খেলাধুলা

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রথম অধিনায়ক শামীম কবিরের ইন্তেকাল

স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ সালে প্রথম খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ডের মেরিলিবোর্ন ক্রিকেট ক্লাব বা এমসিসি। ঐতিহাসিক সেই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ওপেনিং ব্যাটসম্যান শামীম কবির। সোমবার সকালে না ফেরার দেশে চলে গেছেন দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সাক্ষী শামীম কবির। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। দীর্ঘদিন ক্যান্সার রোগে ভুগে ৭৫ বছর বয়সে ধানমন্ডির ইডেন ক্লিনিকে সোমবার সকালে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রীড়াঙ্গনে।

এমসিসির বিপক্ষে ওই ম্যাচটি মূলতঃ বাংলাদেশের সামর্থ্য যাচাইয়ের জন্য আয়োজন করা হয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ অংশগ্রহণের যোগ্য কি-না, সেটাই পরীক্ষা করার জন্য অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওই ম্যাচ।

সেই ঐতেহাসিক ম্যাচের অধিনায়ক ছিলেন শামীম কবির। শামীম কবির নামে পরিচিতি পেলেও তার মূল নাম আনোয়ারুল কবির। জন্ম ১৯৪৫ সালে, নরসিংদীতে। পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার ১৯৬১ সালে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম ফিফটি (৬৪) করেন ১৯৬৪ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে পিআইএর বিপক্ষে।

পাকিস্তান আমলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন ১৫টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ। মিডল অর্ডারে ব্যাটিং আর অকেশনাল উইকেটকিপার হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে শামীম কবিরের সর্বোচ্চ ইনিংস হচ্ছে ৮৯ রান। পূর্ব পাকিস্তান সবুজ দলের হয়ে পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ের বিপক্ষে তিনি এই ইনিংসটি খেলেছিলেন।

ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে শামীম কবির খেলেছিলেন আজাদ বয়েজ ক্লাবের হয়ে। শুধু খেলোয়াড় হিসেবেই তার ক্রিকেট জীবন সীমাবদ্ধ ছিল না। খেলোয়াড়ি জীবন ছাড়ার পর তিনি ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে সম্পৃক্ত হন বিসিবিতে। ১৯৮২ ও ১৯৮৬ সালের আইসিসি ট্রফিতে পালন করেন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব। ক্রীড়াঙ্গনে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৯ সালে তিনি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারও লাভ করেন।

শামীম কবিরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বোর্ডের মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, ‘জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম অধিনায়ক শামীম কবিরের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যা যা করা প্রয়োজন সব করা হবে।’

দুদিন আগেই জাতীয় ক্রিকেট দলের অসুস্থ সাবেক এ অধিনায়কের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের ঘোষণা দিয়েছিল বিসিবি। সেই সাহায্য হাতে না নিয়েই চলে গেলেন সাবেক এ ক্রিকেটার।