সিলেট

কূটনীতিকদের রাজনৈতিক দল গঠনের পরামর্শ

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গেল কয়েকমাস ধরে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক তৎপরতা ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এমন বাস্তবতায় যেসব বিদেশি নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা বলেন, তাদের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করার পরামর্শ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। রোববার (১৯ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ পরামর্শ দেন। এর আগে স্কটল্যান্ডের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, যেসব বিদেশি নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা বলেন, তারা একটি রাজনৈতিক দল গঠন করুন, এটা হচ্ছে দ্য অ্যাম্বাসেডর পার্টি বা অন্যকিছু। আর একটা অঙ্গীকার করুন; যারা তাদের ভোট দেবে, তাদের নিজেদের দেশের নাগরিক করে নিয়ে যাবেন। দেখবেন অনেকেই তাদের ভোট দেবে। তাদের সেই নিশ্চয়তা দেওয়া উচিত, যারা তাদের ভোট দেবে, তাদের নিজ দেশের নাগরিক করে নেবেন। যারা শ্রমিকদের অধিকার হরণ করবে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে-যুক্তরাষ্ট্রের এমন বার্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা নিষেধাজ্ঞার দেশ, তারা দিতে পারে, তারা বড়লোক। আমরা আমাদের মতো কাজ করব। আমাদের বাস্তবতার নিরিখে কাজ করব। আমরা তো একদিনে আমেরিকা হতে পারব না। আমাদের ইচ্ছা, তাদের মতো ভালো করব। তবে সত্যি একদিনে পারব না। আর তারা যাদের টাকা দিয়ে রাখেন, তারা মনে করেন একদিনে তারা আমেরিকা হয়ে যাবে। আমেরিকার এ অবস্থায় আসতে ২৫০ বছর সময় লেগেছে। আমেরিকায় শ্রমিকরা এক সময় দাস ছিল। তাদের দাসত্ব বহু বছর ধরে ছিল। মাত্র ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে দাসত্বটা আব্রাহাম লিংকনের কারণে বাদ পড়েছে। এটা বাদ পড়ায় আমেরিকায় গৃহযুদ্ধ হয়েছে। তবে দাসত্ব বাদ দেওয়ায় আব্রাহাম লিংকনকে আমি অভিনন্দন জানাই। মন্ত্রী বলেন, ১৯ শতকের শুরুতে আমেরিকার শ্রমিকরা ১৮ ঘণ্টার মতো কাজ করত ২০ সেন্ট মজুরিতে। আমেরিকার উন্নয়নের কথা আমরা জানি। কেমন অত্যাচারিত হয়েছে সেখানকার শ্রমিকরা; কিন্তু আমাদের এখানের শ্রমিকরা আমেরিকার তুলনায় অনেক ভালো। আমেরিকায় জনপ্রতি আয় প্রায় ৬৫ হাজার ডলার। আর আমাদের দেশে ২ হাজার ৮০০ ডলার। সে তুলনায় আমাদের দেশের শ্রমিকরা অনেক ভালো আছে। আমেরিকায় মাত্র কয়েক দিন আগে নারীরা ভোট দেওয়ার অধিকার পেয়েছে। সেখানকার কৃষ্ণাঙ্গরা বাসে উঠতে পারতেন না। আমরা মার্টিন লুথার কিংয়ের কথা জানি। ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি দেওয়া নিয়ে ম্যাথিউ মিলার কথা বলেছেন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনি যদি রাজনীতিবিদ হন, তাহলে একদল না একদল আপনাকে নিয়ে বক্তব্য দেবেই। আর রাজনীতি থেকে সরে থাকলে কেউ আপনাকে নিয়ে তিরস্কার করবে না। আর কে কী বলেছে, সে তথ্যপ্রমাণ আমাদের দেননি। আমাদের প্রমাণ দরকার। মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশে আমরা মুক্তচিন্তা, বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। এগুলো আমরা কারো মুখে আঠা দিয়ে বন্ধ করে দিতে পারি না। তবে কেউ গর্হিত কাজ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সব কূটনীতিককে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিচ্ছি। আমরা ভিয়েনা কনভেনশন অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। কাজেই বন্ধু দেশগুলোকেও তা মেনে চলার অনুরোধ করব। ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করে আপনারা বড় বড় কথা বলবেন না।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস