সিলেট

শাবিতে জাফর ইকবালকে ছুরিকাঘাত

বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের মাথায় ছুরিকাঘাত করেছে এক দুর্র্বৃত্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে গতকাল বিকেল ৫টা ৪৫মিনিটে ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অনুষ্ঠান চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীকে আটক করা হয়েছে। তার পরিচয় জানা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোবো ফাইট চলাকালীন সময়ে পিছন দিক থেকে একজন দুর্বৃত্ত তাকে ছুরিকাঘাত করে। দুজন হামলাকারীর একজনকে ধরতে পারলেও অন্যজন মোটর সাইকেলে চড়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশের গাড়িতে করে ড. জাফর ইকবালকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার সময় ইব্রাহীম নামে একজন পুলিশ সদস্যও হাতে ছুরিকাহত হন।

এদিকে হামলাকারীর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে পারে নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাকে একাডেমিক ভবন এ-তে আটক করে রাখা হয়েছে। বিক্ষোব্ধ শিক্ষার্থীদের বাঁধার মুখে তাকে কোন ধরনের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়নি। ভবনের বাইরে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী জমায়েত হয়েছে। আটককৃত হামলাকারীর নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তার মুখে গুচ্ছ দাড়ি, পরনে কালো টি-শার্ট এবং জিন্স প্যান্ট ছিল।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিলেট মেট্রোপলিটন পলিশের এডিসি জ্যোতির্ময় সরকার তপু বলেন, ‘আমরা হামলাকারীকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিপুল সংখ্যক  পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়ন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে সিলেট ওসমানী মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুল হক জানান, ‘স্যারের অবস্থা এখন শংকামুক্ত রয়েছে। তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্যে এয়ার অ্যাম্বোলেন্সে করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে পাঠানো  হয়েছে।’

এদিকে হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে শাবি প্রেসক্লাব। এছাড়াও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

গত শুক্রবার র‌্যাগিংয়ের শাস্তির ঘটনায় জাফর ইকবাল শাস্তি কম হয়েছে উল্লেখ করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেন। এ ঘটনার রেশ ধরেই হামলা হয়েছে কিনা তা এখনো জানা যায়নি।

হুমকি দিয়ে হামলা :
এর আগেও জাফর ইকবাল ও তার সহধর্মিণীকে হত্যা চেষ্টা করে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন। ২০১২ সালে জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের পক্ষ থেকে ও হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে জালালাবাদ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এরপর থেকেই উনার সুরক্ষার স্বার্থে ছয়জন পুলিশ টহলে থাকেন। পুলিশ প্রহরায়ই এবার তাকে হামলা করা। এছাড়াও ২০১১ এবং ২০০৯ সালেও হত্যার হুমকি দেয়া হয়।


এলএবাংলাটাইমস/এস/এলআরটি