সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটি উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ট্রাস্টিজ বোর্ডের সদস্য ও আইন বিভাগের এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে।
এমন অভিযোগে রোববার রাতে দক্ষিণ সুরমা থানায় সাধারণ ডায়রি করেন উপাচার্য। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যানের কাছেও তিনি পৃথক অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রবিবার বিকেল ৫টার দিকে উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলার অফিস কক্ষে লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য দেওয়ান সাকিব আহমেদ ও আইন বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করিম প্রবেশ করে উপাচার্যকে গালিগালাজ করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য দেওয়ান সাকিব আহমেদ।
নিজের অভিযোগে উপাচার্য উল্লেখ করেন, প্রভাষক রেজাউল করিম উপাচার্যের টেবিলে রাখা সিরামিকের মগ সজোরে তার দিকে ছুড়ে মারলে সেটা হাতে এসে আঘাত করে। এ সময় তারা উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় ইস্তফা না নিলে 'ক্যাম্পাস থেকে লাশ বের হবে' বলে হুমকি দেয়।
উপাচার্য জানান, গত ১৪ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই দুই ব্যক্তিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কিছু কর্মকর্তা ও শিক্ষক তাকে একইভাবে হুমকি দিয়ে উপাচার্যের পদ স্বেচ্ছায় ত্যাগ করতে চাপ প্রয়োগ করেন। ইতোমধ্যেই তারা উপাচার্যের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক দুটি মিথ্যা মামলাও করেছেন।
উপাচার্য আরও জানান, গত বছর ১৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশগ্রহণ করে যথারীতি কর্মস্থলে যোগদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করার সময় সকাল সাড়ে ৯টায় দেওয়ান সাকিব আহমদ এবং আইন বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করিম কার্যালয়ে প্রবেশ করতে উপাচার্যের গতিরোধ করে। অতঃপর তালাবদ্ধ দরজা খুলে প্রবেশ করতে চাইলে প্রভাষক রেজাউল করিম উপাচার্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলা বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবৈধ ট্রাস্টি বোর্ডের কিছু সদস্য এবং ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে যাবতীয় অফিস কার্যক্রম ও আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করছেন, যা আমি লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে পূর্বেই জানিয়েছি। ২০২১ সাল হতে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আমি নিযুক্ত হয়েছি। আমি তাদের কথায় কেন স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করব। তাদের এই মারমুখী আচরণে আমি প্রতিনিয়ত জীবননাশের আশঙ্কা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রেস্ট হাউসে অবস্থান করছি।’
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টিজ বোর্ডের সদস্য দেওয়ান সাকিব আহমেদ বলেন, হুমকি বা লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ডাহা মিথ্যে। উপাচার্য একজন সম্মানী লোক, তাকে কেন আমরা অপদস্থ করবো।
তিনি বলেন, স্থাপত্য বিভাগের একটি সমস্যা নিয়ে আমরা কাল বিকেলে তার সাথে কথা বলতে গিয়েছিলাম। তিনি তখন আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে রুম থেকে বের করে দেন। তিনি আমাদের সবার সাথেই দুর্ব্যবহার করেন। এমনকি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথেও।
এব্যাপারে সিলেট দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান বলেন, হুমকি ও লাঞ্ছিতের অভিযোগে উপাচার্য জিডি করেছেন। অভিযোগ তদন্তের অনুমতি চেয়ে আমরা আদালতে আবেদন করেছি।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস