বাংলাদেশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পুনঃসংশোধনের দাবি সুজনের

জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশ কয়েকটি ধারা ‘নিবর্তনমূলক’ উল্লেখ করে আইনটি পুনঃসংশোধনের দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

২২ সেপ্টেম্বর, শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ দাবি জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সুজন মনে করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর অনেকগুলো ধারা (৮, ২৮, ২৯, ৩১) নিবর্তনমূলক, যে ধারাগুলোর ব্যাপক অপব্যবহার হতে পারে। বিশেষ করে নাগরিকদের হয়রানি ও কণ্ঠরোধ করা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ব্যাহত করার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।

সুজনের সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সুজন মনে করে, যেকোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক সমাজে মত-বিমত থাকতেই পারে। আমাদের আইন ও সংবিধান যেখানে নাগরিকের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পুনঃসংশোধনের দাবি সুজনেরতা তথা বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছে, এই ধরনের নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন হওয়া সত্যিই দুঃখজনক।’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইনটি মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। এটি দেশে গণতান্ত্রিক পরিসরকে সংকুচিত করবে, নাগরিকদের বাক-স্বাধীনতা হরণ করবে ও নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার বোধ তৈরি করবে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এই আইনে পরোয়ানা বা অনুমোদন ছাড়াই পুলিশের হাতে যে কাউকে তল্লাশি, জব্দ এবং গ্রেফতার করার ক্ষমতা রয়েছে। তাই এই আইনকে অপব্যবহার করে পুলিশ সাধারণ নাগরিকদের হেনস্তা করতে পারে। তা ছাড়া এই আইনের ৩২ ধারায় ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩ অন্তর্ভুক্ত করায় দুর্নীতি-সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।’

সুজন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা দেখেছি, এর আগে তথ্যপ্রযুক্তি আইন ব্যবহার করে বিগত ছয় বছরে শত শত লোককে জবরদস্তিমূলকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং সে আইনটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল। এই কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পাস হওয়ার আগে বিভিন্ন মহল থেকে নানান পরামর্শ ও দাবি তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু সরকার সেগুলো পুরোপুরি আমলে নেয়নি; বরং বাতিল হওয়া তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কয়েকটি (২৫, ২৮, ২৯ ও ৩১) ধারায় ভাগ করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

‘অর্থাৎ ৫৭ ধারাকে ভেঙে ভেঙে, কিছুটা নতুন শব্দ চয়ন করে, ক্ষেত্রবিশেষে কিছুটা শাস্তি কমিয়ে, প্রায় অবিকলভাবে নতুন আইনে রাখা হয়েছে।’

এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি