নিউইয়র্ক

বিচারপতি গিন্সবার্গের মৃত্যু: পাল্টে যেতে পারে নির্বাচনী সমীকরণ

মারা গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে প্রবীণ বিচারপতি ও নারী অধিকার আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব রুথ বডার গিন্সবার্গ। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে ৮৭ বছর বয়সে মারা যান তিনি। 

আর রুথ বডার গিন্সবার্গের মৃত্যুর পরেই আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সমীকরণ কিছুটা পাল্টে গেলো। আসন্ন নির্বাচনের আগে কে গিন্সবার্গের স্থলাভিষিক্ত হবেন- এটি নিয়ে ডেমোক্র‍্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে শুরু হয়েছে স্নায়ুযুদ্ধ। 

এর কারণ হচ্ছে, যুক্তরাষ্টের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে পাঁচজন ছিলেন ডেমোক্র‍্যাট মনোনীত ও চারজন ছিলো রিপাবলিকান মনোনীত। এরমধ্যে গিন্সবার্গ ডেমোক্র‍্যাট ঘেঁষা বিচারপতিদের মধ্যে বেশ প্রভাবশালী ছিলেন। ফলে গিন্সবার্গের শূণ্যস্থানটি দখল করতে উঠেপড়ে লেগেছে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র‍্যাট। 

ডেমোক্র‍্যাট মনোনীত প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন বলছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শেষ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে নতুন বিচারপতির মনোনয়ন দিতে হবে। অপরদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যে রিপাবলিকান ঘেঁষা বিচারপতিদের মনোনয়নের তালিকা প্রকাশ করে ফেলেছেন। আর সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা রিপাবলিকান মিচ ম্যাককনেল বলেছেন, প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের পক্ষে নির্বাচনের আগেই সিনেটে বিচারপতি নিয়োগের ভোট করা সম্ভব। 

গিন্সবার্গের মৃত্যুর পরই জো বাইডেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নির্বাচনের পরই শুধুমাত্র নতুন বিচারপতি মনোনয়ন করা হবে। এর আগে কোনোভাবেই বিচারপতি মনোনয়ন মেনে নেওয়া হবে না। 

জো বাইডেনের সাথে সুর মিলিয়েছেন সাবেক ডেমোক্র‍্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি বলেন, ওবামা প্রশাসনের সময়ও বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে বাঁধা প্রদান করেছিলো রিপাবলিকানরা। পরবর্তীতে তাদের দাবি মেনে নিয়ে নির্বাচনের পরই বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো। এবার ট্রাম্প প্রশাসনেরও একই নীতি অনুসরণ করা উচিত। 

এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতোমধ্যে বিচারপতি নিয়োগের জন্য মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছেন। এখন সেটি সিনেটে ভোট হওয়ার অপেক্ষা। সিনেটররা যদি মনোনয়ন এর পর ভোট দিতে রাজি হয়, তবে ট্রাম্পের পছন্দের বিচারপতিই নিয়োগ পাবে। এর কারণ সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। ফলে ডেমোক্র‍্যাটদের ভোটে হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

তবে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, নতুন বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে গিন্সবার্গের মতো উদার ও ন্যায়পরায়ণ কাউকে বেছে নিতে হবে। 

যদি নির্বাচনের আগেই নতুন বিচারপতি নিয়োগ হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের গত ৫০ বছরের মধ্যে এই প্রথম মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। ফলে আদর্শিকভাবে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে রিপাবলিকানদের প্রাধান্য চলে আসবে। 

সব মিলিয়ে নির্বাচনের ছয় সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টি নির্বাচনের সমীকরণ পাল্টে দিয়েছে। 


এলএবাংলাটাইমস/ওএম