একটি প্রশাসনিক ভুলের কারণে মেরিল্যান্ডের বাসিন্দা কিলমার আর্মাদো আব্রেগো-গার্সিয়াকে এল সালভাদরের দুর্ধর্ষ কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে স্বীকার করেছে মার্কিন অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)। ৩৫ বছর বয়সী আব্রেগো-গার্সিয়া একজন মার্কিন নাগরিকের স্বামী এবং পাঁচ বছর বয়সী সন্তানের পিতা। তিনি বর্তমানে CECOT কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তার আইনজীবীরা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে তাকে ফেরত আনার জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
আইসিই-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি একটি ভুল ছিল। তবে সরকার আদালতে বলেছে, যেহেতু আব্রেগো-গার্সিয়া এখন আর মার্কিন হেফাজতে নেই, তাই আদালত তার প্রত্যাবর্তনের আদেশ দিতে পারবে না এবং এল সালভাদর সরকারকেও তাকে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়।
২০১৯ সালে এক গোপন সূত্র দাবি করেছিল যে, আব্রেগো-গার্সিয়া MS-13 গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য। তবে, অভিবাসন আদালত তাকে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানোর বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিল এবং তার আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করেছিল। কিন্তু চলতি মাসের শুরুর দিকে, আইসিই কর্মকর্তারা তাকে আটক করে জানান যে, তার অভিবাসন অবস্থা পরিবর্তিত হয়েছে। পরে তাকে টেক্সাসের একটি বন্দীশিবিরে পাঠানো হয় এবং ১৫ মার্চ এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়।
আইসিই কর্মকর্তা রবার্ট এল. সের্না এক শপথপত্রে বলেন, আব্রেগো-গার্সিয়ার বহিষ্কার আদেশ কার্যকর করা হয়েছে, যা একটি ভুল ছিল। তবে সরকার বলছে, তার কাছে যথেষ্ট সুযোগ ছিল নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার। বিচার বিভাগের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াকোভ এম. রথ বলেন, আব্রেগো-গার্সিয়াকে আদালতে প্রমাণ করতে বলা হয়েছিল যে, তিনি MS-13 এর সদস্য নন, কিন্তু তিনি যথাযথ প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আইনজীবীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, আব্রেগো-গার্সিয়া CECOT কারাগারে নির্যাতনের শিকার হতে পারেন বা প্রাণ হারাতে পারেন। তবে, মার্কিন সরকার এই আশঙ্কা প্রত্যাখ্যান করেছে। রথ আদালতে বলেন, CECOT কারাগারে বন্দিদের ওপর নির্যাতনের কিছু অভিযোগ থাকলেও, এটি ব্যাপক মাত্রায় ঘটছে বলে কোনো প্রমাণ নেই এবং আব্রেগো-গার্সিয়া নির্দিষ্টভাবে নির্যাতনের শিকার হবেন, এমন সুস্পষ্ট প্রমাণও নেই।
আইসিই কর্মকর্তা সের্না জানান, এই বহিষ্কার একটি প্রশাসনিক ত্রুটি ছিল, তবে এটি সততার সাথে কার্যকর করা হয়েছে, কারণ তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বহিষ্কার আদেশ ছিল এবং তিনি MS-13 সদস্য হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে আইসিই-এর প্রশাসনিক কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম