অর্থনীতি

ডিমের দাম দেশের বাজারে আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ

বিশ্ববাজারে বিভিন্ন দেশের ডিমের দামের সঙ্গে দেশের বাজারে বড় রকমের পার্থক্য দেখা যায়। বাংলাদেশের তুলনায় ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশে ডিম অনেক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম দেশের বাজারে আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। যদিও দেশে ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা রয়েছে। এগরেট ডটইন ও চায়নার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জনসংখ্যার দুই দেশ ভারত ও চীন। এ দুই দেশের প্রতিটির জনসংখ্যা ১৪০ কোটির বেশি। দুই দেশে বাংলাদেশের তুলনায় কম দামে ডিম পাওয়া যায়। এমনকি ভারত বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ ডিম রপ্তানিও করে। এগরেট ডটইনের তথ্যানুসারে, গতকাল ভারতে প্রতি পিস ডিমের গড় দাম ছিল সাড়ে ৪ রুপি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী যা গড় ৫.৯৭ টাকার সমান (১ রুপি ১.৩২ টাকা হিসেবে)। এ ছাড়া কলকাতায় বিক্রি হচ্ছে ৫.৯ রুপি যা ৭.৭৮ টাকার সমান। দিল্লিতে ৫.৫১ রুপি যা ৭.২৭ টাকার সমান। আহমেদাবাদে ৫.৫৫ রুপি যা ৭.৩২ টাকার সমান। মুম্বাইতে ৫.৬৫ রুপিতে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে যা ৭.৪৫ টাকার সমান। সম্প্রতি চায়নার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল এগ্রিকালচার প্রোডাক্টস বিজনেস ইনফরমেশন পাবলিক সার্ভিস প্ল্যাটফরমের তথ্যানুযায়ী, চায়নায় কেজি হিসেবে ডিম বিক্রি হয়। গড়ে প্রতি ডিম ৫০ গ্রাম হিসাব করলে ১ কেজিতে ২০টি ডিম পাওয়া যায়। চীনের বেইজিংয়ে প্রতি কেজি ডিম ১০.৯ ইউয়ানে বিক্রি হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী যা ১৬৪.৭৮ টাকা হয় (১ ইউয়ানে ১৫.১১ টাকা হিসাবে)। অর্থাৎ প্রতি পিস ডিমের গড় দাম ৮.২৩ টাকা। তেনজিংয়ে ১১ ইউয়ানে বিক্রি হচ্ছে যা ১৬৬.২১ টাকার সমান। হানদানে ১০.৪ ইউয়ানে বিক্রি হচ্ছে যা ১৫৭.১৪ টাকার সমান। হেবেইতে ১০.৬ ইউয়ানে বিক্রি হচ্ছে যা ১৬০.১৬ টাকার সমান। অর্থাৎ প্রতি পিস ডিমের গড় দাম ৮ টাকায় থাকছে। আর ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিটি ডিমের দাম সাড়ে ১২ টাকা। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর দাম অনুয়ায়ী প্রতি হালি ডিম ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক বছর আগে যা ৪৮ টাকায় বা তার কমে বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১২ টাকায়। পাইকারিতেই বাদামি ডিমের শ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১১০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি পাইকারি ডিমের দাম পড়ছে ১১ টাকা ১০ পয়সা। ডিমের দাম বাড়ায় সরকার ১৪ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো দাম নির্ধারণ করে দেয়। নির্ধারণ করে দেওয়ার ১৫ দিন পরও বাজারে ডিমের দাম কার্যকর হয়নি। নির্দেশনা উপেক্ষা করে আগের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। প্রতিটি ফার্মের ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশে প্রতিদিন সব ধরনের ডিমের মোট চাহিদা ৪ কোটি ৫০ লাখ পিস। আর উৎপাদন আছে ৫ কোটির মতো। অর্থাৎ দেশে ডিমের উৎপাদন হঠাৎ করে কমে যায়নি, যে দাম এতটা বেড়ে যাবে। তবে পোলট্রি ফিডের দাম বেড়েছে। তার পরও খুচরা পর্যায়ে একটি ডিম এখন কোনোভাবেই ১২ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস