লস এঞ্জেলেস

সিমি ভ্যালিতে জুয়েলারি দোকানে ডাকাতি, ২০ লাখ ডলারের নগদ ও গয়না লুট

ক্যালিফোর্নিয়ার সিমি ভ্যালির একটি পারিবারিক মালিকানাধীন জুয়েলারি দোকানে চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরেরা দোকানের নিরাপদ ভেঙে প্রায় ২০ লাখ ডলারের নগদ অর্থ ও মূল্যবান গয়না নিয়ে পালিয়ে গেছে। ডাকাতরা পাশের একটি ক্যান্ডি শপের ছাদে গর্ত করে জুয়েলারি দোকানে প্রবেশ করে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির মালিকরা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, তারা যখন দোকানে এসে পৌঁছান, তখন প্রথমে কিছুই অস্বাভাবিক মনে হয়নি। কিন্তু সেফটি বক্স খুলতেই তারা দেখেন ভিতরে বিশাল গর্ত—যার মধ্য দিয়ে চোরেরা পাশের দোকান থেকে প্রবেশ করেছে। নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, এক ডাকাত পাশের ক্যান্ডি শপে রীতিমতো হামাগুড়ি দিয়ে ঢুকছে এবং সেখান থেকে ৫ স্টার জুয়েলারি অ্যান্ড ওয়াচ রিপেয়ার নামের দোকানের দেয়াল কেটে ভিতরে প্রবেশ করছে। পুরো ঘটনা ঘটেছে রবিবার মধ্যরাতের ঠিক আগে। তারা কংক্রিট এবং আট ইঞ্চি পুরু সেফ কাটার পরেই গয়না ও নগদ অর্থ হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়। এই ডাকাতির ফলে শুধু দোকানের মালিকদের নয়, তাদের অনেক কাস্টমারের মূল্যবান হস্তান্তরযোগ্য গয়নাও চুরি গেছে, যেগুলো মেরামতের জন্য জমা রাখা হয়েছিল। দোকানের বর্তমান মালিক জোনাথন ইউসুফ জানান, তার বাবা জ্যাকব ইউসুফ অবসর নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, আর এই চুরির ঘটনাটি তাদের জীবনের গতিপথই পাল্টে দিয়েছে। তিনি বলেন, “বাবা যা কিছু আমার ও আমাদের পরিবারের জন্য গড়ে তুলেছিলেন, সব শেষ। তার অবসর গেল, আমার ভবিষ্যৎ গেল, এখন আমাদের সবকিছু আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।” তবে সবচেয়ে বড় ক্ষতি যেটি তিনি উল্লেখ করেন, তা হলো—কাস্টমারদের পারিবারিক ঐতিহ্যের গয়না চুরি যাওয়া, যেগুলোর কোনো বিকল্প নেই। এমন কঠিন সময়েও জোনাথন বলেন, সম্প্রদায়ের সহানুভূতি ও সমর্থন তাদের মনোবল ফিরিয়ে দিচ্ছে। “আমরা যখন ভাবি আর কিচ্ছু বাকি নেই, তখনই কেউ এসে দয়া করে, কিছু আশাবাদী কথা বলে। এটা আমাদের কাছে অমূল্য।” চোরেরা ক্যান্ডি শপ ডক্টর কনকির সেফ থেকেও নগদ অর্থ চুরি করে, এরপর জুয়েলারি দোকানে ঢুকে পড়ে। বিস্ময়করভাবে, পুরো তিন ঘণ্টা চুরির পরেও দোকানের কোনো অ্যালার্ম চালু হয়নি। উভয় ব্যবসার মালিকরাই এই চুরিকে “পেশাদার এবং পূর্বপরিকল্পিত” বলে উল্লেখ করেছেন। ডক্টর কনকির ক্যান্ডি ও কফির মালিক টেড ম্যাকরেল বলেন, “আমরা সবাই জ্যাকবের ক্ষতির জন্য দুঃখিত। এখন আমাদের মনে শুধু একটাই প্রশ্ন—কে পরবর্তী? কার জীবিকা হুমকিতে পড়বে? এই চোরদের কোনো অনুভূতি নেই।” সিমি ভ্যালি পুলিশ এখনো এই ডাকাতি সংক্রান্ত কোনো সন্দেহভাজন বা গ্রেফতারের তথ্য প্রকাশ করেনি।

এলএবাংলাটাইমস/ওএম