সিলেটের গ্যাস ফিল্ডগুলো যেন নতুন গ্যাসের আধার। একের পর এক সুখবর দিচ্ছে গ্যাস ফিল্ডগুলো। প্রায় যাট বছর আগে আবিস্কৃত গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্রে আরও ১.৬ টিসিএফ গ্যাস পাওয়া যাবে।
২০২২ সালে কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ডে নতুন স্তর আবিষ্কার করেছিলো দেশীয় তেল গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্স। পরিত্যক্ত ৭ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে পাওয়া স্তরটি থেকে দৈনিক ১৫ মিলিয়ন গ্যাস উৎপাদনের আশা করা হয়েছিলো। এরপর ২০২৩ এর নভেম্বরে কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্রের ৭ নম্বর পুরনো কূপ ওয়ার্কওভার করে আরো ৫৩ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এবার সেই কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ডে আরও ১.৬ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আগামী চার মাসের মধ্যে খনন শেষ হলে এই গ্যাস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে তথ্য দিলেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রাকৃতিক সম্পদের সমৃদ্ধ আধার হিসেবে পরিচিত সিলেটে গত বছর থেকেই কূপ অনুসন্ধান ও খননের কাজ চলমান রেখেছে সিলেট গ্যাসফিল্ড কর্তৃপক্ষ। তারই অংশ হিসেবে ২০২৩ সালের প্রথম দিকে কৈলাশটিলা ৮ নম্বর কূপে খনন কাজ শুরু হয়। শনিবার অনুসন্ধান কূপ কৈলাশটিলা-৮ খনন প্রকল্প পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকা খরচে ৮ নম্বর কূপ উন্নয়নকাজ আগামী ৪ মাসের মধ্যেই শেষ হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কূপটিতে প্রায় ১.৬ ট্রিলিয়ন গ্যাস মজুত রয়েছে। এই মাসের মধ্যে আরও ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমরা পাইপে নিতে পারবো। দেশিয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে কাজ চলছে দ্রুত গতিতে।’
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, কৈলাশটিলা ফিল্ডে আগে ৩ টিসিএফ মজুদ ছিল। অনুসন্ধান কূপ খনন করায় মজুদ আরও বাড়বে। দেশীয় ফিল্ড থেকে গ্যাস পেলে ৪ টাকায় পাওয়া যায়, একই পরিমাণ গ্যাস আমদানি করতে ৬০ টাকা খরচ হয়। মাত্র ২৩ শতাংশ গ্যাস আমদানি করতে না হলে অনেক সাশ্রয় হতো।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, কৈলাশটিলায় এর আগে ৭টি কূপ খনন করা হয়েছে প্রতিটা কূপেই গ্যাস পাওয়া গেছে। ৩৫০০ মিটার খনন করা হবে ১ টিসিএফ এর উপরে গ্যাস পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
কৈলাশটিলা-৮ কূপের খনন কাজ শুরু হয়েছে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি। ১২০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির এই কূপটি খনন করছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে বিদ্যমান পাইপলাইন ও আড়াই কিলোমিটার দূরত্বে ব্যবহার যোগ্য প্রসেস প্লান্ট রয়েছে। ভোলা, জকিগঞ্জসহ অনেক এলাকায় গ্যাস উদ্বৃত্ত থাকলেও পাইপলাইন না থাকায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
১৯৬২ সালে কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্রে প্রাকৃতিক গ্যাস আবিষ্কৃত হয়। এটি থেকে ১৯৮৩ সালে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিলেটের বিভিন্ন স্থানে তেল-গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। সিলেট তেল গ্যাসের ব্যাপক সম্ভবনাময় একটি জায়গা। চলিত বছরে নতুন করে গ্যাস কূপ খনন কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে সিলেট ১০ নং গ্যাস কূপে কি পরিমান তেল-গ্যাস মজুদ রয়েছে তার সঠিক তথ্য জানা যাবে এবং উত্তোলন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস