বাংলাদেশ

মায়ের কাছেই থাকবে দুই জাপানি শিশু, বাবার মামলা খারিজ

জাপান থেকে আসা দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে বাবার করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। এর ফলে ওই দুই জাপানি শিশুর তাদের মায়ের হেফাজতে থাকতে আর কোনো আইনি বাধা রইলো না। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান আজ রোববার মামলাটি খারজি করে দেন। শিশুদের মায়ের আইনজীবী শিশির মনির এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আদালত মামলা খারিজ করে দেওয়ায় শিশু দুটি তাদের মায়ের জিম্মায় থাকবে। এর আগে ১৫ জানুয়ারি তাদের বক্তব্য শুনে রেকর্ড করেন একই আদালত। জাপান থেকে আসা দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন তাদের বাবা ইমরান শরীফ। মামলায় বাদীপক্ষের তিনজন আদালতে সাক্ষ্য দেন। আর বিবাদীপক্ষে সাক্ষ্য দেন ওই দুই শিশুর মা নাকানো এরিকো। সাক্ষ্যগ্রহণ ও দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে এ রায় ঘোষণা করেন আদালত। প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানের নাগরিক এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরানের বিয়ে হয়। তাদের তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে (বড় ও মেজো) নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ছোট মেয়ে জাপানে আছে। এরপর মেয়েদের ফিরে পেতে একই বছরের ১৮ জুলাই বাংলাদেশে আসেন মা এরিকো। তাদের ফিরে পেতে ১৯ আগস্ট হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। অন্যদিকে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে পৃথক রিট করেন ইমরান। পৃথক রিটের ওপর শুনানি নিয়ে দুই শিশু তাদের বাবা ইমরানের হেফাজতে থাকবে বলে একই বছরের ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট আদেশ দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এরিকো; যা চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। এরিকোর করা আবেদন (লিভ টু আপিল) নিষ্পত্তি করে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আদেশে বলা হয়, ঢাকার পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটি (২০২১ সালে শিশুদের বাবার করা) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাপান থেকে আসা দুই শিশু তাদের মায়ের হেফাজতে থাকবে। তবে শিশুদের বাবা তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন বলে আদেশে বলা হয়। আপিল বিভাগের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পারিবারিক আদালতকে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আদেশে আরও বলা হয়, মামলার পারিপার্শ্বিক বিষয় ও শিশুদের স্বার্থ বিবেচনায় তাদের এই আদালতের এখতিয়ারের বাইরে (দেশের বাইরে) নেওয়া যাবে না। তবে দুই সন্তানকে নিয়ে জাপানে যাওয়ার জন্য গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে রাজাধানী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান এরিকো নাকানো। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।   এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস