নিউ জার্সিতে শীর্ষ ফেডারেল প্রসিকিউটর পদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পছন্দের ব্যক্তি আলিনা হাববাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিচারক। ডেমোক্র্যাটদের তীব্র বিরোধিতার মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আলিনা হাববা, যিনি ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী হিসেবে একাধিক মামলায় তাঁকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, গত মার্চে এই পদে নিয়োগ পান। তবে তার ফৌজদারি আইন বা প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালনের পূর্ব কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না।
হাববাকে অপসারণ করায় বিচারকদের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হাববার স্থলাভিষিক্ত হওয়া ব্যক্তি, ডেপুটি প্রসিকিউটর ডিজিরে লেই গ্রেসকে তাৎক্ষণিকভাবে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে হাববাকে নিউ জার্সির ইউএস অ্যাটর্নি হিসেবে মনোনয়ন দিলেও এখনো সিনেট তার নিয়োগের বিষয়ে ভোট দেয়নি। ১২০ দিনের জন্য তিনি অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অস্থায়ী ইউএস অ্যাটর্নিকে সরিয়ে দেওয়া বিচারকদের পক্ষে একেবারেই অস্বাভাবিক ঘটনা। হাববার ১২০ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিচারকরা তার ডেপুটি ও অভিজ্ঞ প্রসিকিউটর ডিজিরে লেই গ্রেসকে নতুন ইউএস অ্যাটর্নি হিসেবে নিয়োগ দেন। তবে, কেন হাববাকে সরিয়ে দেওয়া হলো, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
খবর প্রকাশের কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি জানান, গ্রেসকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, “এই বিচার বিভাগ বিদ্রোহী বিচারকদের সহ্য করে না— বিশেষ করে যখন তারা প্রেসিডেন্টের সংবিধানিক আর্টিকেল ২ ক্ষমতার ওপর হস্তক্ষেপ করে।”
হাববা মার্চে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। তিনি এক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যানের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ আনেন এবং রাজ্যের ডেমোক্র্যাট গভর্নর ও অ্যাটর্নি জেনারেলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের উপ-অ্যাটর্নি জেনারেল টড ব্লাঞ্চ এক বিবৃতিতে জানান, হাববা ট্রাম্প এবং বিচার বিভাগের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছেন। তিনি বিচারকদের সমালোচনাকে “রাজনৈতিক গোলমাল” বলে উড়িয়ে দেন।
১৭ জন বিচারকের রায়ের পর, ব্লাঞ্চ আবারও এক্স-এ (পূর্বের টুইটার) পোস্ট দিয়ে অভিযোগ করেন যে বিচারকরা "আইনের শাসন নয়, বরং বামপন্থী এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন।”
“যখন বিচারকরা কর্মীসুলভ আচরণ করেন, তখন তারা আমাদের বিচারব্যবস্থার ওপর আস্থা নষ্ট করেন,” — মন্তব্য করেন তিনি।
হাববার মেয়াদ কখন শেষ হবে, তা নিয়েও কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে। তাকে ২৪ মার্চ নিয়োগ দেওয়া হলেও ২৮ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করায় তার ১২০ দিনের মেয়াদ মঙ্গলবার শেষ হওয়ার কথা।
নিউ জার্সির দুই ডেমোক্র্যাট সিনেটর হাববার স্থায়ী নিয়োগের বিরোধিতা করেছেন। তারা বলেন, তিনি “বিভ্রান্তিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা” করেছেন এবং “এই পদে কাজ করার যোগ্যতা রাখেন না।”
গত সপ্তাহে নিউইয়র্কেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। সেখানেও বিচারকরা অন্তর্বর্তীকালীন ইউএস অ্যাটর্নির মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানান। যদিও সরিয়ে দেওয়া ব্যক্তি জন সারকোন তৃতীয়কে বিশেষ অ্যাটর্নি হিসেবে রাখা হয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম