খেলাধুলা

কলকাতাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে ঢাকা মোহামেডান

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ
টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে
স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী ও ঢাকা
মোহামেডান। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দুই
গ্রুপ থেকে সেমিফাইনালের বাকি দুটি
টিকিট নিশ্চিত করেছে দুই বিদেশি দল
আফগান লিগ চ্যাম্পিয়ন স্পিঙ্গার বাজান
ক্লাব ও ভারতের কিংফিশার ইস্ট বেঙ্গল।
চট্টগ্রাম আবাহনী আগামী ২৭ অক্টোবর রাত
৭টা ৪০ মিনিটে প্রথম সেমিফাইনালে
স্পিঙ্গার বাজানের মোকাবিলা করবে।
পরদিন অপর সেমিফাইনালে ঢাকা
মোহামেডান একই সময়ে লড়বে ইস্ট বেঙ্গল
ক্লাবের বিপক্ষে।
দুই মোহামেডানের খেলায় আগের ম্যাচে
করাচি ইলেকট্রিক ক্লাবকে ৬-১ গোলে
বিধ্বস্ত করে এগিয়ে ছিল স্বাগতিক দলটি।
তাই সেমিফাইনালে উঠতে হলে এই ম্যাচ
থেকে একটি পয়েন্ট পেলেই চলে ঢাকা
মোহামেডানের। কিন্তু আগের দুই ম্যাচে
কেবল ১ পয়েন্ট পাওয়া সফরকারী দলটির
জয়ের বিকল্প ছিল না। কারণ এই গ্রপ থেকে
৭ পয়েন্ট নিয়ে আগেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে
সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে আগফান লিগ
চ্যাম্পিয়ন দল স্পিঙ্গার বাজান ক্লাব।
তবে স্নায়ুক্ষয়ী সেই ম্যাচে কলকাতা
মোহামেডানকে ২-১ গোলে হারিয়েছে
ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান। ফরাশগঞ্জ
থেকে ধারে খেলতে আসা স্ট্রাইকার
পিটার আকিনকুনমির দুই গোলেই কাঙ্খিত
জয় তুলে নেয় গত ঢাকা লিগের তৃতীয় সেরা
ক্লাবটি। পিটারের গোলেই ১৭ মিনিটে
এগিয়ে যায় স্বাগতিক মোহামেডান। ফয়সাল
মাহমুদের কর্নার থেকে জাতীয় লিগে
ফরাশগঞ্জের হয়ে খেলা পিটার হেড করে
প্রতিপক্ষ কিপারকে পরাস্ত করেন (১-০)।
তবে ৪৪ মিনিটে ঢাকা মোহামেডানের
রক্ষণের ভুলে খেলায় সমতা ফিরে আসে।
রক্ষণভাগের খেলোয়াড় মিন্টু শেখ ওয়ান টু
ওয়ানে ডি-বক্সের মধ্যে বল ক্লিয়ার করতে
গিয়ে কাজেম আমোবির গায়ে মারেন।
বলটি নিজের আয়ত্তে এনে ইনসাইড ডজে
একজন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডান পায়ের
জোরালো শটে বল জালে জড়িয়ে দেন
আমোবি (১-১)।
ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের শেষ মুহূর্তে ঠিক
একই ধরনের একটি ভুল করে বসে কলকাতা
মোহামেডান। ইনজুরি সময়ে মিডফিল্ডার
কুনাল ঘোষ গোলরক্ষককে ব্যাকপাস দেন।
কিন্তু গোলরক্ষক বিলাল হুসাইন খান বলটি
ঠিকমতো ধরতে পারেননি। ডি-বক্সের
ভেতরে থাকা সুযোগসন্ধানী স্ট্রাইকার
পিটার বিলালকে কাটিয়ে প্রতিপক্ষের
জালে বল জড়িয়ে দেয় (২-১)। গোলের পরপরই
মাসল ইনজুরিতে পড়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে
যান পিটার। তবে তাঁর ব্যবধান গড়া সেই লিড
ধরে রেখেই ম্যাচটি শেষ করে ঢাকা
মোহামেডান।
মূল্যবান এই ৩ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে
নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করেছে ঢাকা
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। দুই খেলায়
জয়ের সুবাদে ঢাকা মোহামেডান ৬ পয়েন্ট
নিয়ে ‘এ’ গ্রুপে দ্বিতীয় অবস্থান নিশ্চিত
করেছে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে এই গ্রুপের
শীর্ষস্থানটি স্পিঙ্গার বাজান ক্লাবের
দখলে।
গতকালের ম্যাচ জয়ের ব্যাপারে নিজেও
নিশ্চিত ছিলেন না ঢাকা মোহামেডান
কোচ জসিম উদ্দিন আহমেদ জোশী। ম্যাচ-
পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জোশী বলেন,
‘স্নায়ুচাপের এ ম্যাচে আমাদের অনেক
খেলোয়াড় অসুস্থ ছিল। স্ট্রাইকার জীবন
এবং মাঝমাঠের খেলোয়াড় ইব্রাহিম জ্বর
নিয়েই খেলেছে। এ ছাড়া ইনজুরির কারণে
সোহেল রানা ও জুয়েল রানা মাঠেই নামতে
পারেনি। সীমিত সামর্থ্য নিয়েই আমার
ছেলেরা অসাধারণ খেলা উপহার দিয়েছে।’
এর আগে গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচে
সেমিফাইনাল নিশ্চিতের লড়াইয়ে নামে
স্পিঙ্গার বাজান ও শ্রীলঙ্কান সলিড এসসি
ক্লাব। ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট পেলেই
টুর্নামেন্টে টিকে থাকা নিশ্চিত বাজান
ক্লাবের। অন্যদিকে টিকে থাকতে হলে
জয়ের বিকল্প ছিল না সলিড এসসির সামনে।
প্রথমে এগিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ১-৩ গোলে
হেরে গ্রুপ থেকে ছিটকে পড়েছে
শ্রীলঙ্কার লিগ চ্যাম্পিয়ন দলটি। আফগান
ক্লাবটির পক্ষে ৭২, ৭৮ ও ৮৮ মিনিটে গোল
তিনটি করেন যথাক্রমে মোস্তফা আফসার,
রেজা আল্লাহ এবং অধিনায়ক গোলাম
হযরত। সলিড এসসির পক্ষে প্রথমার্ধের ৪৩
মিনিটে একমাত্র গোলটি করেন
নাইজেরিয়ান ওলায়েমি।
তবে প্রথম ম্যাচে হারের পরও ‘বি’ গ্রুপ
থেকেই উতরে গেছে চট্টগ্রাম আবাহনী। এই
গ্রুপে অপরাজিত থেকে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ
চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইস্ট বেঙ্গল। তবে
চট্টগ্রাম আবাহনী পারলেও ঐতিহ্যবাহী
ঢাকা আবাহনী ছিটকে গেছে গ্রুপ পর্ব
থেকেই।
তবে উইঙ্গার জাহিদ হোসেনের একক
নৈপুণ্যে গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে ঠিকই
সেমিফাইনালের টিকিট কেটে নিয়েছে
চট্টগ্রাম আবাহনী। প্রথম ম্যাচে হারের
কারণে আয়োজক দল হিসেবে চাপেই পড়ে
গিয়েছিল স্থানীয় দলটি। শেখ রাসেল
ক্রীড়া চক্রের খেলোয়াড় দিয়ে গড়া
চট্টগ্রাম আবাহনীর সেমিফাইনাল অনেকটাই
উইঙ্গার জাহিদ হোসেনের একক অবদান।
নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকা আবাহনীর
বিপক্ষে জয়ে মহাগুরুত্বপূর্ণ একমাত্র
গোলটি দিয়ে মিশন শুরু আর গ্রুপের শেষ
ম্যাচে করাচি ইলেকট্রিকের বিপক্ষে তো
হ্যাটট্রিকই করে বসেন জাহিদ। চট্টগ্রাম
আবাহনীর এ পর্যন্ত টুর্নামেন্টে দলীয় পাঁচ
গোলের চারটিই এসেছে এই উইঙ্গারের পা
থেকে। সুবাদে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ
গোলদাতাও এখন চট্টগ্রাম আবাহনীর জাহিদ
হোসেন।