেসুত ওজিলকে। বিশ্বকাপের আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোয়ানের সাথে দেখা করেছিলেন ওজিল। তারপরই এ নিয়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। মাঠে ও মাঠের বাইরে নানা সমালোচনার শিকার হতে হয় তাকে। এমনকি এ নিয়ে জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও (ডিএফবি) ওজিলের কঠোর সমালোচনা করে। এইসবের জের ধরে জার্মান দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন ২৯ বছর বয়সী এই আর্সেনাল তারকা।

ঘটনাটি বিশ্বকাপের আগে। লন্ডনে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সাথে দেখা করেন তুর্কি বংশোদ্ভূত ওজিল। মূলত নিজের তুর্কি ঐতিহ্যের কারণেই এরদোয়ানের সাথে দেখা করেন তিনি। কিন্তু বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি জার্মানরা। কারণ এরদোয়ানের সাথে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের সম্পর্কটা মোটেও ভাল নয়। দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কও বেশ উত্তপ্ত। এই পরিস্থিতিতে তুর্কি প্রেসিডেন্টের সাথে ওজিলের সাক্ষাতের বিষয়টি মোটেও ভালোভাবে নেয়নি জার্মানরা। এরপর থেকেই তীব্র সমালোচনার শিকার হতে থাকেন ওজিল। দেশটির রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে এমনকি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তোপের মুখে পড়তে হয় তাকে। পাশাপাশি মাঠে নিজ দেশের দর্শকদের দুয়ো ধ্বনি শুনতে হয়। এ সব মিলিয়ে জার্মানির জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ফুটবল না খেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

জার্মান দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে দীর্ঘ বার্তায় ওজিল লিখেছেন, ‘মে মাসে আমি একটি দাতব্য ও শিক্ষা বিষয়ক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সাথে লন্ডনে সাক্ষাত করেছিলাম। ২০১০ সালে বার্লিনে মেরকেল ও এরদোয়ান একসাথে জার্মানি ও তুরস্কের ম্যাচ দেখার পর আমি তার সাথে প্রথমবার দেখা করি। তারপর পৃথিবীতে অনেক কিছুরই পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের ছবি নিয়ে জার্মান মিডিয়ার বাড়াবাড়ি নিয়ে আমি সচেতন আছি। কিছু মানুষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমার সম্পর্কে মিথ্যাচার করছে।’

‘আমি খুবই কষ্টের সাথে ও অনেক চিন্তাভাবনা করে জার্মান দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ আমি রেসিজম ও অসম্মানের শিকার হয়েছি। জার্মানির জার্সি আমার জন্য গর্বের ও রোমাঞ্চকর ছিল। কিন্তু এখন আর তা নেই। এই সিদ্ধান্ত নিতে আমার খুবই কষ্ট হয়েছে। কারণ আমার সতীর্থ, কোচিং স্টাফ ও জার্মানির ভালো মানুষদের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছি।’

‘কিন্তু যখন ডিএফবি-এর উচ্চপদস্থ কেউ আমাকে আমার তুর্কি ঐতিহ্য নিয়ে হুমকি দেয় এবং স্বার্থপরের মতো রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডায় লিপ্ত হয়, তখন তা মেনে নেওয়া যায় না। যথেষ্ট হয়েছে। এ কারণে আমি ফুটবল খেলি না। রেসিজম কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।’

জার্মানির হয়ে ৯৩ ম্যাচে ২৩ গোল করেছেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। এছাড়া ইংলিশ ক্লাব আর্সেনালের হয়ে ১৪২ ম্যাচে ২৭ গোল করেছেন তিনি।


এলএবাংলাটাইমস//এলআরটি