খেলাধুলা

সামান্য রিকশাচালক থেকে বিশ্ববিখ্যাত ক্রিকেটার

জীবনের শুরুতে রিকশা চালিয়ে দিন পার করলেও চেষ্টা ও সাধনায় পরে হয়ে যান বিশ্বের দাপুটে ব্যাটসম্যানদের একজন। শুরুর জীবন কাহিনী অজানা থাকলেও পরে সেই ক্রিকেটারের নাম শোনার পর চোখ অনেকেরই কপালে উঠার মতো অবস্থা। সেই ক্রিকেটারের নাম মোহাম্মদ ইউসুফ। যার আগের নাম ছিল ইউসুফ ইয়োহানা। পাকিস্তানের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান।

জীবনের শুরুতে জীবিকার তাড়নায় লাহোরের ভাওয়ালপুরে রিকশা চালাতেন তিনি। বাবার সামান্য আয়ে পরিবার চালানো ছিল খুবই কষ্টকর। তাই বাধ্য হয়েই এ পেশা বেছে নিয়েছিলেন সাবেক এ তারকা ক্রিকেটার।

পাকিস্তানের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার জন্মেছিলেন নিম্নশ্রেণিভূক্ত হিন্দু বাল্মিকি গোত্রে। বাবা ইয়োহানা মাসেহ রেলওয়ে স্টেশনে কাজ করতেন। রেলওয়ে কলোনীতেই বসবাস করতেন তারা। ভাগ্যান্বেষণে পরবর্তীতে তার পরিবার খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করে। শৈশবে ব্যাট চালাতে পারতেন না এই তারকা। তার ভাইয়েরা টেনিস বলের সাহায্যে তাকে সাহস যোগাতেন। ১২ বছর বয়সে গোল্ডেন জিমখানা দলের নজরে পড়ে ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। যদিও তখন তিনি ক্রিকেট খেলার জন্য দলে যোগ দেননি। দিয়েছিলেন সেখান থেকে প্রাপ্ত আয়ে পরিবারকে সাহায্য করার জন্য। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে অভিষেক হয় এ ব্যাটসম্যানের।

২০০৫ সালে আবার ধর্ম বদলে মুসলমান হন ইউসুফ। পাকিস্তানের কিংবদন্তী সাঈদ আনোয়ার এবং তাবলীগ জামাতে অনুপ্রাণিত হয়ে ধর্মান্তরিত হন তিনি। যদিও কথিত আছে পাকিস্তান দলের অধিনায়ক হবার জন্য ধর্ম ত্যাগ করেন তিনি। কিন্তু তার অধিনায়ক হয়ে ওঠা হয়নি। নানা জটিলতায় বেশ কয়েকবার নিষিদ্ধ হবার পরে একপর্যায়ে দল থেকেই বাদ পড়েন ইউসুফ। রাগ করে ২০১০ সালের ২৯ মার্চ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সকল স্তর থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।

কিন্তু একই বছরের জুলাই মাসে বোর্ডের অনুরোধে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অবসর ভেঙ্গে তাকে পুণরায় দলে যোগদান করতে হয়। পরে সে বছরই আবার দল থেকে বাদ পড়েন ইউসুফ। এরপর আর দলে সুযোগ পাননি তিনি। বয়স ৪১ হলেও এখন পর্যন্ত আর অবসর নেয়া হয়নি এই তারকার।