খেলাধুলা

৭৯ রানে পাকিস্তান কে হারালো বাংলাদেশ - তামিমই মুশফিকের ম্যাচসেরা

প্রতিপক্ষ পাকিস্তানই ছিল তো? নাকি আফগানিস্তান
কিংবা স্কটল্যান্ড! ৭৯ রানের জয় নিয়েও বাংলাদেশদলের ক্রিকেটাররা যে রকম নির্লিপ্তভাবে মাঠ ছাড়ল,মনেই হলো না এই জয়ে অবসান ঘটেছে ১৬ বছরেরঅপেক্ষার।মাঠ ছেড়ে ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পরও ঘটল ব্যতিক্রম।যেকোনো জয়ের পরই ‘আমরা করব জয়...’ গান দিয়েসাফল্য উদ্যাপন করে বাংলাদেশ দল। কাল সেটাও হলোনা। সবার মধ্যে এমন একটা ভাব যেন কিছুই ঘটেনি।অথচ এই মাত্র তারা হারিয়ে এল পাকিস্তান দলকে,আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে যারা বাংলাদেশের চেয়েদুই ধাপ এগিয়ে।কেন এমন নির্লিপ্ততা? আজহার আলীর পাকিস্তানঅভিজ্ঞতায় অনেকটাই পিছিয়ে বলে? নাকি জয়টা প্রাপ্যধরে নিয়েছিল বাংলাদেশ! ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনেসাকিবের কথা শুনে মনে হলো দ্বিতীয়টাই কারণ, ‘আমরাএখন বিশ্বাস করি যে আমরা জিততে পারি।’ সিরিজশুরুর আগেই নিজেদের ফেবারিট বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।প্রথম ওয়ানডেতে সে দাবি অনেকটা প্রমাণিতও।সাকিবের সিরিজ জয়ের স্বপ্নটা তাই এখন আরও বেশিগাঢ়, ‘অবশ্যই সিরিজ জেতা সম্ভব। আবারও বলছি, আমিবিশ্বাস করি আমাদের সিরিজ জয়ের সামর্থ্য আছে।’এমনকি সেটা ৩-০ তে হওয়াও অসম্ভব মনে করছেন না।যদিও এই মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের ভাবনায় শুধুই কালকেরদ্বিতীয় ম্যাচটি।পাকিস্তানের বিপক্ষে এর আগে একবারই জয়ের মুখদেখেছে বাংলাদেশ—১৯৯৯ বিশ্বকাপে। অনেক ছোটছিলেন বলে সেই জয়ের স্মৃতি খুব একটা মনে নেইসাকিবের। তবে ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে ওঠার বয়সটাতেনিজের মনের মধ্যেও হয়তো পাকিস্তানকে আরেকবারহারানোর ক্ষুধা তৈরি হয়েছে। সে ক্ষুধা মেটাতে পেরেতৃপ্ত বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার, ‘গত ১৬ বছরে কোনোধরনের ক্রিকেটেই আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষেজিতিনি। এই জয় তাই অনেক বড় ব্যাপার।’কিন্তু এক যুগেরও বেশি সময় ধরে যেটির জন্য অপেক্ষায়ছিল সবাই, সেটির অবসান এত সহজে ঘটে গেল?পাকিস্তান যে দাঁড়াতেই পারল না বাংলাদেশের সামনে! শুরুথেকে শেষ পর্যন্ত কখনোই মনে হয়নি ম্যাচটা তারাওজিততে পারে। আর তাতে সবচেয়ে বড় অবদান ওপেনারতামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের। এই দুই জনেরসেঞ্চুরির সৌজন্যেই বাংলাদেশ দলের স্কোর চলে যায়পাকিস্তানের ধরাছোঁয়ার বাইরে।শুরুটা করেছিলেন তামিম। ২১ ইনিংস পর ওয়ানডেতেসেঞ্চুরির উদ্যাপন যেভাবে করলেন, সেটাও এখনআলোচনার বিষয়। সংবাদ সম্মেলনে তামিম আসেননি বলেতার মুখ থেকে শোনা যায়নি ব্যাখ্যাটা। তবে উইকেটেতামিমের ওই সময়ের সঙ্গী ম্যান অব দ্য ম্যাচমুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে অনুমিত ধারণাটাই পাওয়াগেল, ‘কারণটা যে কেউই বুঝতে পারবে। গত ৪-৫ মাস ওকেনিয়ে এত কথা হয়েছে...। আমি বিশ্বাস করি ওর মতোব্যাটসম্যান খুব কমই এসেছে বাংলাদেশে, কম আসবেভবিষ্যতেও।’ মুখে হাসি ফুটিয়ে তামিমের উদ্যাপনেরভঙ্গির প্রতি সমর্থনও জানালেন, ‘সেলিব্রেশন যেটাকরেছে ভালো করেছে। আমার পছন্দ হয়েছে। আশা করিভবিষ্যতে ও আরও বড় ইনিংস খেলবে।’একসঙ্গে অন্তত ৪৫ ওভার পর্যন্ত উইকেটে থাকারপরিকল্পনা ছিল তামিম-মুশফিকের। তামিম তার আগেইআউট হয়ে গেলেও মুশফিকের কণ্ঠে তার প্রশংসা যেনশেষই হতে চায় না! পারলে নিজের ম্যান অব দ্য ম্যাচেরপুরস্কারটাও তুলে দেন তামিমের হাতে, ‘ও খুব হিসাব করেখেলেছে। আমি খুব অবাক হয়েছি আমাকে ম্যান অব দ্যম্যাচ করায়। আমি এখনো মনে করি ও-ই (তামিম) এটারযোগ্য।’ওয়ানডেতে নিজের আগের দুটি সেঞ্চুরির চেয়েকালকেরটাকেই বেশি এগিয়ে রেখেছেন মুশফিক। এটি তাঁরকাছে বিশেষ হয়ে উঠেছে আরেকটা কারণেও, ‘বিয়ের পরএটা আমার প্রথম সেঞ্চুরি...।’ অথচ এমন একটাসেঞ্চুরির পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি কিনা বেশির ভাগকথা বললেন তামিমের ইনিংস নিয়েই।সত্যিই বাংলাদেশ এখন একটা দল, এক মন এক প্রাণ!