ধর্ম

পবিত্র শবে মেরাজ

আজ সোমবার (২৬ রজব ১৪৪৩ হিজরি) দিবাগত রাতে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র শবে মেরাজ পালন করবেন।

আজ দিন পেরিয়ে আঁধার নামলেই আবির্ভাব ঘটবে এক অলৌকিক অসামান্য মহাপুণ্যে ঘেরা রজনির। এ রজনি মহাপবিত্র মহিমান্বিত লাইলাতুল মেরাজের।

পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিসের বর্ণনায় মেরাজের ঘটনাটি বিশ্বাস করা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের কর্তব্য।

এ মহিমান্বিত রাতে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত জিব্রাঈল আলাহিস্সালামের সঙ্গে পবিত্র কাবা হতে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের ওপর সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে ৭০ হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা শবে মেরাজ। প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সব চেয়ে বড় মোজেজা এটি। ইসলামের ইতিহাসে এমনকি পুরো নবুয়তের ইতিহাসেও এটি এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। কারণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও রাসূল হজরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্য কোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভ করতে পারেননি। আর এ কারণেই হজরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বশ্রেষ্ঠ নবী।

উল্লেখ্য, মেরাজ রজনিতেই মানবজাতির শ্রেষ্ঠ ইবাদত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। আল্লাহপাকের দিদার শেষে রাসূল (সা.) পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সবকিছুর অপার রহস্য। মেরাজ শব্দটি আরবি, এর অর্থ ঊর্ধারোহণ। মেরাজের বড়দাগে অর্থ দাঁড়ায় সপ্তম আসমান, সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত জাহান্নাম পরিদর্শন ও আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য পর্যন্ত ভ্রমণ। এ ছিল আল্লাহ তায়ালার মহান কুদরত, অলৌকিক নিদর্শন, নবুয়তের সত্যতার স্বপক্ষে এক বিরাট আলামত। জ্ঞানীদের জন্য উপদেশ, মু’মিনদের জন্য প্রমাণ হেদায়েত নেয়ামত, রহমত, মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে হাজির হওয়া ও ঊর্ধ্বলোক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন।

শবে মেরাজ মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। হিজরির নবম মাসের ২৬ তারিখে মেরাজ অনুষ্ঠিত হয়। ইসলাম ধর্মে লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রাত, যাকে সাধারণত শবে মেরাজ বলা হয়। সেই রাতে ইসলামের নবি মুহাম্মদ (সা.) ঐশী পথে আরোহণ করেছিলেন। সেই রাতেই তিনি সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে দেখা করেন। ইবাদত বন্দেগির মধ্য দিয়ে মুসলমানরা এই মেরাজ রাত উদযাপন করে। এই রাতে আল্লাহ তার প্রিয় নবী মুহাম্মদকে অনেক কিছু দেখিয়েছেন। যেখানে সাধারণ জ্ঞানের বাইরে অনেক ঐশ্বরিক তথ্য ও ইতিহাস রয়েছে।

মহান আল্লাহ এত বড় এই ঘটনা দ্বারা বুঝাতে যা তাঁর বান্দাদেরকে বুঝাতে চেয়েছেন তার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। শবে মেরাজ মুসলমানদের বড় ও পবিত্র পালনীয় আচার অনুষ্ঠানগুলোর একটি। লাইলাতুল মিরাজ বা পবিত্র এই রজনীর ঘটনা হাজারো সহিহ হাদিসের পাশাপাশি আসমানী কিতাব আল কোরআনে উল্লেখ রয়েছে।

আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘অতঃপর তিনি নিকটে এসেছেন এবং অতীব নিকটবর্তী হয়েছেন। এমনকি দুই ধনুকের মতো নিকটবর্তী হয়েছেন, এমনকি আরো অধিকতর নিকটবর্তী হয়েছেন।’ (সূরা: নজম, আয়াত: ৮ ও ৯)।
  এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/আর

[এলএ বাংলাটাইমসের সব নিউজ আরও সহজভাবে পেতে ‘প্লে-স্টোর’ অথবা ‘আই স্টোর’ থেকে ডাউনলোড করুন আমাদের মোবাইল এপ।]