সিলেট

সিলেটে ঐতিহাসিক ‘কানাইঘাটের লড়াই’-এর শতবর্ষ পূর্তি পালিত

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম স্মারক ‘কানাইঘাটের লড়াই’। এই ঘটনা শুধু কানাইঘাটের নয়, এটি বৃহত্তর সিলেটবাসীর জন্য গৌরবের। ঐতিহাসিক এই দিন আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের চেতনাকে মহিমান্বিত করেছে। সেদিনের বীর শহিদদের আত্মত্যাগ আমাদের এই উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে তরান্বিত করেছে।

 ‘কানাইঘাটের লড়াই’—এর শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সিলেটের দরগা গেইটস্থ কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য আসর কক্ষে কানাইঘাট সাহিত্য সংসদের উদ্যোগে গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংসদের সভাপতি কবি সরওয়ার ফারুকী।

লেখক শামসীর হারুনুর রশীদ ও লুৎফুর রহমান তোফায়েলের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক সিলেটের ডাক—এর নির্বাহী সম্পাদক, লেখক ও গবেষক আবদুল হামিদ মানিক, দৈনিক সিলেট বাণীর নির্বাহী সম্পাদক এম.এ হান্নান, ফেঞ্চুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ, কানাইঘাট ডিগ্রি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ শামসুল আলম, লেখক ও শিক্ষাবিদ কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি, সিলেটের পরিচালক শাহ নজরুল ইসলাম এবং কবি ও গবেষক এম.এ জলিল চৌধুরী।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লেখক ও গবেষক আব্দুর রহিম, শাবিপ্রবির লাইব্রেরিয়ান কাওছার আহমদ, জমসেদ আহমদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মো. জালাল উদ্দিন, কবি হেলাল ইসহাক, হা. মাওলানা আব্দুল কাদির ফারুক, মহি উদ্দিন জাবের, ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর। সভার শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ আব্দুল্লাহ আল হাসান।

স্মৃতিচারণ করেন কানাইঘাটের লড়াইয়ে অংশগ্রহণকারী ক্বারী মোবারক আলীর ছেলে হাফিজ মাওলানা আব্দুল মতিন।

উপস্থিত ছিলেন ড. মো. তুতিউর রহমান, জুবায়ের আহমদ আল—আযহারী, অনুপ্রাণন সম্পাদক নাসির উদ্দিন, ক্যালিগ্রাফি শিল্পী জাহেদ হোসাইন রাহীন, গল্পকার তাসলিমা খানম বীথি, ব্যাংকার মো. হায়াত উল্লাহ, জাহেদুর রহমান চৌধুরী, এম আলী হোসাইন, আশিক উল্লাহ আবিদ, আ.ফ.ম সরওয়ার, আবিদুর রহমান, আবু বকর সিদ্দিক, শাহনওয়াজ প্রমুখ।

বক্তারা আরও বলেন, কানাইঘাটের লড়াই খুব ছোট ঘটনা নয় কিন্তু এই প্রজন্ম সেই ইতিহাস তেমন জানে না। সেই সমৃদ্ধ ইতিহাস চর্চায় আমাদের আরও মনযোগী হতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের পূর্ব পুরষদের বীরত্ব ও ত্যাগ তুলে ধরতে হবে। যে জাতি ইতিহাস—ঐতিহ্য বিমুখ তারা এগিয়ে যেতে পারে না।

১৯২২ সালের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত এই ঘটনা দেশের পাঠ্যপুস্তকে অন্তভূর্ক্ত করার দাবি করেন আলোচকরা। শহিদদের স্মরণে কানাইঘাটে কোন স্থাপনার নামকরণ অথবা একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ এবং এই দিবসকে শহিদ দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব করা হয় সভায়।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ বিরোধী খেলাফত আন্দোলন চলাকালীন ১৯২২ সালের ২৩ মার্চ কানাইঘাট মাদরাসা কর্তৃক আয়োজিত বার্ষিক জলসায় বৃটিশ প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু স্বাধীনচেতা জনগণ বৃটিশ প্রশাসনের এ আদেশ উপেক্ষা করে বীরদর্পে জলসা বাস্তবায়নে সক্রিয় থাকেন। এতে প্রশাসন ক্ষুদ্ধ হয়ে জনগণের উপর গুলি চালালে সাত জন ধর্মপ্রাণ মুসলমান শাহাদাত বরণ করেন।   এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/এস

[এলএ বাংলাটাইমসের সব নিউজ আরও সহজভাবে পেতে ‘প্লে-স্টোর’ অথবা ‘আই স্টোর’ থেকে ডাউনলোড করুন আমাদের মোবাইল এপ।]