ব্লাটারের জন্য ক্ষণগণনা চলছিল, কবে পতন হবে ক্ষমতার
দুর্গের। কাল জুরিখে ফিফার এথিকস
ট্রাইব্যুনাল রায়ে শেষ হয়েছে ক্ষণগণনা।
১৭ বছরের ফুটবল সাম্রাজ্য থেকে
মুহূর্তেই নিষিদ্ধ হয়েছেন সেপ ব্ল্যাটার।
তাঁর একদার সহচর ইউরোপিয়ান ফুটবল
অ্যাসোসিয়েশনের (উয়েফা) সভাপতি
মিশেল প্লাতিনিও নিষিদ্ধ হয়েছেন সমান আট
বছরের জন্য। স্বভাবতই এ রায়কে অবিচারই
মনে করছেন ফিফা এবং উয়েফার দুই
সাবেক সভাপতি, বলা ভালো প্রায় দেড় যুগ
ফুটবলবিশ্বকে শাসন করা দুই দোর্দণ্ড
প্রতাপশালী প্রশাসক।
৭৯ বছর বয়সী ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে
অভিযোগের অন্ত নেই। সম্প্রতি
শত্রুশিবিরে যোগ দিলেও এ সুইস ফুটবল
প্রশাসকের ছত্রছায়াতেই উয়েফার
শীর্ষাসনে বসেছিলেন সাবেক ফরাসি
তারকা প্লাতিনি। মাঝখানে কিছু অদল-বদল
হলেও তাঁদের পরিণতি একই, নিষিদ্ধ
হয়েছেন একই মেয়াদে। সঙ্গে অর্পিত
অর্থ দণ্ডে অবশ্য সামান্য অমিল রয়েছে।
কৃতকর্মের জন্য নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে
বাড়তি ৫০ হাজার ডলার অর্থদণ্ড গুনতে হবে
ব্ল্যাটারকে, ৬০ বছর বয়সী প্লাতিনির
বেলায় যা ৮০ হাজার।
নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কাটিয়ে শুদ্ধ হয়ে
ফিরতে ফিরতে ব্ল্যাটারের বয়স গিয়ে
ঠেকবে ৭৫-এ। ৬০ বছরের প্লাতিনি সে
তুলনায় সবলই থাকবেন, তবে যে অপরাধে
শাস্তি পেয়েছেন তাতে ব্ল্যাটারের
মতো তাঁর ফুটবল প্রশাসক ক্যারিয়ারও
গতকালই থেমে গেছে বলে মনে
করছেন সবাই। অবশ্য ফিফার আদালতের
দেওয়া রায় নীরবে মেনে নিচ্ছেন না
ব্ল্যাটার। বিচারকদের দ্বারা ‘প্রতারিত’ হওয়ার
অভিযোগ নিয়ে তিনি নাকি যাবেন জুরিখেই
অবস্থিত কোর্ট অব আরবিট্রেশনে।
সেখানে সুফল না পেলে
সুইজারল্যান্ডের সাধারণ আদালতে যাওয়ার
প্রস্তুতিও নিজের আইনজীবীদের
নিতে বলেছেন ব্ল্যাটার। ভবিষ্যৎ
পরিকল্পনা নিয়ে অবশ্য জানাননি প্লাতিনি।
উল্টো রায়ের আগেই বিচারকরা ‘দোষী
সাব্যস্ত করেছেন’ অভিযোগ তুলে
আদালত ছেড়েই বেরিয়ে যান তিনি।
তবে পুরোটা সময় আদালতেই
কাটিয়েছেন ব্ল্যাটার, সে সময়টা প্রায় আট
ঘণ্টা। তাঁর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ পরামর্শক
হিসেবে প্লাতিনিকে ফিফার তহবিল থেকে
২০ লাখ ডলার পারিশ্রমিক দেওয়াটা। উল্লিখিত
পরিমাণ অর্থ ছাড় হয়েছিল ২০১১ সালে, যদিও
প্লাতিনি পরামর্শকের কাজটা নাকি
করেছিলেন ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল
মেয়াদে। উপরন্তু প্লাতিনির সঙ্গে
ব্ল্যাটারের চুক্তিটা ছিল স্রেফ মৌখিক। মৌখিক
চুক্তিতে এ পরিমাণ অর্থ ছাড় করানোর বৈধতা
যেমন প্রশ্নবিদ্ধ তেমনি পারিশ্রমিক কেন
এত দিন পর দেওয়া হলো, তার উত্তরও
খুঁজেছেন আদালত। কিন্তু সেসবের
কোনোটিরই যে সঠিক উত্তর দিতে
পারেননি ব্ল্যাটার কিংবা প্লাতিনি, তা পরিষ্কার
আদালতের রায়েই, ‘ব্ল্যাটার এবং প্লাতিনি
নিজেদের ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার
করেছেন। ওই লেনদেনের পক্ষে
ব্ল্যাটার লিখিত কিংবা মৌখিকভাবে আইনসংগত
কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। স্রেফ
মৌখিক চুক্তির শর্ত মেনে করা ওই
লেনদেনের বিষয়টি তাই গ্রহণ করা হয়নি। মি.
ব্ল্যাটারের এ কাজটি নৈতিকতা বিরোধী,
বেআইনি এবং ফিফা প্রদত্ত ক্ষমতার বাইরে
গিয়ে করা।’ একই রায়ে আদালত বিঁধেছেন
প্লাতিনিকেও, ‘পূর্ণ মর্যাদা ও নৈতিকতার
সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ
হয়েছেন মি. প্লাতিনি। নিজের কাজ,
একাগ্রতা এবং দায়িত্ববোধ সম্পর্কে
মোটেও সচেতন ছিলেন না। যে কাজটি
তিনি করেছেন, সেটি ফিফার সহসভাপতি
পদমর্যাদার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’ সাংঘর্ষিক তো
বটেই, ফিফার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য
হয়ে কী করে সংস্থার কাছ থেকে
পরামর্শকের পারিশ্রমিক নেন প্লাতিনি!
এ আসলে ভবিতব্যই ছিল। ২০১১ সালের ওই
লেনদেনকে কেন্দ্র করে
অক্টোবরেই এ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা
হয়েছিল সুইজারল্যান্ডের একটি আদালতে,
যে ফৌজদারি মামলার প্রধান আসামি ব্ল্যাটার এবং
একাধারে সন্দেহভাজন ও সাক্ষী প্লাতিনি।
গুঞ্জন আছে ওই লেনদেনের
পেছনে কাজ করেছে ফিফা সভাপতি
নির্বাচন। সেসময় চতুর্থ মেয়াদে ফিফা
সভাপতি পদে নির্বাচনে নামা ব্ল্যাটারের কাছ
থেকে প্লাতিনির আনুকূল্য পাওয়াটাকে মনে
করা হচ্ছে ভোট রাজনীতির অংশ।
অবশ্য ওই লেনদেন ছাড়াও এন্তার
দুর্নীতির অভিযোগ আছে বিশ্ব ফুটবল
সংস্থার শীর্ষ প্রশাসকদের বিরুদ্ধে।
যেমন ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজক
নির্বাচনকে ঘিরে ভোট কেনাবেচার
অভিযোগ রয়েছে। জার্মানির ২০০৬
বিশ্বকাপ আয়োজক হওয়াটাও বিতর্কমুক্ত
নয়। তার ওপর টিভি সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রিতে
দুর্নীতি করে প্রায় ২০ কোটি ডলার
ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন ফিফার
কার্যনির্বাহী কমিটির অনেক সদস্য। এ
অভিযোগে এরই মধ্যে গ্রেপ্তারও
হয়েছেন ফিফার সাত কর্মকর্তা। ফুটবল
দুর্নীতির এসব কেচ্ছাকাহিনী সবচেয়ে
ক্ষমতাধর প্রশাসক ব্ল্যাটার-প্লাতিনির
অজ্ঞাতে হয়েছে—এ মতের পক্ষে
কেউ নেই।
তবে ব্ল্যাটার রায় ঘোষণার পরও
বলেছেন, ‘সমস্ত দায় আমার ওপর চাপিয়ে
দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। আর যা সত্য নয়,
তা প্রমাণ করাও সম্ভব নয়।’ এ রায় বদলাতে
আইনি পথে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে
জানিয়েছেন তিনি।
দুর্ভাগ্য তাঁর, সেসবে কান না দিয়ে ফুটবল
বিশ্ব খুঁজতে শুরু করেছে ফিফার সম্ভাব্য
নতুন সভাপতিকে। ২৬ জানুয়ারির নির্বাচনে
জিতে ফিফার মসনদে এঁদের কোনো
একজনই হয়তো বসবেন—এশিয়ার ফুটবল
প্রধান বাহরাইনের শেখ সালমান বিন ইব্রাহিম
আল-খলিফা, দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনীতিক
টোকিও সেক্সওয়েল, ফিফার সাবেক
সহসভাপতি জর্দানের প্রিন্স আলী বিন আল
হুসেইন, উয়েফার সাবেক সেক্রেটারি
জিয়ান্নি ইনফান্তিনো অথবা ফিফার সাবেক
সহকারী সচিব জেরোম শ্যাম্পেন।
এএফপি
আপিল করবেন তাঁরা
গতকাল ফিফার আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে
আপিলের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন
আট বছরের জন্য ফুটবলে নিষিদ্ধ ফিফার
সাবেক সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার। বিচারকদের
দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন, সব অভিযোগ
ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা বলে দাবি তাঁর।
রায়ের পরপরই সংবাদ সম্মেলন করে সেপ
ব্ল্যাটার জানিয়েছেন, ‘এ রায়ে আমি বিস্মিত।
আপনারা যদি জিজ্ঞাসা করেন আমি নিজেকে
প্রতারিত মনে করছি কি না, তাহলে উত্তর
দেব হ্যাঁ।’ ইংরেজিতে দেওয়া আরেকটি
প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘তথ্য-
প্রমাণের ধার ধারেনি এথিকস কমিটি এবং তারা
সব সময় চেষ্টা করে গেছে একটা
মিথ্যাকে সত্য প্রমাণের জন্য। কিন্তু কে
না জানে যে, একটা মিথ্যাকে কখনোই
সত্যি প্রমাণ করা যায় না।’
নিজের এ দুর্দিনে যে ফিফারও মানহানি
হয়েছে, তা অনুধাবন করতে পারছেন
ব্ল্যাটার, ‘ফিফার জন্য আমি দুঃখিত।’ সবশেষে
নিজের পরবর্তী পদক্ষেপও
জানিয়েছেন তিনি, ‘ফিফা সভাপতি বলেই কিনা
আমাকে একযোগে আক্রমণ করা
হয়েছে। তবে আমি দমে যাব না। কোর্ট
অব আরবিট্রেশনে যাব। প্রয়োজনে
সুইস আদালতেও যাব।’ অবশ্য নিজ দেশের
অ্যাটর্নি জেনারেলও তাঁর বিরুদ্ধে অন্য
একটি অভিযোগে ফৌজদারি মামলা
ঠুকেছেন। সাবেক সহকর্মীর মতো
আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন
প্লাতিনিও।
দুর্গের। কাল জুরিখে ফিফার এথিকস
ট্রাইব্যুনাল রায়ে শেষ হয়েছে ক্ষণগণনা।
১৭ বছরের ফুটবল সাম্রাজ্য থেকে
মুহূর্তেই নিষিদ্ধ হয়েছেন সেপ ব্ল্যাটার।
তাঁর একদার সহচর ইউরোপিয়ান ফুটবল
অ্যাসোসিয়েশনের (উয়েফা) সভাপতি
মিশেল প্লাতিনিও নিষিদ্ধ হয়েছেন সমান আট
বছরের জন্য। স্বভাবতই এ রায়কে অবিচারই
মনে করছেন ফিফা এবং উয়েফার দুই
সাবেক সভাপতি, বলা ভালো প্রায় দেড় যুগ
ফুটবলবিশ্বকে শাসন করা দুই দোর্দণ্ড
প্রতাপশালী প্রশাসক।
৭৯ বছর বয়সী ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে
অভিযোগের অন্ত নেই। সম্প্রতি
শত্রুশিবিরে যোগ দিলেও এ সুইস ফুটবল
প্রশাসকের ছত্রছায়াতেই উয়েফার
শীর্ষাসনে বসেছিলেন সাবেক ফরাসি
তারকা প্লাতিনি। মাঝখানে কিছু অদল-বদল
হলেও তাঁদের পরিণতি একই, নিষিদ্ধ
হয়েছেন একই মেয়াদে। সঙ্গে অর্পিত
অর্থ দণ্ডে অবশ্য সামান্য অমিল রয়েছে।
কৃতকর্মের জন্য নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে
বাড়তি ৫০ হাজার ডলার অর্থদণ্ড গুনতে হবে
ব্ল্যাটারকে, ৬০ বছর বয়সী প্লাতিনির
বেলায় যা ৮০ হাজার।
নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কাটিয়ে শুদ্ধ হয়ে
ফিরতে ফিরতে ব্ল্যাটারের বয়স গিয়ে
ঠেকবে ৭৫-এ। ৬০ বছরের প্লাতিনি সে
তুলনায় সবলই থাকবেন, তবে যে অপরাধে
শাস্তি পেয়েছেন তাতে ব্ল্যাটারের
মতো তাঁর ফুটবল প্রশাসক ক্যারিয়ারও
গতকালই থেমে গেছে বলে মনে
করছেন সবাই। অবশ্য ফিফার আদালতের
দেওয়া রায় নীরবে মেনে নিচ্ছেন না
ব্ল্যাটার। বিচারকদের দ্বারা ‘প্রতারিত’ হওয়ার
অভিযোগ নিয়ে তিনি নাকি যাবেন জুরিখেই
অবস্থিত কোর্ট অব আরবিট্রেশনে।
সেখানে সুফল না পেলে
সুইজারল্যান্ডের সাধারণ আদালতে যাওয়ার
প্রস্তুতিও নিজের আইনজীবীদের
নিতে বলেছেন ব্ল্যাটার। ভবিষ্যৎ
পরিকল্পনা নিয়ে অবশ্য জানাননি প্লাতিনি।
উল্টো রায়ের আগেই বিচারকরা ‘দোষী
সাব্যস্ত করেছেন’ অভিযোগ তুলে
আদালত ছেড়েই বেরিয়ে যান তিনি।
তবে পুরোটা সময় আদালতেই
কাটিয়েছেন ব্ল্যাটার, সে সময়টা প্রায় আট
ঘণ্টা। তাঁর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ পরামর্শক
হিসেবে প্লাতিনিকে ফিফার তহবিল থেকে
২০ লাখ ডলার পারিশ্রমিক দেওয়াটা। উল্লিখিত
পরিমাণ অর্থ ছাড় হয়েছিল ২০১১ সালে, যদিও
প্লাতিনি পরামর্শকের কাজটা নাকি
করেছিলেন ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল
মেয়াদে। উপরন্তু প্লাতিনির সঙ্গে
ব্ল্যাটারের চুক্তিটা ছিল স্রেফ মৌখিক। মৌখিক
চুক্তিতে এ পরিমাণ অর্থ ছাড় করানোর বৈধতা
যেমন প্রশ্নবিদ্ধ তেমনি পারিশ্রমিক কেন
এত দিন পর দেওয়া হলো, তার উত্তরও
খুঁজেছেন আদালত। কিন্তু সেসবের
কোনোটিরই যে সঠিক উত্তর দিতে
পারেননি ব্ল্যাটার কিংবা প্লাতিনি, তা পরিষ্কার
আদালতের রায়েই, ‘ব্ল্যাটার এবং প্লাতিনি
নিজেদের ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার
করেছেন। ওই লেনদেনের পক্ষে
ব্ল্যাটার লিখিত কিংবা মৌখিকভাবে আইনসংগত
কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। স্রেফ
মৌখিক চুক্তির শর্ত মেনে করা ওই
লেনদেনের বিষয়টি তাই গ্রহণ করা হয়নি। মি.
ব্ল্যাটারের এ কাজটি নৈতিকতা বিরোধী,
বেআইনি এবং ফিফা প্রদত্ত ক্ষমতার বাইরে
গিয়ে করা।’ একই রায়ে আদালত বিঁধেছেন
প্লাতিনিকেও, ‘পূর্ণ মর্যাদা ও নৈতিকতার
সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ
হয়েছেন মি. প্লাতিনি। নিজের কাজ,
একাগ্রতা এবং দায়িত্ববোধ সম্পর্কে
মোটেও সচেতন ছিলেন না। যে কাজটি
তিনি করেছেন, সেটি ফিফার সহসভাপতি
পদমর্যাদার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’ সাংঘর্ষিক তো
বটেই, ফিফার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য
হয়ে কী করে সংস্থার কাছ থেকে
পরামর্শকের পারিশ্রমিক নেন প্লাতিনি!
এ আসলে ভবিতব্যই ছিল। ২০১১ সালের ওই
লেনদেনকে কেন্দ্র করে
অক্টোবরেই এ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা
হয়েছিল সুইজারল্যান্ডের একটি আদালতে,
যে ফৌজদারি মামলার প্রধান আসামি ব্ল্যাটার এবং
একাধারে সন্দেহভাজন ও সাক্ষী প্লাতিনি।
গুঞ্জন আছে ওই লেনদেনের
পেছনে কাজ করেছে ফিফা সভাপতি
নির্বাচন। সেসময় চতুর্থ মেয়াদে ফিফা
সভাপতি পদে নির্বাচনে নামা ব্ল্যাটারের কাছ
থেকে প্লাতিনির আনুকূল্য পাওয়াটাকে মনে
করা হচ্ছে ভোট রাজনীতির অংশ।
অবশ্য ওই লেনদেন ছাড়াও এন্তার
দুর্নীতির অভিযোগ আছে বিশ্ব ফুটবল
সংস্থার শীর্ষ প্রশাসকদের বিরুদ্ধে।
যেমন ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজক
নির্বাচনকে ঘিরে ভোট কেনাবেচার
অভিযোগ রয়েছে। জার্মানির ২০০৬
বিশ্বকাপ আয়োজক হওয়াটাও বিতর্কমুক্ত
নয়। তার ওপর টিভি সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রিতে
দুর্নীতি করে প্রায় ২০ কোটি ডলার
ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন ফিফার
কার্যনির্বাহী কমিটির অনেক সদস্য। এ
অভিযোগে এরই মধ্যে গ্রেপ্তারও
হয়েছেন ফিফার সাত কর্মকর্তা। ফুটবল
দুর্নীতির এসব কেচ্ছাকাহিনী সবচেয়ে
ক্ষমতাধর প্রশাসক ব্ল্যাটার-প্লাতিনির
অজ্ঞাতে হয়েছে—এ মতের পক্ষে
কেউ নেই।
তবে ব্ল্যাটার রায় ঘোষণার পরও
বলেছেন, ‘সমস্ত দায় আমার ওপর চাপিয়ে
দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। আর যা সত্য নয়,
তা প্রমাণ করাও সম্ভব নয়।’ এ রায় বদলাতে
আইনি পথে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে
জানিয়েছেন তিনি।
দুর্ভাগ্য তাঁর, সেসবে কান না দিয়ে ফুটবল
বিশ্ব খুঁজতে শুরু করেছে ফিফার সম্ভাব্য
নতুন সভাপতিকে। ২৬ জানুয়ারির নির্বাচনে
জিতে ফিফার মসনদে এঁদের কোনো
একজনই হয়তো বসবেন—এশিয়ার ফুটবল
প্রধান বাহরাইনের শেখ সালমান বিন ইব্রাহিম
আল-খলিফা, দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনীতিক
টোকিও সেক্সওয়েল, ফিফার সাবেক
সহসভাপতি জর্দানের প্রিন্স আলী বিন আল
হুসেইন, উয়েফার সাবেক সেক্রেটারি
জিয়ান্নি ইনফান্তিনো অথবা ফিফার সাবেক
সহকারী সচিব জেরোম শ্যাম্পেন।
এএফপি
আপিল করবেন তাঁরা
গতকাল ফিফার আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে
আপিলের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন
আট বছরের জন্য ফুটবলে নিষিদ্ধ ফিফার
সাবেক সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার। বিচারকদের
দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন, সব অভিযোগ
ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা বলে দাবি তাঁর।
রায়ের পরপরই সংবাদ সম্মেলন করে সেপ
ব্ল্যাটার জানিয়েছেন, ‘এ রায়ে আমি বিস্মিত।
আপনারা যদি জিজ্ঞাসা করেন আমি নিজেকে
প্রতারিত মনে করছি কি না, তাহলে উত্তর
দেব হ্যাঁ।’ ইংরেজিতে দেওয়া আরেকটি
প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘তথ্য-
প্রমাণের ধার ধারেনি এথিকস কমিটি এবং তারা
সব সময় চেষ্টা করে গেছে একটা
মিথ্যাকে সত্য প্রমাণের জন্য। কিন্তু কে
না জানে যে, একটা মিথ্যাকে কখনোই
সত্যি প্রমাণ করা যায় না।’
নিজের এ দুর্দিনে যে ফিফারও মানহানি
হয়েছে, তা অনুধাবন করতে পারছেন
ব্ল্যাটার, ‘ফিফার জন্য আমি দুঃখিত।’ সবশেষে
নিজের পরবর্তী পদক্ষেপও
জানিয়েছেন তিনি, ‘ফিফা সভাপতি বলেই কিনা
আমাকে একযোগে আক্রমণ করা
হয়েছে। তবে আমি দমে যাব না। কোর্ট
অব আরবিট্রেশনে যাব। প্রয়োজনে
সুইস আদালতেও যাব।’ অবশ্য নিজ দেশের
অ্যাটর্নি জেনারেলও তাঁর বিরুদ্ধে অন্য
একটি অভিযোগে ফৌজদারি মামলা
ঠুকেছেন। সাবেক সহকর্মীর মতো
আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন
প্লাতিনিও।