বাংলাদেশ

তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্স ঠেকাতে স্কাইপি বন্ধ করল সরকার

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনলাইনে দলীয় প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেয়ার কারণে অনলাইন যোগাযোগব্যবস্থার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্কাইপি ডট কম বাংলাদেশে বন্ধ করে দিয়েছে 'বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন' (বিটিআরসি)।

দেশে সব ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল অপারেটরদের রোববার রাত থেকে স্কাইপি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিটিআরটির একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। সে কারণে স্কাইপি বন্ধ করা হয়েছে।

তবে ওই সূত্রগুলো নিজেদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের একটি সূত্র জানিয়ে, বিটিআরসির ওই নির্দেশনা পাওয়ার তারা স্কাইপি বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে স্কাইপির সব সেবা বন্ধ রয়েছে।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র স্কাইপি বন্ধ করা হলেও ভিডিও কনফারেন্স করার মতো অন্যান্য অনলাইন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রয়েছে।
সরকার ঘৃন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো: বিএনপি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) স্কাইপি বন্ধ করে দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত বিটিআরসি ইন্টারভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্কাইপির সেবা বন্ধ করে দিয়ে এক ঘৃন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। ইতোমধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানস্থ কার্যালয়ে ইন্টারনেট ভিত্তিক সকল যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে।
সোমবার রাতে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন- নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দিন বলেছেন- বিএনপি’র মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। তার এই বক্তব্যের পরপরই সরকার নিয়ন্ত্রিত বিটিআরসি কর্তৃক স্কাইপি বন্ধ করে দেয়াতে আবারও প্রমানিত হলো-নির্বাচনী মাঠ আওয়ামী জোটের একচেটিয়া দখলে থাকবে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নমিনেশন প্রত্যাশীদের সাথে স্কাইপিতে কথা বলা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন নয়। কমিশন সচিব এ বিষয়টি নিশ্চিত করার পরও তড়িঘড়ি করে বিটিআরসি-কে দিয়ে স্কাইপি বন্ধ করে দেয়া সরকারের নি¤œরুচির পরিচায়ক। সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচনকে নিজেদের অনুকুলে নেয়ার জন্য ক্লান্তিহীনভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। বিএনপি’র নির্বাচনী প্রক্রিয়ার তৎপরতাকে বাধা প্রদান করার জন্য সরকার সবধরনের শক্তি প্রয়োগ করছে।
রিজভী বলেন, গুলশানস্থ বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে ইন্টার ভিত্তিক সকল যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করতেই স্কাইপি বন্ধ করা হয়েছে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আওয়াজ ভেসে উঠলেই সরকার মূর্ছা যায়, আর সেজন্যই দুর থেকে ভেসে আসা শব্দকেও আটকানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী সংকীর্ণ রাজনীতির বলয় থেকে কোনদিন বেরিয়ে আসতে পারবে না। সরকার ও সরকার প্রধান ভিন্ন মত, বিরোধী দল, বিরোধী কন্ঠস্বর নীরব করার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জনগণের নিরাভিমান আনুগত্যই শেখ হাসিনার কাম্য। যতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে ততদিন গণতন্ত্রের ফাঁড়া কাটবে না এবং দেশ থেকে বিপদ দুর হবে না। সরকার কর্তৃক তারেক রহমানের কন্ঠের আওয়াজকে বাধা দেয়ার অর্থই হচ্ছে গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরা। আর এজন্য স্কাইপি বন্ধ করা হয়েছে। আসলে সরকার বলপ্রয়োগ করেই ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে, জনগণের সমর্থন নিয়ে নয়। আমি সরকারের এই ন্যাক্কারজনক সংকীর্ণ মানসিকতার ধিক্কার জানাই এবং অবিলম্বে ইন্টারভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যম স্কাইপি খুলে দেয়ার আহবান জানাচ্ছি।

এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের একটি চিত্রও তুলে ধরেন বিএনপির এই নেতা।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি