সিলেট

সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু

সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চালু হলো সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। গতকাল বুধবার বিকাল ৩টার দিকে দুবাই থেকে ১৪৭ জন যাত্রী নিয়ে ফ্লাই দুবাই এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ওসমানীতে এসে অবতরণ করে। দেশে এবারই প্রথম দেশী-বিদেশী কোম্পানীর কোড শেয়ার ব্যবস্থার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হলো।

রিজেন্ট এয়ারওয়েজের সাথে কোড শেয়ার ব্যবস্থায় দুবাই-সিলেট-দুবাই সরাসরি এই ফ্লাইট চালুু করে ফ্লাই দুবাই।

এ সময় ফ্লাইটে আগত যাত্রীদের স্বাগত জানান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রাক্তন স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এহসানুল গনি চৌধুরী, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের চেয়ারম্যান ইয়াসিন আলী, ফ্লাই দুবাইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গায়েত আল গায়েত, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম. ফজলে আকবর, ফ্লাই দুবাইয়ের বাংলাদেশ জিএসএ স্কাই এভিয়েশন সার্ভিসের চেয়ারম্যান সাইফুল হক প্রমুখ।
এরপর বিমানবন্দর লাউঞ্জে আয়োজন করা হয় একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন বলেন, আজ সিলেটবাসীর জন্য অত্যন্ত আনন্দের দিন। দীর্ঘদিন থেকেই তারা সিলেট থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের দাবি জানিয়ে আসছেন। ২০১৫ সালে একবার আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হলেও কিছু বাধার কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়।

মন্ত্রী বলেন, ফ্লাই দুবাই’র সাথে রিজেন্টের কোড শেয়ারের বিষয়টি খুব সহজ ছিলো না। এটি করতে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আশা করছি এখন আর সমস্যা হবে না।

তিনি বলেন, ওসমানী বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণে ৪৫২ কোটি টাকার প্রকল্প একেনেকে অনুমোদন হয়েছে। শীঘ্রই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। রানওয়ে সম্প্রসারিত হলে আরো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সিলেট থেকে চালু হবে। আরো কয়েকটি বিদেশী উড়োজাহাড় সিলেট থেকে ফ্লাইট চালুর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আশা করি, আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে এটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমান বিশ্বে এভিয়েশন শিল্পে এ ধরনের কোড শেয়ার ব্যবস্থা বেশ কার্যকর হলেও বাংলাদেশে এই প্রথম দেশি-বিদেশি দুটি বিমানসংস্থা এই ব্যবস্থা রুট পরিচালনায় সম্পৃক্ত হয়েছে। এর ফলে পরিচালন পারমিট ও কোড, বিমানবন্দর স্পট এবং গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে থাকবে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। ফ্লাইট পরিচালনা, টিকেটিং, সেলস-মার্কেটিংয়সহ পুরো দায়িত্ব ফ্লাই দুবাইয়ের। সপ্তাহে প্রতিদিন দুবাই-সিলেট-দুবাই রুটে চলবে ফ্লাই দুবাইয়ের ১৭৫ আসনের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ।

এরআগে গত ২০১৫ সালের ১ মে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সরাসরি দুবাই-সিলেট-দুবাই ফ্লাইট চালু করেছিলো ফ্লাই দুবাই। তবে গ্রাউন্ড হ্যাডেলিং অনুমতি না থাকা ও বাংলাদেশ বিমানের আপত্তির কারণে একদিন পরই তা বন্ধ হয়ে যায়।

তবে এবার রিজেন্ট এয়ারওয়েজের সাথে কোড শেয়ার ব্যবস্থায় সরাসরি ফ্লাইট চালুু করল ফ্লাই দুবাই। যদিও রিজেন্টের সাথে কোড শেয়ারে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিমানের কর্মকর্তারা। গতকাল বুধবার ফ্লাই দুবাই’র ফ্লাইটরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেননসহ অন্য অতিথিরাও জানিয়েছেন, ‘অনেক বাধার পর’ এই ফ্লাইট চালু করা হয়েছে।

আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাড়ে ৫ টায় ১৬৯ জন যাত্রী নিয়ে ওসমানী থেকে দুবাই’র উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে ফ্লাই দুবাই।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ২০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক তকমা গায়ে লাগে ওসমানী বিমানবন্দরের। প্রায় ১৭ বছর পর ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল এমএজি ওসমানী বিমানবন্দর থেকে চালু হয় সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। দুবাই থেকে ১৬৩ জন যাত্রী নিয়ে ফ্লাই দুবাইয়ের একটি ফ্লাইট ওই দিন বিকেলে অবতরণ করে। পরে ওসমানীর রিফুয়েলিং স্টেশন থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করে ১৩০ জন যাত্রী নিয়ে ফের দুবাইয়ের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে ফ্লাইটটি। এর মধ্য দিয়ে সিলেটবাসীর বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটেছিল। কিন্তু এরপরই ফ্লাইট চালনা বন্ধ করে দেয় ফ্লাই দুবাই। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ফের শুরু হলো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট।

এখন থেকে ফ্লাই দুবাই এয়ারলাইন্স ওসমানী বিমানবন্দরের মাধ্যমে আগামী তিন মাস সপ্তাহে পাঁচদিন আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এরপর পুরো সপ্তাহই থাকবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট।


এলএবাংলাটাইমস/এস/এলআরটি