সিলেট

সাব-রেজিস্ট্রার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস। অভিযোগ রয়েছে, নতুন আসা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার শংকর কুমার ধরকে প্রতি দলিলে তাকে দিতে হয় আলাদা কমিশন। দিতে হয় আলাদা উৎকোচ। দলিল লেখকদের কেউ এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করতে চাইলে করে দুর্ব্যবহার। এমন বাস্তবতায় সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন করছেন উপজেলার দলিল লেখকরা। এর ফলে একদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে, অন্যদিকে জমি নিবন্ধন করতে আসা দাতা-গ্রহীতারা চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। দলিল লেখকদের অভিযোগ, শ্রীমঙ্গলে সম্প্রতি আসা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার শংকর কুমার ধর প্রতি দলিলের মূল্যের উপর ১% থেকে ৫% পর্যন্ত কমিশন না দিলে কোনো দলিল করতে চান না। তাছাড়া প্রতিটি দানপত্র দলিল, এওয়াজ দলিল, ওছিয়তনামা দলিল, বায়না দলিল, নাদাবি দলিল, বাটোয়ারা দলিল, হেবা দলিল থেকে ৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নিয়ে থাকেন। কথা অনুযায়ী তাকে টাকা না দিলে বিভিন্ন আইনী ফাঁক-ফোকর আর অজুহাত দেখিয়ে দলিল করতে চান না। এছাড়াও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি গত দুই মাসে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। দলিল লেখকদের কেউ শংকর কুমার ধরের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করতে চাইলে তিনি তাদের সাথে দুর্ব্যবহার, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যসহ অসদাচরণ করে থাকেন বলেও অভিযোগ ওঠেছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলুর রহমান জানান, শ্রীমঙ্গলে গত ফেব্রুয়ারি মাসে শংকর কুমার ধর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন সময়ে দলিল লেখকরা এর প্রতিবাদ করলেও কোনো সমাধান হয়নি। উল্টে তাদের সাথে অসদাচরণসহ নানা কারণ দেখিয়ে দলিল না করার হুমকি দিয়ে অনিয়মের মাত্রা বাড়িয়ে দেন তিনি। দলিল রেজিস্ট্রি করতে গেলে দলিল প্রতি ১% থেকে ৫% পর্যন্ত কমিশন দাবি করেন। অন্যথায় তিনি দলিল করতে নারাজ। এসব অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে আমরা একাধিকবার সাব-রেজিস্ট্রার শংকর কুমার ধর এর সাথে বৈঠকে বসেছি, কোনো সমাধান হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে সাব-রেজিস্ট্রারের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সকল দলিল লেখকদের সাথে নিয়ে কর্মবরিত পালন করছি। বিষয়টি সমাধানের আগ পর্যন্ত আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরা দলিল লেখা বন্ধ রাখবো। এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা রেজিস্টার এস এম সোহেল রানা মিলনের মুঠেফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের থেকে জানা যায় জেলা রেজিস্ট্রার ৩দিনের ছুটিতে আছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু তালেব জানান, ‘কর্মবিরতির বিষয়টি শুনেছি। দলিল লেখকদের বক্তব্য কি তারা আমাকে আগে লিখিতভাবে জানাক, যদি সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের কোনো অভিযোগ থাকে, তারা আমাকে লিখিতভাবে জানালে আমি তদন্ত করে অভিযোগের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেবো।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস