নিউইয়র্ক

যুক্তরাষ্ট্রে ৯ কলেজছাত্রকে গুলি করে হত্যা

যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন রাজ্যের একটি কমিউনিটি কলেজে এক বন্দুকধারীর গুলিতে নয় জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে আরো ৭ জন। পরে পুলিশের গুলিতে সেই বন্দুকধারীও নিহত হয়েছে।


গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রোজবার্গ শহরের আম্পকুয়া কমিউনিটি কলেজে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বিবিসি। হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া গেলেও ডগলাস কাউন্টির শেরিফ জন হ্যানলিনকে উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছে, ওই বন্দুকধারীসহ মোট দশজন এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন আরও সাতজন।   পুলিশের পক্ষ থেকে বন্দুকধারীর পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। তবে সিবিসি, সিএনএন ও এনবিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশনগুলো পুলিশের বরাত দিয়ে ২৬ বছর বয়সী ওই যুবককে ক্রিস হার্পার মার্সার নামে উল্লেখ করেছে। 


ওই যুবক কেন এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য পুলিশ পায়নি। পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি লিখেছে, এ ধরনের কিছু করে ফেলার ইংগিত সে আগেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দিয়েছিল। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। সিএনএন এর খবরে বলা হয়, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।  ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই কলেজের ছাত্রী কোর্টনি মুর (১৮) স্থানীয় সংবাদপত্র লোকাল নিউজ রিভিউকে জানান, হামলার সময় তিনি কলেজের স্নাইডার হলে ক্লাসে ছিলেন। হঠাৎ জানালা দিয়ে একটি গুলি এসে তার শিক্ষকের মাথায় লাগে। 


এরপর হামলাকারী ক্লাসে এসে প্রথমে সবাইকে মাটিতে শুয়ে পড়তে বলে। এরপর এক এক করে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ধর্ম পরিচয় জানতে চায়। এরপরই সে গুলি শুরু করে। কেনি উঙ্গারমান নামের আরেক শিক্ষার্থী এনবিসি নিউজকে বলেছেন, জিন্স ও টিশার্ট পরিহিত হামলাকারীকে তিনি অস্ত্র হাতে কলেজের ওই ভবনে ঢুকতে দেখেন। এর পরপরই গোলাগুলি আর চিৎকার শুরু হয়। অন্তত ৩০/৩৫টি গুলির শব্দ শুনেছেন বলে ক্যাসান্ড্রা ওয়েল্ডিং নামের এক শিক্ষার্থী সিএনএনকে বলেছেন। 


কলেজের শিক্ষার্থী ব্র্যাডি উইন্ডার (২৩) ফেইসবুকে এক পোস্টে জানান, হামলার সময় তিনি ছিলেন পাশের ক্লাসে। গোলাগুলি শুরু হতেই তিনি ও তার সহপাঠীরা দৌঁড়ে বেরিয়ে যান।   ডগলাস কাউন্টি ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, তারা শ্রেণিকক্ষে কয়েকজনকে আহত অবস্থায় পেয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত তিনজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন শেরিফ জন হ্যানলিন। এ ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা অস্ত্র আইনের কড়াকড়ি বাড়ানোর বিষয়টি আবারও সামনে এনেছেন। তিনি বলেছেন, হত্যা থামাতে প্রার্থনা যথেষ্ট নয়। দৃশ্যত হতাশ ওবামা এক ভিডিও বার্তায় বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এ ঘরনের হত্যা এবং তারপর তার প্রতিক্রিয়া জানানোর বিষয়টি যেন রুটিনে পরিণত হয়েছে। মানসিক বিকারগ্রস্ত লোকজন সব দেশেই আছে, যারা সব সময় অন্যের ক্ষতি করতে চায়। তবে আমরাই বোধহয় পৃথিবীতে একমাত্র দেশ, যেখানে কিছুদিন পরপর গুলি করে গণহারে মানুষ মারা হয়।
যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় কঠোর আইনের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার উদাহরণ তুলে ধরে এ বিষয়ে আইনপ্রণেতাদের চাপ দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। রয়টার্স