আমেরিকা

প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভের দায়ে কলম্বিয়া গ্র্যাজুয়েট খলিলকে বহিষ্কারের নির্দেশ

যুক্তরাষ্ট্রের এক বিচারক রায় দিয়েছেন, কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট মাহমুদ খলিলকে দেশ থেকে বহিষ্কার করতে পারবে ট্রাম্প প্রশাসন। গত মাসে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পর তাকে আটক করা হয়। ৩০ বছর বয়সী মাহমুদ খলিল একজন বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়নি। লুইজিয়ানার একটি ডিটেনশন সেন্টার থেকে লেখা এক চিঠিতে তিনি দাবি করেন, “ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে কথা বলার কারণেই আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” সরকার ১৯৫২ সালের ঠান্ডা যুদ্ধকালীন একটি অভিবাসন আইন ব্যবহার করে দাবি করেছে, খলিলের যুক্তরাষ্ট্রে উপস্থিতি দেশের পররাষ্ট্রনীতির জন্য ‘বিরূপ’ হতে পারে। বিচারকের রায় অনুযায়ী, এই যুক্তি “মোটামুটি গ্রহণযোগ্য” হওয়ায় ট্রাম্প প্রশাসন তাকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে পারবে। তবে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার কার্যকর হবে না। বিচারক ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত খলিলের আইনজীবীদের আপিল করার সুযোগ দিয়েছেন। মাহমুদ খলিলকে ৮ মার্চ থেকে আটক রাখা হয়েছে। ওইদিন অভিবাসন কর্মকর্তারা তাকে জানায়, গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে তাকে বহিষ্কার করা হবে। গত বছর কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনে খলিল ছিলেন অন্যতম প্রধান কণ্ঠস্বর। আদালতের রায়ের পর খলিল বলেন, “আপনি আগেও বলেছিলেন, এই আদালতের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ও মৌলিক ন্যায়বিচার। কিন্তু আজ যা ঘটেছে, এবং এই পুরো প্রক্রিয়ায় যা ঘটেছে—কোনোটিই সে মানদণ্ড পূরণ করে না। ট্রাম্প প্রশাসন আমাকে আমার পরিবার থেকে হাজার মাইল দূরে এই আদালতে পাঠিয়েছে ঠিক এই কারণেই।” মানবাধিকার সংগঠন আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (ACLU) এই রায়কে “পূর্বনির্ধারিত” বলে আখ্যা দিয়েছে। ACLU জানায়, সরকার খলিলের বিরুদ্ধে ‘প্রমাণ’ জমা দিয়েছে রায় ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টারও কম সময় আগে। এসব তথ্যে ছিল শুধু পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর একটি চিঠি, যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে খলিল কোনো অপরাধ করেননি এবং কেবল তার মতপ্রকাশের জন্যই তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। সরকার, বিশেষ করে রুবিও, দাবি করেছেন—খলিলের কর্মকাণ্ড “আইনগতভাবে বৈধ” হলেও, যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদি শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও সহিংসতা থেকে রক্ষার জন্য তাকে বহিষ্কার করা জরুরি। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম শুক্রবার বিচারকের রায়কে স্বাগত জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও পড়াশোনার সুযোগ একটি বিশেষাধিকার। যারা সহিংসতা প্রচার করে, সন্ত্রাসবাদীদের প্রশংসা করে এবং ইহুদিদের হয়রানি করে—তাদের এই দেশে থাকার অধিকার নেই। বিদায়, ভালোই হয়েছে।”

এলএবাংলাটাইমস/ওএম