নিউইয়র্ক

নিউ ইয়র্কে এশীয় বংশোদ্ভূতদের ওপর হামলা বাড়ছেই

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে এশীয় বংশোদ্ভূতদের ওপর হামলা বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ৩৬ বছর বয়সি এশীয় বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন এশীয় কমিউনিটির পক্ষে কাজ করা ব্যক্তিবর্গ।

গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাসিও জানান, শহরের ঘৃণাসূচক অপরাধ রোধের অফিস ও অন্যান্য সংস্থা সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর বিষয়ে আলোচনা করতে এশীয় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করছেন।

নিউ ইয়র্কে একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে, যেখানে ঘৃণাসূচক অপরাধ সম্পর্কে অভিযোগ জানানো যাবে। ওয়েবসাইটটি ‘এশীয়দের ঘৃণা করা বন্ধ করো’ নামে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণাও চালাচ্ছে।

নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (এনওয়াইপিডি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নিউ ইয়র্কে জাতিগতভাবে অনুপ্রাণিত অপরাধের ঘটনা ঘটেছে ২৯টি। এর মধ্যে ২৪টি ছিল করোনা ভাইরাস-সংক্রান্ত কারণে উদ্ভূত ঘৃণাসূচক অপরাধ। ২০১৯ সালে শহরটিতে জাতিগতভাবে অনুপ্রাণিত অপরাধের সংখ্যা ছিল তিন।


এশীয়-আমেরিকান ও এশীয় বংশোদ্ভূতদের ওপর হামলা শুধু নিউইয়র্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো বে এরিয়াসহ বেশ কিছু শহরে এশীয়-আমেরিকানদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ গত সেপ্টেম্বরে এশীয়বিদ্বেষীদের উদ্দেশে একটি নিন্দা প্রস্তাব পাশ করে।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি নিউ য়র্কের কুইন্সে ৫২ বছর বয়সি এক এশীয় নারীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ঐ নারী মুখমণ্ডলে আঘাত পান এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ঘটনাটির ভিডিও ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪৭ বছর বয়সি এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘৃণাসূচক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি। এনওয়াইপিডি জানিয়েছে, সামাজিক দূরত্বসংক্রান্ত কারণে এই বিবাদের ঘটনা ঘটেছে।

এশীয়-আমেরিকানদের ওপর হামলার ঘটনায় এশীয় কমিউনিটি থেকে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেকেই। কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং বলেন, ‘মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে আমাদের এশীয়-আমেরিকান কমিউনিটি দুটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে আমাদের সদস্য ও ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোকে এশীয়দের প্রতি বিদ্বেষের মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেখেছি।’এনওয়াইপিডির উপপরিদর্শক ও এনওয়াইপিডি এশিয়ান হেইট ক্রাইম টাস্কফোর্সের প্রধান স্টুয়ার্ট লু জানান, পুলিশ ইতিমধ্যে অন্তত চারটি ঘৃণাসূচক অপরাধ তদন্ত করেছে। তিনি বলেন, ‘এটি নতুন কোনো সমস্যা নয়। আরো অনেক বছর আগেই এগুলো নিয়ে অভিযোগ জানানো উচিত ছিল।’   এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/এনওয়াই