ম্যাচ শেষে সাধারণত খেলোয়াড়দের নৈপুণ্যনিয়েই আলোচনা হয়। অথচ বাংলাদেশ-ভারতকোয়ার্টার ফাইনালের পর আলোচনারকেন্দ্রবিন্দুতে কিনা দুই আম্পায়ার! কাল তাঁদেরভুল সিদ্ধান্তগুলো শুধু অদক্ষতার কারণেই হয়েছে,এমনটা আমার মনে হয়নি। কেন জানি মনে হচ্ছেবিশেষ কাউকে তুষ্ট করাও উদ্দেশ্য ছিলআম্পায়ারদের।তামিম ইকবালের কট বিহাইন্ডের ব্যাপারেনিশ্চিত হতে যদি টিভি আম্পায়ারের সাহায্যনেওয়া যেতে পারে, তাহলে রোহিত শর্মার আউটহওয়া ওই ‘নো’ বলটার ক্ষেত্রেও কেন সেটা করাহলো না? কেন বাউন্ডারিতে শিখর ধাওয়ানেরনেওয়া মাহমুদউল্লাহর ক্যাচটার আরও পুঙ্খানুপুঙ্খবিশ্লেষণ, আরও ভালোভাবে যাচাই করা হলোনা?সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার সবাই-ইকালকের বাজে আম্পায়ারিং নিয়েসমালোচনামুখর। অনেকেই মনে করছেন,আম্পায়ারদের এ রকম বিতর্ক উসকে দেওয়াকর্মকাণ্ডের জন্য আইসিসির আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করা উচিত। শুধু তা-ই নয়, আমি বলবকালকের তিন বিতর্কিত আম্পায়ারকে যেন এইটুর্নামেন্টেই আর কোনো ম্যাচে দায়িত্বপালনের সুযোগ দেওয়া না হয়। সেই সঙ্গেকালকের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করে তাদেরবিরুদ্ধে পর্যাপ্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়াউচিত।বিশ্বকাপের মতো সর্বোচ্চ পর্যায়ের খেলায় এরকম জঘন্য আম্পায়ারিং কোনোভাবেই কাম্য নয়।সর্বোচ্চ পর্যায়েই যদি এ রকম ভুলে ভরা আরপক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং হতে থাকে, তাহলেদ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোতেও আম্পায়ারিংয়ের ওপরথেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে আইসিসি।কাল মাশরাফির টস ভাগ্যটা খারাপ ছিল, আমিবলব পরাজয়ের এটাও একটা কারণ। ভারতের মতোদলের বিপক্ষে রান তাড়া করে জেতা কোনোদলের জন্যই কঠিন। তার পরও বোলাররা শুরুটাভালো করেছিল। কিন্তু আম্পায়ারদের ‘উপহার’দেওয়া রোহিত শর্মার সেঞ্চুরির সুবাদে ভারতযখন ৩০২ রান করে ফেলল, বাংলাদেশের জন্যম্যাচটা কঠিন হয়ে যায় তখনই। আগেই বলেছিলামএ রকম ম্যাচে ভারতকে হারাতে হলে আমাদেরসেরা বোলিং আক্রমণ নিয়ে নামতে হবে। আমারমনে হয় কাল সেই বোলিং আক্রমণটা হাতে পাননিমাশরাফি। নাসিরের নিয়ন্ত্রিত বোলিংই প্রমাণকরে, দলে আরেকজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার খেলানোরপ্রয়োজন ছিল। বোলিংয়ে আরেকটু বৈচিত্র্যথাকলে শেষ দিকে মাশরাফির হাতেও সিদ্ধান্তনেওয়ার আরও সুযোগ থাকত। তবে এটাও ঠিক,রোহিত শর্মার কথিত ‘নো’ বলে বেঁচে যাওয়াটাআমাদের ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে প্রভাবিতকরে থাকবে। এমনকি শেষ দিকের বাজেফিল্ডিংয়েরও একটা কারণ হতে পারে সেটা।ভারতের বিশাল রান সফলভাবে তাড়া করতে হলেতামিমের কাছ থেকে একটা বড় ইনিংস আসা উচিতছিল। সেটা আসেনি। বিতর্কিত আউটেমাহমুদউল্লাহ-সৌম্যের মধ্যেও হয়নি বড় জুটি। একপ্রকার পক্ষপাত মূলক সিদ্ধান্তে আউট করা হয় দারুন ফর্মে থাকা মাহমুদউল্লাহ কে ।এই ম্যাচে সাকিবের কাছ থেকে দুর্দান্ত একটাইনিংস আশা করেছিলাম। অথচ কালই কিনা তাকেসবচেয়ে বেশি নড়বড়ে মনে হলো! আর যা-ই হোক৩৪ বলে ১০ রান করার ব্যাটসম্যান সে নয়।সবশেষে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলার জন্যবাংলাদেশ দলের সব খেলোয়াড়, কোচ,কর্মকর্তাকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। অনেক কমপ্রস্তুতি নিয়েও আমাদের ছেলেরা অসাধারণখেলল। সে জন্য প্রশংসা তাদের প্রাপ্যই।