আইটি

'ইন্টারনেট ছাড়া মনে হয় অন্ধকার যুগে আছি'

“মোবাইল ফোনের খালি স্ক্রিনটি আমার দিকে
নিস্পলকভাবে তাকিয়ে আছে।আবারো ইন্টারনেট
বন্ধ। আমার মনে হচ্ছে আবারো আমি কোন
নির্জন দ্বীপে আটকা পড়েছি।”
কাশ্মির বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মহাপারা পারভেজ তার
ইন্টারনেটবিহীন অবস্থাকে এভাবেই বর্ণনা
করেছেন। কারণ বিভিন্ন অজুহাতে কাশ্মিরে প্রায়ই
ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়।
‘ভূ-স্বর্গ’ হিসেবে পরিচিত কাশ্মিরে ইন্টারনেট
বেশ নিয়ন্ত্রিত। কাশ্মির বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী
মহাপারা পারভেজ শ্রীনগর থেকে ২০ কি:মি: দুরে
বসবাস করেন।
কিন্তু অন্য কোথাও সে চট করেই যেতে
পারে না। এজন্য প্রতিদিনই তাকে নতুন করে
সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
কোথাও বনধ ডাকা হয়েছে কিনা, কোথাও কারফিউ
আরোপ করা হয়েছে কিনা –এসব খবর তাকে
প্রতিনিয়ত সে খবরা-খবর নিতে হয়।
এজন্য মহাপারা পারভেজকে নির্ভর করতে হয়
বিভিন্ন খবরের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকে
বন্ধুদের সাথে তথ্য আদান-প্রদান করতে হয়।
কাশ্মিরে টেলিভিশনের খবরে সব ধরনের তথ্য
পাওয়া যায় না । ২০০৮ সালে গ্রীষ্মের পর বেশ
কয়েকশ যুবক রাস্তায় বিক্ষোভ করে এবং
নিরাপত্তাবাহিনীর দিকে পাথর ছুঁড়েছে।
সে খবর প্রচারের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ
নিষেধাজ্ঞা জারী করেছিল। এমনকি খবরের
কাগজ মানুষের কাছে অনেক দেরিতে পৌঁছে।
কাশ্মিরে ইন্টারনেটের মাধ্যমেই দ্রুত গতিতে
তথ্য আদান-প্রদান হয়। এ বিষয়টি সব রাজনৈতিক দল
ভালো করেই জানে।
এমনকি রাজনৈতিক দলগেুলো ফেসবুকের
মাধ্যমেই তাদের বনধের ডাক দেয়।
কাশ্মিরে ইন্টারনেট এতো হরহামেশা বন্ধ করা হয়
যেটি দেখে মহাপারা পারভেজ-এর কাছে মনে হয়
তিনি ‘অন্ধকার যুগে’ ফিরে গেছেন।
“একদিন আমি এবং আমার এক বন্ধু পরীক্ষা দেয়ার
জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু
বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে জানতে পারলাম যে পরীক্ষা
হবে না। কর্তৃপক্ষ বললো এই নোটিশ আগেই
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছিল”
এমনকি একবার ঈদের সময় টানা তিনদিন ইন্টারনেট
বন্ধ ছিল। সে সময় কাশ্মিরে অবস্থানরত পর্যটকরা
তাদের গন্তব্যে ফিরে যাবার জন্য অনলাইনে
ফিরতি টিকিট কিনতে পারছিলেন না।
যে কাজটি অনায়াসে অনলাইনে ঘরে বসেই করা
যায় সেজন্য অনেককেই দূর-দূরান্তে ছুটতে
হয়। কারণ ইন্টারনেটের উপর কোন ভরসা নেই।
যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে।