লস এঞ্জেলেস

বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশিরা


বাঙালি, বাংলাদেশি মানেই যেন প্রতিবাদী। অধিকার লড়াই বা আন্দোলন সংগ্রামে বাঙ্গালির অংশগ্রহণ যেন চিরায়ত। সেটা হোক দেশ কিংবা বিদেশ। অধিকারের প্রশ্নে বাঙালি বাংলাদেশি সবসময় সোচ্চার। আর এই বিষয়টির আবারো প্রমাণ দিল বাংলাদেশিরা। মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক আফ্রিকান-আমেরিকানকে গত ২৫ মে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে নির্যাতন করেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক চাওভিন। এতে সাবেক বাস্কেটবল খেলোয়াড় ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। এক প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ১০ মিনিটের ভিডিও ফুটেজে চাওভিন ফেঁসে যান। সেখানে দেখা যায়, গলায় হাঁটু চেপে ধরায় ফ্লয়েড নিশ্বাস না নিতে পেরে কাতরাচ্ছেন এবং বারবার চাওভিনকে বলছেন, ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না।’ ভিডিওটি ভাইরাল হলে চাওভিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। মিনেসোটা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো আমেরিকায়। 


পুলিশ হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে আমেরিকার মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট শহরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ টানা ষষ্ঠ দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে। রাতে আটটার পর কারফিউ ভেঙে হাজারো বিক্ষোভকারী ডেট্রয়েট ডাউন টাউনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। আর কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ের সেই বিক্ষোভে বাংলাদেশিদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে। বিদেশ বিভূঁইয়ে অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এমন অংশগ্রহণ সত্যিকার অর্থেই গর্বের বিষয়।

ডেট্রয়েটে রাত ৮টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ ছিল। কারফিউ ভেঙে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে ডেট্রয়েট ডাউন টাউনের জেফারসন অ্যাভিনিউয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মিছিল করেন। এ সময় মিছিলের সামনে ও পেছনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ছিল। একাধিক হেলিকপ্টার ওপর থেকে মিছিলে নজর রাখছিল।

বিকেল থেকেই প্রতিবাদকারীরা ডাউন টাউনে সমবেত হন। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কেউ কেউ পানির বোতল, আইস, জুস ও বিস্কুট দিয়ে সাহায্য করেছেন। ডেট্রয়েট পুলিশপ্রধান জেমস ক্রেগ সাংবাদিকেদের বলেন, প্রতিবাদ মিছিলটি শান্তিপূর্ণ, তাই বাধা দেওয়া হবে না।

তবে কারফিউ ভেঙে মিছিল, বিক্ষোভ করতে পারাটা প্রতিবাদকারীরা তাঁদের বিজয় বলে উল্লেখ করেছেন। কারফিউ চলাকালে আড়াই ঘণ্টা প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, মিছিল করে রাতের দিকে মিছিলটি ডেট্রয়েট পুলিশ হেড কোয়ার্টারের কাছে একটি পার্কিং লটে ফিরে আসে। সেখানে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করে কেউ কেউ একে অপরের সঙ্গে আলিঙ্গন করেন এবং বিজয়সূচক আঙুল প্রদর্শন করে আবার বিক্ষোভে আসার কথা জানিয়ে চলে যান।

এলএ বাংলা টাইমস/এমবি