আপডেট :

        ইউরোপের ১২ দেশে শিক্ষার্থীদের যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ৩০০

        অবমাননাকর আচরণ ট্রাম্পের, সতর্ক করেন বিচারক

        উত্তর কোরিয়া ও ইরানের মধ্যে কি জোট হচ্ছে?

        কাউনিয়া উপজেলায় আনোয়ারুল ইসলাম মায়া এবং পীরগাছায় আব্দুল্লাহ আল মিলন নির্বাচিত

        চিকিৎসা বিজ্ঞানে সাফল্য অর্জনে রোবটিক আর্ম বা মানব দেহে সংযোজনের জন্য কৃত্রিম হাত

        বাংলা সাহিত্য জগতের চর্তুপাশেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিচরণ করেছেন

        প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক

        মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত হলে তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে বলে প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা

        তথ্য অধিকার আইনের আওতায় গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত প্রসঙ্গে

        দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ

        দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ

        বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছেন ব্যাংক রিপোর্টারা

        বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছেন ব্যাংক রিপোর্টারা

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে

        সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিঃ বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু

        নড়াইল জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৮ মে

        ডলারের অফিসিয়াল মূল্য ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১০ থেকে ১১৭ টাকা নির্ধারণ

        বাল্টিমোর সেতুতে আটকা সর্বশেষ শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার

        দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, অর্ধশত ককটেল বিস্ফোরণ

        প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হচ্ছে আজ

একটি কাল্পনিক বিয়ে অতঃপর...

একটি কাল্পনিক বিয়ে অতঃপর...

পুরো বাড়ি আলোতে আওয়াজে রমরমা।মেহমানও আসতে শুরু করেছেন। বাড়ি গমগম করছে কুটুমে । দূর-দূরান্তর থেকে আত্মীয়স্বজন উপস্থিত হয়ে বাড়িতে এলাহি কাণ্ড। অনেককে আমি নিজেও চিনি না। আম্মু অমুক তমুক বলে পরিচয় করিয়ে দেন। নানু, দাদুরা আমায় নিয়ে রসিকতা করছেন। ভাবিরাও কত তামাশা করছে। আমি তাদের মুখে তাকিয়ে মৃদু একটা হাসি দেই।

অনেক রাত হল। সবাই ঘুমুচ্ছে। গোটা বিয়ে বাড়িটা গভীর ঘুমে নিমগ্ন। কিন্তু আমার চোখে ঘুম নেই। এ যেন 'ঘুমন্ত রাজ্য নির্ঘুম আমি এক প্রাণী।'   রাত পোহালেই নাকি আমার গায়ে হলুদ। কি অদ্ভুত ব্যাপার! বাবার বাড়ির অধিকার নিয়ে নাকি আর মাত্র একটা দিন আছি। এতদিনের স্মৃতি যা কিছু আমার বলে দাবি করা কিছুই নাকি আমার না। অধিকারের দাবি চুকিয়ে এবার আমি হলাম পর!    এর পরদিনই চলে যাবো অন্য একটা অপরিচিত মানুষের ঘরে। তাদের নাকি আমাকে আপন করে নিতে হবে! কিন্তু যারা আমার আপনজন তাদের আমি আর প্রতিদিন দেখতেই পাবো না। আমার রক্তের সম্পর্ক, আমার আপনজন। ভুলে অন্য কাউকে আপন করতে হবে ! এটাই আমার নিয়তি।   সবার সাথে দেখা হবে হয়তো কিন্তু আমি তখন অন্য বাড়ির বৌ। নিজের বাড়িতে আমি আসবো অতিথি হয়ে। খুব মনে পড়ছে, যখন বেশি মন খারাপ হতো আম্মুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর রাতগুলো । আর আম্মু বারবার জিজ্ঞসা করবে কি হয়েছে ? একবার বল আমায়? আমি ঠিক বুঝতে পারবো? আব্বুর সাথে করা বায়নাগুলো,  ছোটবোন দুটোর সাথে ঝগড়াখুনসুটির সময়গুলো।    ওদের সাথে আর ঝগড়া হবে না! সকালে ঘুম থেকে দেরি করে উঠি বলে আম্মু আর বকবে না। আমার ভেতরটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে । জীবনটা কত্তো ছোট তাই না? আচ্ছা আমি যে চলে যাবো তাই মনে করে কেউ কি কাঁদছে? জানি হয়তো আম্মুর চোখেও ঘুম নেই। খুব ইচ্ছে করছে আম্মুকে গিয়ে বলতে 'আম্মু আমি আর কয়েকটা দিন তোমায় জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে চাই। এইভাবে পর করে দিওনা আমায়  আমি কিন্তু পারছি না।'   হয়তো তা আর সম্ভবও না । আমি বাড়ির বড় মেয়ে হয়েও যেন আদরে আহ্লাদে আজও ছোটই রয়ে গেলাম । দিনগুলো যে খেলার মাঠেই  কেটে গেল। ঘড়ির কাঁটার প্রতিটা সেকেন্ড পার হচ্ছে আর আমার এ বাড়িতে থাকার সময়টা ফুরিয়ে আসছে। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম নিজেও জানি না। ভোরের আলোয় ঘুম ভাঙলো । সারা বাড়ি মুখোরিত অথিতিদের কলরবে।  সবার কত কাজ।    আমার বান্ধবি, ভাবি সবাই আমাকে নিয়ে ব্যস্ত।  আমাকে কিভাবে সাজাবে, কিভাবে সুন্দর লাগবে  আর ও কত কি। আমি ওদের দিকে হরিণীর মতো তাকিয়ে আছি । মনে মনে ভাবছি 'তোমরা আমাকে সাজিয়ে গুছিয়ে এইভাবে পর করে দিচ্ছো! আমার যে খুব কষ্ট হচ্ছে কেউ কি বুঝতে পারছো না?'   নানা আয়োজনের পর আমাকে সবাই গায়ে হলুদের জন্য নিয়ে যাচ্ছে । আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে আছি । দুচোখ পানি জলজল করছে, কষ্টে আমার বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে মনে হচ্ছিলো, হঠাৎ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আমি আম্মু বলে চিৎকার করে উঠি । 'পরে বুঝতে পারি আমি স্বপ্ন দেখছিলাম ।'   মধ্যরাতে হঠাৎ এমন স্বপ্ন দেখে আমি থতমত খেয়ে গেলাম ।  কিছুক্ষণ চুপ থেকে আশপাশের দিকে তাকালাম । ছোটবোনদের মুখগুলো খুব আদুরে লাগছে । একটু উঠে বারান্দায় তাকাতেই দেখি ভোর হয়ে আসছে । রাতের অন্ধকারে পর ভোরের আলোয় যখনই  চারদিক আলোকিত হওয়া সৌন্দর্য্যে হঠাৎ মন প্রফুল্ল হয়ে উঠলো । সাথে ভোরের পাখিদের কলরবতো আছেই। মন বেশ করে চাইছিল রবীন্দ্রনাথের 'নির্জরের স্বপ্নভঙ্গ' কবিতাটা হলে মন্দ হত না।   শিক্ষার্থীঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত