খেলাধুলা

আইসিসি প্রেসিডেন্ট মামলা করতে পারেন

আইসিসি প্রেসিডেন্ট আ হ ম মুস্তফা কামালের
চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলেনা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আরো উত্তেজনার জন্মদিতে পারে বলে মন্তব্য করেছে ভারতেরআনন্দবাজার পত্রিকা।এমন কি ভারতের যে আগামী জুনে বাংলাদেশসফরের কথা, দুই দেশের ক্রিকেট প্রশাসনিকসম্পর্কের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই সফরেরসফলতা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করে আনন্দবাজারপত্রিকা।শ্রীনিবাসনের কারণেই যে এটি হয়েছে তাআনন্দবাজারের প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়েছেআনন্দবাজার প্রতিবেদনে বলা হয়, আইসিসি-রসমস্ত অভ্যাগত, বিশেষ অতিথি সবাই বসলেনএমসিজি মাঠের তিন নম্বর গেটের চার তলায়।ওখানে আইসিসি-র ভিভিআইপি বক্স। আর তিনিআইসিসি প্রেসিডেন্ট কিনা বসলেন ছয় নম্বর গেটেএকা একটা বক্সে। তার পর সরে এলেন আইসিসিবক্সের নীচের গ্যালারিতে। ওখানে বসেইদেখলেন পুরস্কার বিতরণ শুরু হচ্ছে।নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন বিশ্বজয়ী অধিনায়কমাইকেল ক্লার্কের হাতে ওয়ার্ল্ড কাপ তুলেদেওয়ার সময় পর্যন্ত তিনি অবশ্য আর অপেক্ষাকরেননি। অপমানে আগেই বেরিয়ে যান। জানা হলোনা গোটা এমসিজি যখন শ্রীনিবাসনের নাম ঘোষণাহতেই বিদ্রুপে ফেটে পড়ল, তখন তিনি আইসিসিপ্রেসিডেন্ট কোথায় ছিলেন?বাংলাদেশ ক্রিকেটমহল তাদের দেশের আইসিসিপ্রেসিডেন্টকে পুরস্কার বিতরণ থেকে কার্যতসাসপেন্ড করায় অত্যন্ত উত্তেজিত। কারণ আইসিসি-র গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিশ্বকাপ তুলে দেওয়ার কথাকামালের। আইসিসি প্রেসিডেন্টের।“এটা ওরা করতে পারে না। কতগুলো বাজে লোক জুটেএটা করল যা সম্পূর্ণ আইনবিরুদ্ধ,” রোববার একলাবসে বললেন কামাল। “এদের সঙ্গে কী করে একবক্সে বসব, তাই আলাদা বসে রয়েছি,” বললেনতিনি। শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারঅনুমতি পেলে এ নিয়ে আইসিসির কাছে বাংলাদেশসরকারও অভিযোগ জানাতে পারে। চূড়ান্ত ছবিটাবোঝা যাবে সোমবার যে, কোথাকার জল কোথায়গড়ায়।বিশ্বকাপ দেওয়া নিয়ে সমস্যার উদ্ভব হয়েছে।কিন্তু বোঝা যায়নি সেটা এই পর্যায়ে নামতেপারে। জানা গেল শনিবার রাত্রে আইসিসি-র জনাকয়েক সদস্যকে নিয়ে বেসরকারি বৈঠক করেনশ্রীনিবাসন। সেখানেই বলে দেন কামালকে যে,আইসিসি-র কোড অব কন্ডাক্ট ভাঙার অভিযোগেআপনাকে আমরা ট্রফিটা দিতে দেব না।কামাল অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন, মিস্টারশ্রীনিবাসন, আজকের দিনে আইসিসি প্রেসিডেন্টকে? শ্রীনি বলেন, আপনি। কালকে আইসিসিপ্রেসিডেন্ট কে থাকবে? শ্রীনি বলেন আপনি।তাই যদি হয় তা হলে আমি বিশ্বকাপ তুলে দেব নাকেন? শ্রীনি তখন বলেন, উত্তরটা আপনাকে আগেইদেওয়া আছে।এই সময় নাকি তীব্র বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়।শ্রীনি এই বিতর্ক নিয়ে এবিপিতে কোনওপ্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি। বলেন, “এটাথাক। বাংলাদেশ ম্যাচে কী হয়েছিল আপনারাসবাই খেলা দেখেছেন। আমি এর মধ্যে ঢুকব না।”শোনা যাচ্ছে, মুস্তফা কামাল মোটেও সহজে হারমানেননি। তর্কাতর্কির মধ্যে আইসিসিপ্রেসিডেন্ট রীতিমতো আইসিসি চেয়ারম্যানকেশাসান। “আপনি এমন কোনো বেআইনি সিদ্ধান্তনিতে পারেন না। তা হলে আইসিসি-র গঠনতন্ত্রবদলাতে হবে।” শ্রীনি তাতেও প্রভাবিত নন দেখেতাকে বলা হয়, “এতে কিন্তু আগুন জ্বলে যাবে।আপনি বুঝতে পারছেন না কী করতে যাচ্ছেন!”কিছু পরে বাংলাদেশ বোর্ড প্রেসিডেন্টও শ্রীনিরসঙ্গে দেখা করে তাদের তীব্র আপত্তির কথাজানান। বাংলাদেশের তরফে বলা হয় আইসিসি-কেআড়ালে আবডালে বলা হয় ইন্ডিয়ান ক্রিকেটকাউন্সিল। আজকের পর থেকে তো আরওই বলবে।শ্রীনি তাতেও কর্ণপাত করেননি। তার সঙ্গেআইসিসি-র অন্য কর্তারাও না। ভারত-বাংলাদেশম্যাচের পর আইসিসি প্রধানের আম্পায়ারিং নিয়েতীব্র কটূক্তি ডেভ রিচার্ডসন-সহ আইসিসি কর্তারাকেউ ভুলতে পারছেন না। তারা মনে করেন, এর ফলেপ্রতিষ্ঠানের পরিষ্কার অবমাননা হয়েছে।আইসিসি প্রেসিডেন্টের পাল্টা বক্তব্য, কেন তিনিকী বলেছেন তা তো আগে তাকে জবাবদিহি করে তারবক্তব্য শুনতে হবে। এক্সিকিউটিভ বোর্ড তারবক্তব্য খতিয়ে বিচার করে গঠনতন্ত্র বদলাবে,তবে তো তাকে সরানোর প্রশ্ন। রাতে দেখা হতেবললেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথাবলব। ঢাকা ফিরে আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথাবলব, তার পর দেখছি।” শোনা গেল প্রয়োজনেআইসিসি-র বিরুদ্ধে তিনি মামলা করতে পারেন।কিন্তু এত অপমানিত যখন, মাঠে এলেন কেন?বাংলাদেশ ক্রিকেট মহলের এক প্রভাবশালীব্যক্তি বললেন, “আসাটা আইনজীবীর পরামর্শে যে,আমি তখন সশরীরে মাঠে অথচ আমাকে প্রাইজ দিতেডাকেনি।” বাংলাদেশে ইতিমধ্যে খবর ছড়িয়েপড়েছে যে তাদের লোককে গা-জোয়ারি করে ভারতআন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে সরিয়ে রাখছে। এতেক্রিকেট মহলের ভারত-বিরোধী অসন্তোষ আরওবাড়ার কথা।মুস্তফা কামালের আম্পায়ারিং নিয়ে মন্তব্য করাঅত্যন্ত অসমীচীন হয়েছে এটা যারা মনে করেনতাদেরও বক্তব্য, আইসিসি কেন তা হলে ওনাকে শোকজ করল না? বেসরকারি বৈঠক করে এভাবে বাদদেওয়াটা তো বেআইনি? সেই দাদাগিরি ভারতকরবে কেন? আর তাদের করতে দেওয়াই বা হবেকেন?বিশ্বকাপ ফাইনাল যেমন একতরফা হলো, এইম্যাচটা তত সহজে নিষ্পত্তি হবে বলে মনে হয় না।ভারতের বাংলাদেশ সফর করার কথা আগামী জুনে।কিন্তু দু’দেশের ক্রিকেট প্রশাসনিক সম্পর্ক যেমনতিক্ততার স্তরে পৌঁছেছে, তাতে সফরটা হবে কি নাএই মুহূর্তে ঘোরতর অনিশ্চিত।এদিকে বাংলাদেশী সমর্থকরা শ্রীনিবাসন কে বেয়াদব ও বদমাশ প্রকৃতির লোক বলে অভিহিত করছে ।