বাংলাদেশ

বাংলাদেশে শিক্ষার ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা, প্রজ্ঞাপন জারি

ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণার পর তীব্র স্লোগান
পরিণত হলো বিজয় উল্লাসে। ছবি : মঞ্জুরুল করিম
কয়েক দিনের টানা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায়
গতকাল সোমবার সকাল থেকেই ভ্যাটবিরোধী
মিছিল-স্লোগান নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য
দিনের মতোই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে একে
একে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে থাকে।
নগরবাসীর সামনে উঁকি দিতে থাকে আরেকটি
‘অচল’ দিনের শঙ্কা। তবে সকালের সূর্য দুপুরে
গড়ানোর আগেই আসে কাক্সিক্ষত স্বস্তির খবর।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পিছু হটে
সরকার। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফির ওপর
থেকে ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর বা মূসক)
প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই খবর
ছড়িয়ে পড়তেই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ রূপ
নেয় উল্লাসে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সফল
সমাপ্তিতে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে তাদের মধ্যে।
রাজপথ ছেড়ে ক্যাম্পাসে ফিরতে শুরু করে
শিক্ষার্থীরা। ফলে দুপুর থেকেই ঢাকায় যান চলাচল
স্বাভাবিক হতে শুরু করে। গতকালের ঘোষণার
মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের সাড়ে তিন মাসের
ভ্যাটবিরোধী আন্দোলনের অবসান হলো।
ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণায় আন্দোলনরত
শিক্ষার্থী ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিক সমিতি
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা
মো. শাহেদুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং
কলেজের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর
আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও জনদুর্ভোগ
বিবেচনায় নিয়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া
হয়েছে। চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর
আরোপিত ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট আর দিতে হবে না।
বেসরকারি মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের
টিউশন ফির ওপর একই হারে আরোপিত ভ্যাটও
প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভ্যাট প্রত্যাহারের
ফলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধ হবে
বলে আশা করছে সরকার। এতে বলা হয়, ‘সরকার
আশা করে যে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকবর্গ তাঁদের আন্দোলন
বন্ধ করে শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যাবেন এবং
দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় কোনো ধরনের
বাধা সৃষ্টির সুযোগ দেবেন না।’
সরকারের ঘোষণার পর গতকাল রাতে জাতীয়
রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রজ্ঞাপন জারি করে
ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কার্যকরের কথা
জানিয়েছে। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর
রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে,
‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিক্যাল ও
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোর উচ্চশিক্ষার জন্য
সাধারণভাবে অনেক ব্যয় হয়, এর ওপর আবার ভ্যাট
আরোপ করলে ব্যয় আরো বৃদ্ধি পাবে। তাই
এনবিআর মূল্য সংযোজন কর আইন ১৯৯১ (১৯৯১
সনের ২২ নম্বর আইন) এর ১৪ উপধারা (২)-এ
প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আরোপিত ভ্যাট হতে
অব্যাহতি দেওয়া হলো। এ আদেশ চলতি
অর্থবছরের ৪ জুন হতে কার্যকর বলে গণ্য
হবে।’
সরকারের ঘোষণাকে শিক্ষার্থীরা নিজেদের
বিশাল বিজয় হিসেবে দেখছে। তারা বলছে,
শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির মুখে সরকার নতি
স্বীকার করেছে।
টানা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গতকাল সকাল সাড়ে
১০টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান
নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মিছিল-স্লোগানে
চারদিক মুখরিত করে তোলে তারা। সকাল ১১টা নাগাদ
রাজধানীর বেশ কিছু সড়কও অবরোধ করা হয়।
যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা যখন
আন্দোলনে ব্যস্ত ছিল তখন সচিবালয়ে
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে চলছিল মন্ত্রিসভার
বৈঠক। আন্দোলনের ফাঁকে সেদিকেও
শিক্ষার্থীদের সজাগ দৃষ্টি ছিল। দুপুর ১২টার দিকে
প্রথমে খবর আসে যে ভ্যাট প্রত্যাহার করার
বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে অনির্ধারিত
আলোচনা হয়েছে। ভ্যাট প্রত্যাহার হচ্ছে-
অনানুষ্ঠানিক এ খবরে সবার মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়ে
যায়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঢু মারতে শুরু
করে নিজেদের স্মার্টফোনে। বিভিন্ন অনলাইন
সংবাদমাধ্যমে চোখ রাখতে থাকে তারা। ততক্ষণে
অনলাইন পোর্টালগুলোও ভ্যাট প্রত্যাহারের খবর
জানানো শুরু করেছে। ‘প্রধানমন্ত্রী ভ্যাট
প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন’- সংবাদ
সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যানের এ বক্তব্যও
পৌঁছে যায় শিক্ষার্থীদের কাছে। ফলে দুপুর
সোয়া ১২টার দিকেই বিক্ষোভ রূপ নেয়
উল্লাসে। আনন্দে উদ্বেল হয়ে ওঠে
শিক্ষার্থীরা। অনেকেই ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে বিজয়
উদ্যাপন করে। পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে উচ্ছ্বাস
প্রকাশ করতে থাকে তারা। ভ্যাট প্রত্যাহারের
ঘোষণা আসার সময় থেকেই শিক্ষার্থীরা সড়ক
থেকে অবরোধ তুলে নেয়। ধীরে ধীরে
রাস্তা ছেড়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে থাকে
তারা। আর সচল হয়ে ওঠে বিভিন্ন সড়কে আটকে
থাকা গাড়ির চাকা।
গতকাল ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে গিয়ে
অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘যারা বেসরকারি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনেক খরচ করে শিক্ষা গ্রহণ
করছে তারা এ জন্য অতিরিক্ত সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট
দিতে চায় না। এবং সে জন্য তারা ক্লাস ছেড়ে
দিয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করে
জনজীবন বিঘ্নিত করছে এবং উন্নয়নের
যাত্রাপথে বাধার সুযোগ করে দিচ্ছে। সরকার
কোনোমতেই শিক্ষাঙ্গনে কোনো
প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায় না এবং জনজীবনে
অসুবিধারও সৃষ্টি করতে চায় না। সেই দৃষ্টিকোণ
থেকে বিবেচনা করে সরকার ২০১৫-১৬
অর্থবছরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল
কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওপর যে সাড়ে
সাত শতাংশ মূসক আরোপিত হয়, সেটি প্রত্যাহার করার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
‘শিক্ষা খাত প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবচেয়ে
অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত’ উল্লেখ করে অর্থ
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে শিক্ষায় প্রতি
ঘরে ঘরে মানুষের আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
অনেকেই অতি নির্দিষ্ট সামর্থ্যরে মধ্যেও
ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য প্রচুর অর্থ
ব্যয় করে থাকেন। ব্যক্তিমালিকানা খাতের
প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ব্যয়বহুল। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস
করেন, জাতিকে শিক্ষা দিলেই দেশের
উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রা দ্রুতগতি লাভ করে।
শিক্ষার উন্নয়নের জন্য সরকার প্রায় ৩৩ কোটি
পাঠ্যপুস্তক বিনা মূল্যে বিতরণ করে। বিপুলসংখ্যক
ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তি দেয়, খাদ্য সহায়তা দেয় এবং
শিক্ষক গড়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রাখে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার আগে
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এনবিআরের
চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন,
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা
ভেবে প্রধানমন্ত্রী ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত
নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত জুনে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের
বাজেট প্রস্তাবের সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়,
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও বেসরকারি
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওপর প্রথমবারের মতো
১০ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করেন
অর্থমন্ত্রী। তবে বাজেট পাসের সময়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সেখান
থেকে আড়াই শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট
আরোপ করা হয়।
ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে গত জুন থেকেই
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে আসছিল। তবে
ক্যাম্পাসের বাইরে আন্দোলনের সূচনা হয় গত
বুধবার, রামপুরার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির
শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামার মধ্য দিয়ে। ওই দিন
শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরের
দিন বৃহস্পতিবার এবং গত শনি ও রবিবার ঢাকার সব
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভ্যাট
প্রত্যাহারের দাবিতে দিনভর সড়ক অবরোধ করে
রাখে। ফলে নগরীতে যান ও জন চলাচল স্থবির
হয়ে যায়। জনদুর্ভোগ চরমে ওঠে। তবে
শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনে কোনো
ভাঙচুর বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। প্রথম দিনের
পর থেকে পুলিশও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
সহনীয় আচরণ করেছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই গত
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী সিলেটে সংবাদ সম্মেলন
করে এবং এনবিআর ব্যাখ্যা পাঠিয়ে বলে যে
আরোপিত ভ্যাট শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে
নেওয়া হবে না। ভ্যাট দেবে বিশ্ববিদ্যালয়
কর্তৃপক্ষ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ঘোষণা
দিয়ে বলছিল যে তারাই ভ্যাট দেবে। কিন্তু
ভবিষ্যতে ভ্যাটের অর্থ কার্যত শিক্ষার্থীদের
কাছ থেকেই আদায় করা হবে, এমন আশঙ্কায়
আন্দোলন চালু রেখে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি
করে শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গত
রবিবার সাতটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা
করে কর্তৃপক্ষ। তবু পূর্বঘোষণা অনুযায়ী
গতকাল সকাল ১০টার দিকেই বিভিন্ন বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে
আসে। সকালে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম
সংগঠন ছাত্রলীগও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর
ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে ভ্যাট প্রত্যাহারে
সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।
গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,
সকাল ৯টা থেকেই নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে
জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টা
থেকে ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে রাস্তার দুই পাশে
অবস্থান নেয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল
ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। সাড়ে ১০টার দিকে তারা
নেমে আসে রাস্তায়। ইস্ট ওয়েস্ট
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সকাল সাড়ে ১০টার
দিকে রামপুরা সড়কে অবস্থান নেয়। উত্তরার হাউস
বিল্ডিংয়ের চার রাস্তার মোড়ও একই সময়ে
অবরোধ করে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীরা। বারিধারার বসুন্ধরা গেটে অবস্থান
নেয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও ইনডিপেনডেন্ট
ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। কাকলীর মোড় ও
গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর অবরোধ করে
সড়কে অবস্থান নেয় বিভিন্ন বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মহাখালী, সাতমসজিদ
রোড, পান্থপথ, তেজগাঁও, শ্যামলীসহ কয়েকটি
সড়কে স্বল্প সময়ের জন্য অবস্থান নেয়
শিক্ষার্থীরা।
রাজধানীর কাকলীর মোড় অবরোধ করে
বিক্ষোভ করছিল ওই এলাকার কয়েকটি বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১১টার
দিকে সরকারি তিতুমীর কলেজের
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনাও
ঘটে। র্যাডিসন হোটেলে একটি অনুষ্ঠান শেষে
তিনটি বাসে ফিরছিল তিতুমীর কলেজের
শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা
তাদের গাড়ি আটকে দিলে বাগ্বিতণ্ডার জের ধরে
দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। পরে পুলিশ এসে
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবি করে,
তিতুমীরের ছাত্রদের হামলায় তাদের বেশ
কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
গতকাল উত্তরায় সহপাঠীদের সঙ্গে
বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন শান্ত-মারিয়াম
ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মুনতাসীর আসিফ। ভ্যাট
প্রত্যাহারের ঘোষণা শুনে দুপুর সাড়ে ১২টার
দিকে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা কর্মসূচি
প্রত্যাহার করে ক্যাম্পাসে ফিরে যাচ্ছি। কাল
থেকে ক্লাস করব। আমাদের আন্দোলনের
বিজয় হয়েছে। নগরবাসীর দুর্ভোগ হলেও
শিক্ষার স্বার্থে আমাদের এ ধরনের কর্মসূচি
নিতে হয়েছে। ভ্যাট প্রত্যাহার করার জন্য
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’
বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড
টেকনোলজির শিক্ষার্থী সারোয়ার ওসমান
কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভ্যাট থাকলে তা ঘুরেফিরে
শিক্ষার্থীদের ওপরই আসত। তাই আমরা
আন্দোলন চালিয়ে গেছি। এই আন্দোলনে
আমরা সফল হয়েছি।’
গতকাল রাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিক সমিতির
সভাপতি শেখ কবির হোসেন কালের কণ্ঠকে
বলেন, ‘ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে আমরা
আনন্দিত। আসলে এটা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর
হস্তক্ষেপে হয়েছে। শিক্ষার প্রতি অকুণ্ঠ
আগ্রহের ফলেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের
পক্ষ থেকে তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
এখন শিক্ষার্থীদের বলব, তোমরা অন্য
কোনো দিকে না তাকিয়ে পড়ালেখায় মন দাও।’