ভ্রমণ

পুরান ঢাকার বড় কাটরা, মুঘল ইতিহাসের এক ম্লান সাক্ষী

ঢাকার পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত বড় কাটরা মুঘল আমলের জমিদারির একটি স্মারক। কাটরা বা কাটারা শব্দটি এসেছে আরবি ও ফরাসি ‘ক্যারাভ্যানসারাই’ থেকে, যেখানে পথিকেরা অবস্থান করতেন।  ইতিহাস ও নির্মাণ
বড় কাটরা নির্মিত হয় ১৬৪৪-৪৬ খ্রিস্টাব্দে, সম্রাট শাহজাহানের পুত্র শাহ সুজার নির্দেশে দিওয়ান মীর আবুল কাসিম দ্বারা। মূলত এটি একটি সরাইখানা। যা পরবর্তীকালে মুসাফিরখানা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বর্তমানে এটি জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফুল উলুম মাদরাসার আওতায় রয়েছে। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ইমারতটির সংরক্ষণে আগ্রহ প্রকাশ করলেও মূল্যবান দালানটি অধিগ্রহণে মালিক পক্ষের বাধায় তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি।
স্থাপত্য ও পাঠাগার
একসময়ে কাটরার তোরণে একটি পাথরের ফলকে রয়েছে ফার্সি ভাষায় খলিফা শাহ সুজার দান-খয়রাতের তথ্য—মুসাফিরদের বিনা মূল্যে থাকার জন্য এবং সংস্কারের ব্যয়সম্ভারের উদ্দেশ্যে ২২টি দোকানঘর নির্মাণের নির্দেশ উল্লেখ ছিল। আজকের দিনে ফলকটি ভগ্নাংশে পরিণত হলেও এর ঐতিহাসিক তাৎপর্য অম্লান রয়েছে।
বড় কাটরার স্থাপত্যশৈলী আকর্ষণীয়—উত্তর ও দক্ষিণে দুটি প্রবেশপথ, হালকা আয়তাকার কেন্দ্রীয় প্রাঙ্গণ এবং তাতে ২২টি কক্ষ। দুই প্রান্তে রয়েছে আটকোনা আকৃতির বুরুজ, আর ফটকের দুই পাশে দুইতলা জোড়া ভবন। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে রিকশাযোগে চকবাজারের দিকে বাবুবাজার এলাকায় বড় কাটরায় পৌঁছানো যায়। ঢাকা ছাড়াও অন্যান্য জেলা থেকে আগতরা প্রথমে ঢাকায় এসে পুরান ঢাকার দিকে রওনা হলে সহজেই ঐতিহাসিক এই নিদর্শন ভ্রমণ করতে পারবেন।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস