আইটি

নোবেল পেতে পারেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত পদার্থবিজ্ঞানী জাহিদ হাসান

এরকম যে একটা কণার অস্তিত্ব থাকতে পারে, ৮৫ বছর আগেই হারম্যান ভাইল নামে এক বিজ্ঞানী প্রথম জানিয়েছিলেন। কিন্তু ভাইলের সেই কণাকে গবেষণাগারে শনাক্ত করে ফেলেন আমেরিকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত পদার্থবিজ্ঞানী জাহিদ হাসান। সত্যেন বসুর বোসন আবিষ্কারের ৯১ বছর পর আর এক বাঙালি গবেষকের নেতৃত্বে আবিষ্কৃত হল নতুন গ্রুপের একটি কণা, যা আবিষ্কারের পর কেবল তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞান পাল্টে যাবে না, ইলেকট্রনিক ও কম্পিউটার দুনিয়ায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। গত বৃহস্পতিবার আমেরিকার সায়েন্স পত্রিকা ‘সায়েন্স’-এ জাহিদ হাসানের নেতৃত্বে গবেষক দলের এই সাফল্যের খবর ও ‘ভাইল ফার্মিয়ন’ কণার সন্ধান মেলার প্রামাণ্য তথ্য বিশদভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। জাহিদ হাসান জানিয়েছেন, ভাইল ফার্মিয়নের অস্তিত্ব প্রমাণিত হওয়ায় দ্রুতগতির ও অধিকতর দক্ষ ইলেকট্রনিক্স যুগের সূচনা হবে। কেমন হবে সেই নতুন যুগের ইলেকট্রনিক সামগ্রী? অধ্যাপক হাসানের কথায়, এই আবিষ্কার কাজে লাগিয়ে আরও কার্যকর নতুন প্রযুক্তির মোবাইল ফোন বাজারে এসে যাবে, যা ব্যবহারে তাপ সৃষ্টি হবে না। কারণ, ভাইল ফার্মিয়ন কণার ভর নেই। এটি ইলেকট্রনের মতো পথ চলতে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ে না। তৈরি হবে নতুন প্রযুক্তির কম্পিউটার ও বৈদ্যুতিক নানা সামগ্রী। এম জাহিদ হাসান ছোটবেলায় ঢাকার ধানমন্ডি গভ. বয়েজ স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। ঢাকা কলেজের প্রাক্তন এই ছাত্রের পিএইচডি স্টানফোর্ডে। এরপর শিক্ষকতা ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ায়। এখন প্রিন্সটনে গবেষণার পাশাপাশি শিক্ষকতা করছেন এই বাংলাদেশী পদার্থবিদ। এই পৃথিবী, যাবতীয় গ্রহ-নক্ষত্র, নদীনালা, সমুদ্র, পর্বত, প্রাণিজগৎ, গাছপালা, মানুষ সব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণার পি-। মহাজগতের এসব বস্তুকণাকে বিজ্ঞানীরা দুটি ভাগে ভাগ করেন। একটি ‘ফার্মিয়ন’, অন্যটি ‘বোসন’, যা আবিষ্কার করেছিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু, তার নামেই ‘বোসন’ কণা। ‘ফার্মিয়ন’ কণার একটি উপদল হল ‘ভাইল ফার্মিয়ন’। ১৯২৯ সালে বিজ্ঞানী হারম্যান ভাইল এই ‘ভাইল ফার্মিয়ন’ কণার অস্তিত্বের কথা জানিয়েছিলেন, তার নামেই এই অধরা কণার নামকরণ হয়েছিল। ১৯২৯ সাল থেকেই পদার্থবিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালিয়ে গেছেন ‘ভাইল ফার্মিয়ন’-এর অস্তিত্ব প্রমাণের। ৮৫ বছর ধরে সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সন্ধান মিলল সেই অধরা কণা ‘ভাইল ফার্মিয়ন’-এর। অধ্যাপক জাহিদ হাসান জানিয়েছেন, মোট তিন ধরনের ফার্মিয়নের মধ্যে ‘ভিরাক’ ও ‘মায়োবানা’ ফার্মিয়নের খোঁজ আগেই পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু বহু পরীক্ষায় দীর্ঘ দিনেও ‘ভাইল ফার্মিয়ন’-এর সন্ধান না মেলায় মাঝে তারা ভেবেছিলেন, নিউট্রিনোই সম্ভবত ভাইল ফার্মিয়ন। কিন্তু পরে এ ভাবনা পরিত্যক্ত হয়েছে কারণ নিউট্রিনোর ভর আছে, ভাইল ফার্মিয়ন ভরশূন্য। অবশেষে তার সন্ধান মিলল। ইলেকট্রনিক্সের নবযুগ আসন্ন। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।