ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপানো শুল্কের বিরুদ্ধে একযোগে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি অঙ্গরাজ্য। এই শুল্ক নীতির কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে, এমন অভিযোগ এনে মামলাটি করা হয়েছে।
নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ও অ্যাটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বে দায়ের করা মামলায় দাবি করা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের কোনো সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া শুল্ক আরোপ করা যায় না বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলাটি ইউনাইটেড স্টেটস কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড-এ দায়ের করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিটিয়া জেমসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলা হয়েছে, "তিনি রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে এক ধরনের ‘উইচ হান্ট’ পরিচালনায় ব্যস্ত, অথচ নিজ অঙ্গরাজ্যের জনগণের নিরাপত্তা ও মঙ্গল উপেক্ষিত হচ্ছে।"
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র কুশ দেশাই বলেন, "এই প্রশাসন জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি, অবৈধ অভিবাসন ও ফেন্টানিল প্রবাহের বিরুদ্ধে এবং মার্কিন পণ্যের বার্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবেলায় সম্পূর্ণ আইনি ক্ষমতা ব্যবহার করেই কাজ করবে।"
ট্রাম্প তাঁর শুল্ক নীতির পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে ১৯৭০-এর দশকের একটি আইন - ইন্টারন্যাশনাল এমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ারস অ্যাক্ট (IEEPA) ব্যবহার করেছেন। কিন্তু মামলায় বলা হয়েছে, এই আইন তাঁকে এমন শুল্ক আরোপের ক্ষমতা দেয় না। এর আগে কোনো প্রেসিডেন্ট এই আইনের অধীনে শুল্ক আরোপ করেননি বলেও কংগ্রেসনাল গবেষণায় উঠে এসেছে।
মামলায় বলা হয়েছে, “প্রেসিডেন্ট যদি নিজের সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো সময় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে যেকোনো পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করতে পারেন, তবে তা সংবিধানিক ভারসাম্য নষ্ট করে ও অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।”
এর আগে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যও আলাদাভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একই ধরনের মামলা দায়ের করেছে।
ট্রাম্পের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতেই এসব শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
চলতি মাসের ২ এপ্রিল এক ‘লিবারেশন ডে’ অনুষ্ঠান থেকে তিনি “রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ” ঘোষণা করেন, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। পরে প্রতিক্রিয়া দেখে ৯০ দিনের জন্য শুল্ক কার্যকর স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন, এবং বেশিরভাগ দেশের জন্য হার কমিয়ে ১০% করেন। তবে চীনের ওপর এই ছাড় প্রযোজ্য হয়নি। বরং চীনের বিরুদ্ধে ১৪৫% শুল্ক আরোপ করা হয়।
এই শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা বেড়ে গেছে এবং বৈশ্বিক বাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তবে বুধবার ট্রাম্প জানান, তিনি শিগগিরই চীনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চান।
এছাড়াও মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানি করা কিছু পণ্যের ওপর ২৫% হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বলে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
এলএবাংলাটাইমস/ওএম