খেলাধুলা

হাফিজের শত রানে চাপে বাংলাদেশ

দিনের শুরুতে ব্যাটিং আর পরে বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে ব্যর্থতায় পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। মাত্র ২৭ রানে শেষ পাঁচ উইকেট হারানোয় প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি তারা। পরে ক্যাচ হাতছাড়া করে দ্বিতীয় দিন শেষে অতিথিদের ভালো অবস্থানে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে স্বাগতিকরা।
দিনের শুরুতে ব্যাটিং আর পরে বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে ব্যর্থতায় পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ।
মাত্র ২৭ রানে শেষ পাঁচ উইকেট হারানোয় প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি মুশফিকুর রহিমের দল। পরে ক্যাচ হাতছাড়া করে দ্বিতীয় দিন শেষে অতিথিদের ভালো অবস্থানে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ১ উইকেটে ২২৭ রান। অতিথিরা এখনও ১০৫ রানে পিছিয়ে আছে।
মোহাম্মদ হাফিজ ১৩৭ ও আজহার আলি ৬৫ রানে ব্যাট করছেন। অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেটে ১৭৭ রানের জুটি গড়েছেন এই দুই জন।
রিভিউ নিয়ে ১৩ রানে বেঁচে যাওয়া হাফিজের ১৭৯ বলে খেলা চমৎকার ইনিংসটি ১২টি চার ও ৩টি ছক্কা সমৃদ্ধ। এ নিয়ে টানা তৃতীয় টেস্টে শতক পেলেন এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।
অভিষিক্ত সামি আসলামের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানকে ভালো সূচনা এনে দেন হাফিজ। সামিকে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করে ১১.৫ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম।
অতিথিদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে রিভিউয়ের সহায়তা নিতে হয় বাংলাদেশকে। তাইজুলের বলে আম্পায়ার সামিকে আউট না দিলেও নিশ্চিত ছিলেন পেছনে ক্যাচ ধরা বাংলাদেশের অধিনায়ক। রিপ্লে দেখে তৃতীয় আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেন।
১১ ও ২৮ রানে দুই বার আজহারকে জীবন দেন মুশফিক। ২৩তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে ও ৩৫তম ওভারে অভিষিক্ত মোহাম্মদ শহীদের বলে দুটি ক্যাচ গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি বাংলাদেশের অধিনায়ক।
শহীদের বলে ক্যাচ গ্লাভসবন্দি করতে গিয়ে হাতে চোট পান মুশফিক। পানি পানের বিরতির সময় মাঠ ছাড়েন তিনি। বাকি সময়ে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস। 
ফিল্ডিং অনুযায়ী বল করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। প্রচুর বাজে বল করে অতিথি ব্যাটসম্যানদের জন্য রান নেওয়াটা সহজ করে দেন তারা।
এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৩৩২ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
বুধবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ৪ উইকেটে ২৩৬ রান নিয়ে খেলা করার পর দিনের প্রথম সেশনে ৪ উইকেট হারিয়ে ৮৯ রান যোগ করে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় সেশনে মাত্র ৭ রান যোগ করে শেষ দুই উইকেট হারানোয় বড় সংগ্রহ গড়া যায়নি।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান সাকিবকে হারায় বাংলাদেশ। ২৫ রান করে ফিরে যান আইসিসির টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ থাকা এই অলরাউন্ডার।
ষষ্ঠ উইকেটে সৌম্য সরকারের সঙ্গে ৬২ রানের চমৎকার একটি জুটি উপহার দেন মুশফিক। টেস্ট অভিষেকে বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সৌম্য। আত্মবিশ্বাসী সব শট খেলা এই ব্যাটসম্যান অবশ্য বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি।
এক সময়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ৩০৫ রান। এরপর মাত্র ২৭ রান যোগ করতে শেষ ৫ উইকেট হারানোয় সাড়ে তিনশ’ রান পর্যন্তও যেতে পারেনি স্বাগতিকরা।
হাফিজের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আসাদ শফিকের দারুণ ক্যাচে পরিণত হওয়া সৌম্য করেন ৩৩ রান। পরের ওভারে ফিরে যান মুশফিকও (৩২)। বাংলাদেশের অধিনায়ককে মিসবাহ-উল-হকের ক্যাচে পরিণত করেন ইয়াসির শাহ।
নিজের পরের ওভারে আবার আঘাত হানেন ইয়াসির। এবার তাইজুলকে (১) বোল্ড করেন তিনি।
৮ উইকেটে ৩২৫ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এরপর মাত্র ৩ ওভার স্থায়ী হয় তাদের ইনিংস। ৭ রান যোগ করতে শেষ দুই ব্যাটসম্যান শহীদ ও রুবেল হোসেনের উইকেট হারায় তারা। শুভাগত হোম চৌধুরী অপরাজিত থাকেন ১২ রানে।
তিনটি করে উইকেট নেন ওয়াহাব রিয়াজ ও ইয়াসির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১২০ ওভারে ৩৩২ (তামিম ২৫, ইমরুল ৫১, মুমিনুল ৮০, মাহমুদউল্লাহ ৪৯, সাকিব ২৫, মুশফিক ৩২, সৌম্য ৩৩, শুভাগত ১২*, তাইজুল ১, শহীদ ১০, রুবেল ২; ওয়াহাব ৩/৫৫, ইয়াসির ৩/৮৬, হাফিজ ২/৪৭, বাবর ২/৯৯)
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ৫৮ ওভারে ২২৭/১ (হাফিজ ১৩৭*, সামি ২০, আজহার ৬৫*; তাইজুল ১/৪৩)।