বাংলাদেশ

বাংলাদেশের পোশাকে ৫০% ডিসকাউন্ট চায় পশ্চিমা ব্র্যান্ড

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বাংলাদেশের পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্ডার বাতিল না করে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দাম কমানোর দাবি করেছে পশ্চিমা পোশাক ব্র্যান্ডগুলো। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো শুক্রবার জানিয়েছে, সংকটের কারণে এরই মধ্যে ধুঁকতে থাকা দেশের জন্য এমন একটি দাবি আর্থিকভাবে আরো বেদনার।

কয়েক লাখ বাংলাদেশি পরিবার পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীল, যা মহামারিতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কারখানা মালিকদের মতে, ৩০০ কোটি ডলারের অর্ডার বাতিল বা স্থগিত হওয়ায় এপ্রিলের প্রথমার্ধে রফতানি ৮৪ শতাংশ কমেছে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, ‘আমরা এখনও মূল চুক্তির শর্ত থেকে তাদের সরে যাওয়া পর্যবেক্ষণ করছি। এর মধ্যে মূল চুক্তির ৫০ শতাংশের চেয়ে কম দামের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।’

পশ্চিমা দেশগুলোতে পোশাক সরবরাহকারী হিসেবে কেবল চীনের পেছনে থাকা বাংলাদেশ রফতানি খাতের ৮০ শতাংশেরও বেশি উপার্জন করে পোশাক শিল্প থেকে। প্রায় চার হাজার কারখানায় কাজ করে ৪০ লাখ মানুষ, যার বেশির ভাগই নারী।

কখন পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো পোশাকের দাম দেবে বা ডেলিভারি নেবে সেই ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। একে ‘সময় কেনার কৌশল’ বলছেন রুবানা।

বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি পোশাক কেনা সুইডিশ ফ্যাশন জায়ান্ট এইচঅ্যান্ডএমকে উদ্ধৃত করে রুবানা বলেছেন, ‘ডেলিভারি ও দাম দেওয়ার ব্যাপারে শুধু একটি কোম্পানি ছাড়া আর কেউ তাদের পরিকল্পনা জানায়নি। অন্যরা শর্ত দিয়েছে, তাদের বেশির ভাগই স্থগিত অর্থ দেওয়া, ছাড় ও স্থগিত সরবরাহ চায়।’

কল্পনা আক্তার নামে একজন আন্দোলনকারী শ্রমিক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে অর্ডার হ্রাস বা পুনর্বিবেচিত হলে তার মাশুল গুনতে শ্রমিকদের। তিনি বলেছেন, ‘পরের মাসেই আমরা এর ফল দেখতে পাবো, যখন শ্রমিকদের বেতন ও ঈদ বোনাস দেওয়া হবে।’

সংকটের কারণে পশ্চিমা অর্থনীতি এখন লড়াই করছে এবং অনেক দেশের খুচরা বিক্রয় বন্ধ হয়ে গেছে, ব্র্যান্ডগুলো তাদের অর্ডার বাতিল করতে শুরু করেছে, যদিও এরই মধ্যে কেউ কেউ তাদের উৎপাদিত পোশাক সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

কোনো অর্ডার বাতিল বা পুননির্ধারণ করা অবিচার ছিল মনে করেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি জানান, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করেছে কর্তৃপক্ষ। থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জাফরউদ্দিন বলেছেন, ‘আমাদের কারখানার মালিকরা নিরাপদ থাকতে অনেক অর্থ খরচ করে। ভালো দাম না পাওয়াটা হবে অন্যায়।’

বাংলাদেশ সরকার গত মাসে রফতানি খাতকে সহায়তায় এর শ্রমিকদের বেতন দিতে ৫৮.৮ কোটি ডলারের একটি প্যাকেজ ঘোষণা করে।

এলএবাংলাটাইমস/এলআরটি/এন