বাজেট বাস্তবায়েন স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বান এফবিসিসিআইয়ের
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
শনিবার এফবিসিসিআই সম্মেলন কক্ষে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলে এফবিসিসিআই।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলোর পক্ষে লিখিত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, নতুন বাজেটে ঘাটতি দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১ লক্ষ ১২ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি পূরনের জন্য সরকারের ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে। ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভলশীলতা উৎপাদনশীল খাতে ঋণের প্রবাহ কমিয়ে দিতে পারে।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। যা গত অর্থ বছরের ঘোষিত বাজেটের চেয়ে ১৭ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি এবং সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২৬.২০ শতাংশ বেশি।
বাজেট বাস্তবায়নে অর্থায়ন ও অর্থব্যয় সঠিকভাবে করতে না পারায় প্রতিবছরই বাজেট সংশোধন করতে হয়। বাজেট বাস্তবায়নে বছরের শুরু থেকেই সুষ্ঠু মনিটরিং জোরদার করা জরুরী। বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং তদারকের মান নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এই বিশাল বাজেট বাস্তবায়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেবে।
১৫ শতাংশ ভ্যাট মূল্যস্ফীতি উস্কে দেবে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে মহিউদ্দিন বলেন, বাজেটে হ্রাসকৃত হারে ভ্যাটের পরিবর্তে সিঙ্গেল রেট ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে দেশের শিল্পখাত বিশেষ করে এসএমই ও প্রান্তিক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। যে সমস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ব্যবসায়ী হিসাবপত্র সঠিকভাবে না রাখতে পারায় রেয়াত নিতে সক্ষম নন তাদের উপর করের বোঝা বেড়ে যাবে যার প্রভাব ভোক্তার উপর পড়বে। এতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরো বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের পূর্বে এর প্রভাব পর্যালোচনা (ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট) করতে বলেছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে কোন উদ্যোগে নেয়া হয়নি। আগামীতে একটি স্বাধীন সংস্থার মাধ্যমে ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট করার জন্য এনবিআরে প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কারণেও মূল্যস্ফীতি বাড়বে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি শিল্প খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই আগামীতে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি না করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, টার্নওভার করের সীমা ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে টার্নওভার ট্যাক্স ৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৪ শতাংশ করা হয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষিতে টার্নওভার ট্যাক্স ৩ শতাংশ অপরিবর্তিত রেখে টার্নওভার করের সীমা ৫ কোটি টাকা বা যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিকেএমইএ সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান, প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাশেম খান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই প্রথম সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, সহ-সভাপতি মুনতাকিম আশরাফসহ পরিচালকরা।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
শেয়ার করুন