খেলাধুলা

বাফুফের তদন্ত কমিটি ১০ দিনেও কাজে নামেনি

ফিফা থেকে আবু নাঈম সোহাগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর বাফুফে স্টাফদের ওপর বেশি ক্ষুব্ধ ছিলেন সহসভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক। ফাইন্যান্স বিভাগের দুই কর্মকর্তাকে পদত্যাগ করতেও বলেছিলেন তিনি। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, দরপত্রে অনিয়ম, ফিফা ফান্ডের অপব্যবহারে শুধু সোহাগই নয়; মানিকের কাছে মনে হয়েছে, এর দায়টা এড়াতে পারেন না ফাইন্যান্স বিভাগের কর্মকর্তারাও। তাঁরা এখনও বহাল তবিয়তে থাকায় ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে থাকতে অপারগতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে চিঠি দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত মানিক। তাঁর সঙ্গে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন আরেক সহসভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহিও। তদন্ত করে বাফুফের মূল উৎপাটন করবেন বলে ঈদের আগে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন তিনি। তদন্ত কমিটিতে থাকা চার সহসভাপতির দু’জনের পদত্যাগে ফের সংকটে বাফুফে। কাজ শুরুর আগেই দুই সদস্যের পদত্যাগে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে সোহাগ-কাণ্ডের সঠিক তদন্ত হবে তো ফেডারেশনে। আর ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা কমিটির। কিন্তু ১০ দিন পার হলেও এখনও নড়েচড়ে বসেনি তদন্ত কমিটি। বাকি ২০ দিনের মধ্যে কীভাবে সোহাগ ও তাঁর অনুসারীদের অনিয়ম-দুর্নীতি খুঁজে বের করবে কমিটি, তা নিয়েও আছে প্রশ্ন। এরই মধ্যে দুই সহসভাপতির পদত্যাগ ইস্যু নিয়ে ২ মে নির্বাহী কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। যদি ওই সভার পর তদন্ত কমিটির কাজ শুরু হয়, তাহলে হাতে থাকে ১৪ দিন! অনিয়ম, জালিয়াতি, ক্লাবগুলোর প্রাপ্য অর্থ নিয়ে নয়ছয় করার অভিযোগে সোহাগকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করলেও সবার ক্ষোভ সালাউদ্দিনের ওপরেই বেশি। সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিষিদ্ধ হওয়ায় বাফুফের ক্ষমতাধর এই ব্যক্তি এখন অনেকটাই একা হয়ে গেছেন। কারণ, কার্যনির্বাহী কমিটির বেশিরভাগই তাঁর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে খুব কাছের মানুষ মানিকের পদত্যাগে সালাউদ্দিন আরও বেকায়দায় পড়েছেন বলে জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সূত্র। পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে বেশ কয়েকবার হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করা হলেও তা রিসিভ করেননি মানিক। আর মহিউদ্দিন আহমেদ মহিও এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। কয়েকটি সূত্রের মতে, বাফুফের অনিয়মের বিরুদ্ধে একসময় সোচ্চার থাকা মহির সরে দাঁড়ানোর পেছনে অনেকেই দেখছেন তাঁর দায় এড়ানোর কৌশল হিসেবে। কেননা বাফুফেতে তিনি সোহাগ-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এমপি। আরেক সহসভাপতি ইমরুল হাসানের সঙ্গে আছেন তিন সদস্য সত্যজিৎ দাস রুপু, জাকির হোসেন ও ইলিয়াস হোসেন। বাকি তিনজন হলেন ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ, হারুনুর রশিদ ও আবদুর রহিম। মানিক ও মহির পদত্যাগের বিষয়টি যেমন জানেন না, তেমনি করে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে– তা নিয়েও অজ্ঞাত ইমরুল হাসান, ‘আমি আপনার কাছ থেকে শুনেছি দু’জন পদত্যাগ করেছেন। আমি বিষয়টি আগে জানি, তারপর চিন্তা করব কী করা যায়। এখনও তদন্ত কমিটির কাজ শুরু হয়নি। এ জন্য কমিটির আহ্বায়কের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।’ গত ১৭ এপ্রিল নির্বাহী কমিটির জরুরি সভা ডেকে তদন্ত কমিটি গঠন করার পরই নানা প্রশ্ন ওঠে। সাবেক সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে নির্বাহী কমিটির সদস্যরা কীভাবে তদন্ত করবেন, তা নিয়ে সমালোচনা বইতে থাকে। ফুটবল ফেডারেশনে সোহাগের অনিয়মের অনেক কিছুর সঙ্গে বেশ কয়েকজন সদস্যের নাম আছে বলে জানায় একটি সূত্র। তখন থেকেই এই কমিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকে। এখন দুই সদস্যের পদত্যাগে তদন্ত নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা।


এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস