বাংলাদেশ

কোটা কি শুধু বিসিএসের জন্য বাতিল?

দেশে কয়েক দিন ধরে কোটা সংস্কারের দাবিতে তুমুল আন্দোলনের মুখে কোটা বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তবে এ সিদ্ধান্ত কেবল বিসিএস নাকি প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সব চাকরির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে কেবল বিসিএসের ক্ষেত্রে কোটার উদাহরণ দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ফলে সব সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল হবে নাকি কেবল বিসিএসে কোটা বাতিল হবে, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আসার পর প্রজ্ঞাপন জারির কথা জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান।

কোটা সংস্কার হবে নাকি বাতিল হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন জারির নির্দেশনার সময় তা বলা যাবে। এখনই এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশনা দেন, সংস্কার বা বাতিল যেটাই হোক, সেভাবেই হবে।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় আছে। … বিসিএস না প্রথম গ্রেড না দ্বিতীয় গ্রেডের জন্য তা বোঝা যাবে প্রজ্ঞাপন হওয়ার পর।’

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী কোটা থাকার দরকার নাই বলে নিজের মত দিলেও এ বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কাজেই তাদের প্রতিবেদনেরও গুরুত্ব রয়েছে।

প্রজ্ঞাপন কবে নাগাদ জারি হতে পারে এ বিষয়ে সচিব বলেন, ‘এটা নিয়ে তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। এখনই কোনো নিয়োগ হচ্ছে না। তাতে রাষ্ট্রেরও কোনো ক্ষতি হচ্ছে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী কাজ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়া। অনেকেই এ বিষয়ে নানা ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, তাতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এটি অত সহজ বিষয় নয়। কিছুটা জটিলও। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর সবকিছুই কেটে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে তার বক্তব্যে প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার বিষয়েও কথা বলেছেন। এটি কীভাবে হবে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘আমরা পুরো বিষয়েই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। তিনি যেভাবে বলবেন সেভাবেই প্রজ্ঞাপন হবে।’

এর আগে সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। সেই প্রজ্ঞাপনে কী থাকবে, প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিষয়টি কীভাবে থাকবে, সেটি জানা যাবে এ সংক্রান্ত কমিটি গঠিত হওয়ার পর তারা যেভাবে বলবেন তার ওপর। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, ‘উনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদধারী কর্মকর্তা। ওনার নির্দেশনা মাথায় রাখুন।’

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ৮০ শতাংশই হতো কোটায়। তবে সবশেষ নীতিমালা অনুযায়ী কোটায় পদ ছিল ৫৬ শতাংশ। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ এবং ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি