খেলাধুলা

এবার টি-২০ তেও হারালো বাংলাদেশ

ওয়ানডে হোয়াইট ওয়াসের পর এবার প্রথম
টি-২০তে ৪ উইকেটে জয় পেয়েছে স্বাগতিক
বাংলাদেশ। মিরপুরে টস জিতে প্রথমে
জিম্বাবুয়েকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান
বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা।
প্রথমে ব্যাট করে ১৯.৩ ওভারে সবকয়টি
উইকেট হারিয়ে ১৩১ রান সংগ্রহ করে
সফরকারী জিম্বাবুয়ে। ১৩২ রানের ছোট
লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮০ রানেই ৫
উইকেট হারিয়ে ম্যাচ কঠিন করে ফেলেছিল
বাংলাদেশ। তবে মাহমুদউল্লাহর দৃঢ়তাপূর্ণ
ব্যাটিংয়ে জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
শেষে ছয় মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন
টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
১৩২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে চার
মেরে ইনিংসের শুরু করেন তামিম ইকবাল।
কিন্তু প্রথম ওভারের শেষ বলে রান আউট হন
দীর্ঘদিন পড়ে দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়।
যদিও বিজয় আউট হয়েছেন ১ রান করে।
ইনিংসের শুরুতেই এমন ধাক্কা। যাই হোক
তারপর সাব্বিরকে নিয়ে প্রতিরোধ করেন
ওপেনার তামিম ইকবাল। সাব্বির রহমানের
ব্যক্তিগত ১৮ রানে আউট হয়ে ভাঙে ৩৯
রানের এই জুটি।
সাব্বিরের পরে মাঠে নামেন টেস্ট
অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। কিন্তু বেশি সময়
মাঠে স্থায়ী হতে পারেন নি। দলীয় ৫৪
রানে গ্রায়েম ক্রেমারের বলে সিকান্দার
রাজাকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন
মুশফিক (২)। এরপর তামিম ও নাসির কিছুটা
প্রতিরোধ করলেও ক্রেমারের বলে
এলবিডব্লিউর ফাদে পড়েন নাসির হোসেন।
আউট হওয়ার আগে নাসির করেন ১৬ রান।
একদিকে এভাবে উইকেট যেতে থাকে
অন্যদিকে তামিম দাড়িয়ে আছেন। কিন্তু
তিনি কত পারবেন দাড়িয়ে থাকতে?
নাসিরের বিদায়ের পরপরই এলবিডব্লিউতে
আউট হন ৩১ রান করা তামিম ইকবাল। ৮০
রানেই শেষ প্রথম সারির ৫ ব্যাটসম্যান।
খেলাটা তখন কঠিন হয়ে দাড়ায়
বাংলাদেশের সামনে। তবে মাহমুদুল্লাহ ও
লিটন দাসের ব্যাটে জয়ের শেষ প্রান্তে
পৌছে যায় বাংলাদেশ। দলীয় ১১৮ রানে
ব্যক্তিগত ১৭ রানে আউ্ট হন লিটন দাস। এরপর
মাহমুদুল্লাহ মাশরাফিতে ১৪ বল বাকি
থাকতেই জয় পায় স্বাগতিকরা।
মিরপুরে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই
ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সফরকারীরা। প্রথম
ওভারের ৫ম বলে দলীয় ৪ রানে ওপেনার
সিকান্দার রাজাকে হারায় জিম্বাবুয়ে।
অবশ্য ওই উইকেট পান টাইগার দলপতি
মাশরাফি। পরের ওভারে রেগিস
চাকাভাকে বিদায় করেন আল-আমিন।
মাশরাফির দ্বিতীয় ওভারে এসে এল্টন
চিগুম্বুরাকে ফেরান । মাত্র ১০ রানের
মধ্যেই জিম্বাবুয়ের ৩ উইকেট তুলে নেন
স্বাগতিক বোলাররা।
ইনিংসের নবম ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে
জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হানেন নাসির
হোসেন। ১৫ রান করা শন উইলিয়ামসকে
বোল্ড করেন এই অফ স্পিনার। ফলে ৩৮
রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে
পড়ে জিম্বাবুয়ে।
দ্রুত ৪ উইকেট হারালেও ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান
হিসেবে ক্রিজে নেমে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে
প্রতিরোধ গড়েন ম্যালকম ওয়ালার। মিরপুরে
চার-ছক্কার ঝড় তোলেন এই ডানহাতি। ৫টি
ছক্কা ও ৩টি চারে মাত্র ২০ বলে তুলে নেন
ফিফটি, যা জিম্বাবুয়ের হয়ে টি-
টোয়েন্টিতে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। অন্য
প্রান্তে ক্রেইগ আরভিনকে মাহমুদউল্লাহ
বিদায় করলে ভাঙে মাত্র ৩৪ বলে গড়া ৬৭
রানের জুটি। এ জুটিতে ওয়ালারের অবদানই
৫৮ রান!
এরপর একই ওভারে ২ উইকেট তুলে নিয়ে
জিম্বাবুয়ের রানের চাকা থামিয়ে দেন টি-
টোয়েন্টিতে অভিষিক্ত জুবায়ের হোসেন
লিখন। প্রথমে লুক জংউইকে এলবিডব্লিউ
করার পর নেভিল মাদজিভাকে নাসিরের
ক্যাচে পরিণত করেন এই লেগ স্পিনার।
জুবায়েরের জোড়া আঘাতে ১০৮ রানে ৭
উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ওয়ালারকে
দলীয় ১২২ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে ইনিংসে
নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজুর
রহমান। দলীয় ১২৬ রানে গ্রায়েম
ক্রেমারকে বোল্ড করেন আল-আমিন। আর
ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে তিনাশে
পানিয়াঙ্গারাকে এলবিডব্লিউ করে
সফরকারীদের ইনিংসের ইতি টেনে নেন
মুস্তাফিজ। জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৮
রান আসে ওয়ালারের ব্যাট থেকেই। তার ৩১
বলের ইনিংসে ছিল ৬টি ছক্কা ও ৪টি
চারের মার।
বাংলাদেশের পক্ষে মাশরাফি বিন
মুর্তজা, আল-আমিন হোসেন, মুস্তাফিজুর
রহমান ও অভিষিক্ত জুবায়ের হোসেন ২টি
করে উইকেট নেন। এ ছাড়া নাসির হোসেন ও
মাহমুদউল্লাহর নেন ১টি করে উইকেট। ম্যাচ
সেরা হয়েছেন জিম্বাবুয়ের ম্যালকম
ওয়ালার।