খেলাধুলা

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজ ড্র

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল জয় তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম বারের মতো টেস্ট সিরিজ জেতার স্বাদ নেওয়ার। যেখানে প্রথম বারের মতো সাদা পোশাকে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সফলভাবেই এগুচ্ছিল স্বাগতিকরা। তবে কিউই অলরাউন্ডার গ্লেন ফিলিপসের ব্যাটে সব কিছু যেন এলোমেলো হয়ে যায়। গতকাল সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিন সফরকারীদের বিপক্ষে ৪ উইকেটে হেরে এক-এক জয় নিয়ে সিরিজ ড্র করে শান্ত বাহিনী। এর আগে সিলেটে ১৫০ রানের ব্যবধানে জিতেছিলেন টাইগাররা। ঢাকা টেস্ট শেষে শনিবার টাইগার অধিনায়ক আসেন সংবাদ সম্মেলনে। প্রথমে তাকে প্রশ্ন করা হয় মিরপুরের উইকেট নিয়ে। এমন উইকেটে খেলার সিদ্ধান্তটা কি ভুল ছিল কিনা। এমন প্রশ্নের জবাবে শান্তর চটপটে উত্তর, ‘না’। এরপর ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় না। আমরা যখন আন্তর্জাতিক ফরম্যাট খেলি, বিশেষ করে টেস্ট ম্যাচ, এখানে তো আমরা উন্নতি করতে আসিনি। জিততে এসেছি। জেতার জন্য আমাদের যা যা করা দরকার আমরা সেটাই করব এবং এটাই গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে সব ধরনের সুবিধা অবশ্যই নেওয়া উচিত।’ বর্তমানে সারা বছরই খেলা থাকে। জাতীয় দলের বিরতিহীন সূচির পাশাপাশি চলে ঘরোয়া ক্রিকেটও। সব কিছু গুছিয়ে নেওয়া বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায় ক্রিকেটারদের জন্য। এমনটি জানিয়ে শান্ত বলেন, ‘যারা তিন ফরম্যাট খেলে তাদের জন্য কঠিন। কিন্তু কিছু করার নেই। যারা শুধু টেস্ট খেলছে, তাদের হাতে তো ঐ সময় থাকে। এমন না ১০-১৫ খেলোয়াড়ই আছে। আরো অনেক খেলোয়াড় আছেন, যারা ভবিষ্যতে টেস্টে সুযোগ পাবেন। তাদের জন্য এটা একটা বড় সুযোগ। প্রস্তুতি নিয়ে যেন এ রকম জায়গায় আসতে পারে।’ সিলেটে স্পোটিং উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানে হারায় বাংলাদেশ। সেই ম্যাচ গড়ায় শেষ দিন পর্যন্ত। সেখানে ব্যাটিং-বোলিং দুই ইউনিটই সুবিধা পেয়েছে। তবে মিরপুরে ছিল পুরো ভিন্ন চিত্র এখানে রাজত্ব ছিল বোলারদের, আর ব্যাটাররা দিয়েছে পরীক্ষা। এমন উইকেটে সন্তুষ্ট টাইগার অধিনায়ক। বলেন, ‘সিলেটের উইকেটে বোলারদের জন্য খুব সহায়ক ছিল, এমন বলব না। বোলাররা কষ্ট করে উইকেট পেয়েছে। ব্যাটাররাও কষ্ট করে রান করেছে। দুই ইউনিটই ভালো করার সুযোগ পেয়েছে। তবে মিরপুরের এই উইকেটে নতুন বলে খেলা বেশ চ্যালেঞ্জ ছিল। এটা প্রত্যেক জায়গায় থাকে। দেশের বাইরেও নতুন বলের চ্যালেঞ্জ থাকে। এখানেও ভিন্ন কিছু ছিল না। আমরা আরো ব্যাটিং করলে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না। ব্যাটারদের এই চ্যালেঞ্জ উপভোগ করা উচিত। আমরা এমন উইকেটই চেয়েছিলাম।’ এদিকে ঢাকা টেস্টে সফরকারীদের জয়ের নায়ক গ্লেন ফিলিপস। যেখানে এই উইকেটে সব ব্যাটাররা ভুগছিলেন ব্যাট হাতে সেখানেই ব্যতিক্রম ছিলেন এই কিউই অলরাউন্ডার। মারমুখী ব্যাটিং করে বাংলাদেশের কাছ থেকে সিরিজ ছিনিয়ে নিয়েছেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে তার প্রসঙ্গে। ফিলিপসকে নিয়ে শান্ত বলেন, ‘উইকেট যে রকম ছিল, আমাদের স্পিনাররা বেশ ভালো করছিল। ফিলিপস খুবই ভালো ব্যাট করেছে। এটা মানতেই হবে। হতাশা না। সুযোগ ছিল ভালো কিছু করার। আমাদের বোলাররা খুব খারাপ করেছে, বিষয়টা এমনও না।’ প্রথম বারের মতো কিউইদের বিপেক্ষ এই সিরিজ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সুযোগ ছিল প্রথম বারের মতো কিউইদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জেতার। তবে সেটা না করতে পারলেও নিউজল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করে নাজমুল শান্তর দল। টেস্ট ক্রিকেট প্রথম বারের মতো অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল। এই বিষয়ে টাইগার অধিনায়কের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আস্তে আস্তে অভিজ্ঞতা হচ্ছে। অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। সামনে যদি সুযোগ আসে, তাহলে এ অভিজ্ঞতাগুলো আরো হবে। সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করা যাবে। আমি যখন ব্যাটিং করি, তখন আমার মনে হয় না আমি অধিনায়ক। সত্যি কথা, এখন পর্যন্ত যে কয়টা ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছি আমার কাছে একবারের জন্যও মনে হয়নি যে আমি অধিনায়কত্ব করছি। এভাবে করে যেতে পারলে আসা করি সামনে খুবই ভালো হবে। আমার কাজ ব্যাটিংয়ের পরে যখন মাঠে ঢুকি তখন মাঠের বাইরে আমার কী প্ল্যান, তখন সেগুলো করার চেষ্টা করি। কিন্তু ব্যাটিংয়ে আমার এখন পর্যন্ত মনে হয় না যে আমি অধিনায়ক, আমাকে আলাদা কোনো কিছু করতে হবে।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস