দুই বিদেশি খুনের পর রাজধানীতে
নিরাপত্তা জোরদারে নামানো হয় পুলিশের
বিশেষ টিম সোয়াত। বারিধারার কূটনৈতিক
এলাকা থেকে গতকাল দুপুরে তোলা ছবি।
ছবি : কালের কণ্ঠ
এক সপ্তাহে দুই বিদেশি হত্যার পর
বাংলাদেশে সম্ভাব্য জঙ্গি-চরমপন্থী
গোষ্ঠীগুলোর বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু
করেছে পশ্চিমা কূটনৈতিক মিশনগুলো।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র গতকাল বৃহস্পতিবার
কালের কণ্ঠকে জানায়, বাংলাদেশে
বর্তমানে জঙ্গি, উগ্রবাদী বা চরমপন্থী
গোষ্ঠী আছে কি না এবং থাকলে তারা
কারা, জনবল ও ক্ষমতা কেমন, তাদের কর্ম-
এলাকার বিস্তৃতি, বৈশ্বিক জঙ্গি-সন্ত্রাসী
গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ
আছে কি না, তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এবং সর্বোপরি তারা পশ্চিমা তথা
বিদেশিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কি না, সেসব
বিষয়ে তথ্য খোঁজা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে জঙ্গি
দমন নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর
পাশাপাশি এ বিষয়ে গবেষণা ও
লেখালেখি করা ব্যক্তিদের সঙ্গেও
যোগাযোগ করা হচ্ছে।
ওই সূত্র আরো জানায়, অতীতে এ দেশে
জামা'আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ
(জেএমবি) নামে একটি গোষ্ঠী তৎপর ছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তমনা ব্লগার হত্যার
দায় স্বীকার করা আনসারুল্লাহ বাংলা
টিমসহ নিষিদ্ধ হরকাতুল জিহাদ আল
ইসলামী, বাংলাদেশ (হুজি-বি), হিযবুত
তাহ্রীরসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর নাম শোনা
যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীও জঙ্গি গ্রেপ্তারে
সাফল্য দেখিয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে
ওই গোষ্ঠীগুলো সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য
জানার চেষ্টা চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পশ্চিমা
কূটনীতিক কালের কণ্ঠকে বলেন, সাম্প্রতিক
মাসগুলোতে বাংলাদেশে যে ধরনের সহিংস
উগ্রবাদ দেখা গেছে, তা নিয়ে তাঁরা
উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে ছয় মাসের মধ্যে
চারজন ব্লগারকে যেভাবে নিশানা করে
হত্যা মিশন নির্বিঘ্নে বাস্তবায়ন করা
হয়েছে, তা বিস্ময়কর।
তিনি বলেন, ওই হত্যাগুলোর কোনোটিরই
রহস্য বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
সন্দেহভাজন হিসেবে কয়েকজনকে
গ্রেপ্তার করার কথা তাঁরা শুনেছেন এবং
শেষ পর্যন্ত কী জানা গেছে, সে বিষয়ে
তাঁদের স্পষ্ট ধারণা নেই।
ওই কূটনীতিক বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে
ঢাকায় আমেরিকান-বাংলাদেশি ব্লগার
অভিজিৎ রায় হত্যার পর পশ্চিমা
কূটনীতিকদের নিজস্ব আলোচনায় প্রশ্ন
উঠেছে, ঘাতক চক্রের কাছ থেকে
বিদেশিরা কতটা নিরাপদ? কিন্তু দেশে তখন
নির্বিচার সংঘাত-সহিংসতা চলতে থাকায়
এ প্রশ্নটি আর বড় হয়ে ওঠেনি।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, মূলত একটি
অত্যন্ত প্রভাবশালী পশ্চিমা দেশ ছাড়া
ঢাকায় অন্য পশ্চিমা দেশগুলো দুই বিদেশি
হত্যাকে ছোট ছোট গোষ্ঠীর হামলা বলেই
মনে করছে। ওই দেশগুলোর ধারণা, দেশের
পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতেই এমনটি করা
হয়েছে।
সূত্র বলছে, 'ছোট ছোট গোষ্ঠী' বলতে
পশ্চিমা কূটনীতিকরা আসলে কাদের
বোঝাচ্ছেন তা স্পষ্ট নয়। তবে সরকারের
পক্ষ থেকে দুই বিদেশি হত্যার পেছনে
যুদ্ধাপরাধের রায় কার্যকর ঠেকাতে
বিএনপি-জামায়াতের তৎপরতা বলে যে
ইঙ্গিত করা হয়েছে পশ্চিমা কূটনীতিকদের
তা পছন্দ হয়নি। তাঁদের মতে, ওই দুই দল যদি
জড়িতও থাকে তবে হত্যাগুলোর তদন্তের সময়
এভাবে বলা ঠিক হয়নি। কারণ অভিযোগ সত্য
হলেও জনগণের একটি অংশের কাছে তা
রাজনৈতিক বক্তব্য বলে বিবেচিত হতে
পারে।
বিদেশিদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে পুলিশ :
ঢাকায় জাপান দূতাবাসের পক্ষ থেকে
বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের জানানো
হয়েছে যে নিরাপত্তা জোরদারে
বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া উদ্যোগের
অংশ হিসেবে বিদেশিদের বাড়ি বাড়ি
যাচ্ছে পুলিশ।
ঢাকায় জাপান দূতাবাসের মুখপাত্র
তাকেশি মাতসুনাঙ্গা গতকাল বৃহস্পতিবার
সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, জাপানিসহ
অন্য বিদেশিদের নিরাপত্তা জোরদারে
বাংলাদেশ সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে
তাতে তাঁরা কৃতজ্ঞ। তবে একটি অভিযোগ
এসেছে যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদারের
অংশ হিসেবে গভীর রাতে বিদেশিদের
বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন এবং পাসপোর্ট
চাচ্ছেন।
তিনি বলেন, 'গভীর রাতে বা খুব ভোরে
বাড়ি বাড়ি না গিয়ে অন্য উপযুক্ত সময়ে
যেতে এবং ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার জন্য
জাপানিদের পাসপোর্ট না নিতে আমরা
বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি।
কারণ দুই বিদেশি হত্যার পর জাপানিসহ
অন্য বিদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ
করছে।'
জানা গেছে, বিদেশিদের তথ্য সংগ্রহে
তাদের বাসায় যাওয়া আইন প্রয়োগকারী
সংস্থাগুলোর সদস্যদের 'নেম
ট্যাগ' (পোশাকের বুকে লেখা নামফলক) ও
পরিচয়পত্রের সঙ্গে সাদৃশ্য আছে কি না
তাও মিলিয়ে দেখার পরামর্শ দেওয়া
হয়েছে।
এদিকে নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো
জানিয়েছে, দেশে প্রায় ২১ হাজার
বিদেশি অবৈধভাবে অবস্থান করছে। সারা
দেশে বিদেশিদের নিরাপত্তা জোরদারের
পাশাপাশি অবৈধদের বিরুদ্ধে অভিযান
চলছে।
নিরাপত্তা জোরদারে নামানো হয় পুলিশের
বিশেষ টিম সোয়াত। বারিধারার কূটনৈতিক
এলাকা থেকে গতকাল দুপুরে তোলা ছবি।
ছবি : কালের কণ্ঠ
এক সপ্তাহে দুই বিদেশি হত্যার পর
বাংলাদেশে সম্ভাব্য জঙ্গি-চরমপন্থী
গোষ্ঠীগুলোর বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু
করেছে পশ্চিমা কূটনৈতিক মিশনগুলো।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র গতকাল বৃহস্পতিবার
কালের কণ্ঠকে জানায়, বাংলাদেশে
বর্তমানে জঙ্গি, উগ্রবাদী বা চরমপন্থী
গোষ্ঠী আছে কি না এবং থাকলে তারা
কারা, জনবল ও ক্ষমতা কেমন, তাদের কর্ম-
এলাকার বিস্তৃতি, বৈশ্বিক জঙ্গি-সন্ত্রাসী
গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ
আছে কি না, তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এবং সর্বোপরি তারা পশ্চিমা তথা
বিদেশিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কি না, সেসব
বিষয়ে তথ্য খোঁজা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে জঙ্গি
দমন নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর
পাশাপাশি এ বিষয়ে গবেষণা ও
লেখালেখি করা ব্যক্তিদের সঙ্গেও
যোগাযোগ করা হচ্ছে।
ওই সূত্র আরো জানায়, অতীতে এ দেশে
জামা'আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ
(জেএমবি) নামে একটি গোষ্ঠী তৎপর ছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তমনা ব্লগার হত্যার
দায় স্বীকার করা আনসারুল্লাহ বাংলা
টিমসহ নিষিদ্ধ হরকাতুল জিহাদ আল
ইসলামী, বাংলাদেশ (হুজি-বি), হিযবুত
তাহ্রীরসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর নাম শোনা
যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীও জঙ্গি গ্রেপ্তারে
সাফল্য দেখিয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে
ওই গোষ্ঠীগুলো সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য
জানার চেষ্টা চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পশ্চিমা
কূটনীতিক কালের কণ্ঠকে বলেন, সাম্প্রতিক
মাসগুলোতে বাংলাদেশে যে ধরনের সহিংস
উগ্রবাদ দেখা গেছে, তা নিয়ে তাঁরা
উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে ছয় মাসের মধ্যে
চারজন ব্লগারকে যেভাবে নিশানা করে
হত্যা মিশন নির্বিঘ্নে বাস্তবায়ন করা
হয়েছে, তা বিস্ময়কর।
তিনি বলেন, ওই হত্যাগুলোর কোনোটিরই
রহস্য বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
সন্দেহভাজন হিসেবে কয়েকজনকে
গ্রেপ্তার করার কথা তাঁরা শুনেছেন এবং
শেষ পর্যন্ত কী জানা গেছে, সে বিষয়ে
তাঁদের স্পষ্ট ধারণা নেই।
ওই কূটনীতিক বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে
ঢাকায় আমেরিকান-বাংলাদেশি ব্লগার
অভিজিৎ রায় হত্যার পর পশ্চিমা
কূটনীতিকদের নিজস্ব আলোচনায় প্রশ্ন
উঠেছে, ঘাতক চক্রের কাছ থেকে
বিদেশিরা কতটা নিরাপদ? কিন্তু দেশে তখন
নির্বিচার সংঘাত-সহিংসতা চলতে থাকায়
এ প্রশ্নটি আর বড় হয়ে ওঠেনি।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, মূলত একটি
অত্যন্ত প্রভাবশালী পশ্চিমা দেশ ছাড়া
ঢাকায় অন্য পশ্চিমা দেশগুলো দুই বিদেশি
হত্যাকে ছোট ছোট গোষ্ঠীর হামলা বলেই
মনে করছে। ওই দেশগুলোর ধারণা, দেশের
পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতেই এমনটি করা
হয়েছে।
সূত্র বলছে, 'ছোট ছোট গোষ্ঠী' বলতে
পশ্চিমা কূটনীতিকরা আসলে কাদের
বোঝাচ্ছেন তা স্পষ্ট নয়। তবে সরকারের
পক্ষ থেকে দুই বিদেশি হত্যার পেছনে
যুদ্ধাপরাধের রায় কার্যকর ঠেকাতে
বিএনপি-জামায়াতের তৎপরতা বলে যে
ইঙ্গিত করা হয়েছে পশ্চিমা কূটনীতিকদের
তা পছন্দ হয়নি। তাঁদের মতে, ওই দুই দল যদি
জড়িতও থাকে তবে হত্যাগুলোর তদন্তের সময়
এভাবে বলা ঠিক হয়নি। কারণ অভিযোগ সত্য
হলেও জনগণের একটি অংশের কাছে তা
রাজনৈতিক বক্তব্য বলে বিবেচিত হতে
পারে।
বিদেশিদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে পুলিশ :
ঢাকায় জাপান দূতাবাসের পক্ষ থেকে
বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের জানানো
হয়েছে যে নিরাপত্তা জোরদারে
বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া উদ্যোগের
অংশ হিসেবে বিদেশিদের বাড়ি বাড়ি
যাচ্ছে পুলিশ।
ঢাকায় জাপান দূতাবাসের মুখপাত্র
তাকেশি মাতসুনাঙ্গা গতকাল বৃহস্পতিবার
সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, জাপানিসহ
অন্য বিদেশিদের নিরাপত্তা জোরদারে
বাংলাদেশ সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে
তাতে তাঁরা কৃতজ্ঞ। তবে একটি অভিযোগ
এসেছে যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা জোরদারের
অংশ হিসেবে গভীর রাতে বিদেশিদের
বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন এবং পাসপোর্ট
চাচ্ছেন।
তিনি বলেন, 'গভীর রাতে বা খুব ভোরে
বাড়ি বাড়ি না গিয়ে অন্য উপযুক্ত সময়ে
যেতে এবং ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার জন্য
জাপানিদের পাসপোর্ট না নিতে আমরা
বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি।
কারণ দুই বিদেশি হত্যার পর জাপানিসহ
অন্য বিদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ
করছে।'
জানা গেছে, বিদেশিদের তথ্য সংগ্রহে
তাদের বাসায় যাওয়া আইন প্রয়োগকারী
সংস্থাগুলোর সদস্যদের 'নেম
ট্যাগ' (পোশাকের বুকে লেখা নামফলক) ও
পরিচয়পত্রের সঙ্গে সাদৃশ্য আছে কি না
তাও মিলিয়ে দেখার পরামর্শ দেওয়া
হয়েছে।
এদিকে নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো
জানিয়েছে, দেশে প্রায় ২১ হাজার
বিদেশি অবৈধভাবে অবস্থান করছে। সারা
দেশে বিদেশিদের নিরাপত্তা জোরদারের
পাশাপাশি অবৈধদের বিরুদ্ধে অভিযান
চলছে।