আপডেট :

        রিজার্ভ ১৩৩ মিলিয়ন ডলার কমে ১৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারে

        বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে চলতি বছরের একটি বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ

        চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানের এক পাইলট নিহত

        বাইডেনের হুঁশিয়ারি তোয়াক্কা না করে রাফায় হামলা চালালো ইসরায়েল

        চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীতে বিধ্বস্ত বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটিতে আগুন

        শিক্ষার্থী বিক্ষোভ বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসলেন ঋষি সুনাক

        রাশিয়ায় দুই মার্কিন নাগরিক গ্রেপ্তার

        একক ফলের বৃহত্তম প্রদর্শনী

        বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মুসলিম পরিবারের বিলাসবহুল জীবন

        বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আয়

        ইসরায়েলকে মার্কিন অস্ত্রের চালান বন্ধের হুমকি বাইডেনের

        পোস্টে রিঅ্যাক্ট দেওয়ায় চাকরিচ্যুত প্রধান শিক্ষিকা

        খুলনা মেডিকেল কলেজ প্রকল্প থেকে ‘শেখ হাসিনা’ নামটি বাদ দেওয়ার নির্দেশনা

        চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার নারী শ্রমিকদের জীবন যেভাবে চলছে

        প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬১ চাকরিপ্রত্যাশী।

        শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীর পক্ষে বিজয় মিছিল

        যে যানবাহনে চলাচলে ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে

        যে যানবাহনে চলাচলে ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে

        দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির সঙ্গে কালবৈশাখী ঝড়ের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস

        লালমনিরহাট থেকে ঢাকাগামী বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়া ৩টি বগি উদ্ধার

উচ্চ রক্তচাপ কী এবং করণীয়

উচ্চ রক্তচাপ কী এবং করণীয়

ব্লাড প্রেসার নামে অতি পরিচিত রোগটিই আসলে হাইপারটেনশন। হাইপারটেনশন রোগটি সবার না থাকলেও সুস্থ-অসুস্থ প্রতিটি মানুষেরই ব্লাড প্রেসার থাকে। আসলে হৃপিণ্ড রক্তকে ধাক্কা দিয়ে ধমনীতে পাঠালে ধমনীর গায়ে যে প্রেসার বা চাপ সৃষ্টি হয় তাহলো ব্লাড প্রেসার। এ চাপের একটি স্বাভাবিক মাত্রা আছে আর যখন তা স্বাভাবিক মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখনি তাকে বলা হয় হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ।

স্বাভাবিক রক্তচাপ
একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ মি.মি. মার্কারি। বয়সভেদে এ রক্তচাপ বাড়তে পারে বা কমতে পারে। কারও রক্তচাপ সব সময়ের জন্য যদি বেশি মাত্রায় থাকে (যেমন—১৩০/৯০ বা ১৪০/৯০ বা তারও বেশি) যা তার দৈনন্দিন কাজ বা স্বাভাবিক কাজকর্মকে ব্যাহত করে, তখনই এ অবস্থাটিকে আমরা উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলি।
ধরে নেয়া হয় পূর্ণ বিশ্রামে থাকা একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের রক্তের চাপ বা ব্লাড প্রেসার হবে ১২০/৮০ মিলি মিটার পারদ চাপ। এক্ষেত্রে ১ম সংখ্যাটি (১২০) দ্বারা হার্টের সঙ্কোচনের সময় ধমনীর ব্লাড প্রেসার এবং ২য় সংখ্যাটি দ্বারা হার্টের প্রসারণের সময় ধমনীর ব্লাড প্রেসারকে নির্দেশ করা হয়। এই ১ম প্রেসার সংখ্যাটি যা সিস্টোলিক প্রেসার নামে ডাকা হয়। সবসময়ই ২য়টি থেকে বেশি এবং এর স্বাভাবিক মাত্রা ১৪০ মি.মি-এর নিচে এবং ৯০ মি.মি-এর ঊর্ধ্বে । অন্যদিকে ২য় প্রেসার সংখ্যাটিকে ডায়াস্টোলিক প্রেসার ডাকা হয় এবং এর স্বাভাবিক মাত্রা ৯০ মি.মি-এর নিচে এবং ৬০ মি.মি-এর ঊর্ধ্বে। তাই যখন উপরের প্রেসারটি ১৪০ বা তার ঊর্ধ্বে অথবা নিচের প্রেসারটি ৯০ বা তার ঊর্ধ্বে পাওয়া যায় তখন ধরে নিতে হবে রোগীর ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিকের ঊর্ধ্বে অর্থাত্ তিনি উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন রোগে ভুগছেন। তবে বয়সের ওপর ভিত্তি করে এ মাত্রার কিছুটা তারতম্য হতে পারে।

শরীরের জন্য ক্ষতিকর
কোনো কারণে রক্তচাপ যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় তবে এটি শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য ক্ষতিকর, বিশেষত হৃপিণ্ড ও মস্তিষ্কের জন্য। উচ্চ রক্তচাপ হলে হৃপিণ্ড সেই রক্তচাপের বিপক্ষে রক্ত বেশি জোরে সঙ্কোচন বা পাম্প করতে হয়। এতে হৃপিণ্ডের পরিশ্রম বেড়ে যায়। অর্থাত হৃতপিণ্ড নিজেরই বেশি অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন মতো অক্সিজেন সরবরাহ না পেলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপে রক্তবাহী ধমনীগুলো শক্ত হয়ে যায়। ফলে স্ট্রোক, কিডনি ফেইলিউর, চোখের সমস্যাসহ নানা ধরনের জটিল রোগ দেখা দিতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি সমস্যা ওতপ্রোতভাবে জড়িতে। এর প্রভাব শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্ষতি হতে পারে। তবে মস্তিষ্ক, হার্ট ও কিডনি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রণে থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি সাতগুণ বেড়ে যায়, হার্ট ফেইলরের ঝুঁকি ছয়গুণ এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তিনগুণ বাড়ে।

উচ্চ রক্তচাপের প্রকারভেদ
উচ্চ রক্তচাপ চার প্রকার
১. সিস্টোলিক রক্তচাপ : সীমা-১০০-১৪০ মি.মি পারদ, গড়? -১২০মিমি পারদ
২. ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ : সীমা-৬০-৯০ মি.মি পারদ, গড়-৮০মি.মি পারদ
৩. পালস রক্তচাপ : সীমা-৩০-৪০ মি.মি পারদ
৪. গড় রক্তচাপ : সীমা-৭৮-৯৮মি.মি পারদ

উচ্চ রক্তচাপ কেন হয়?
হাইপারটেনশন রোগের শতকরা ৯৫ ভাগ কারণই বলতে গেলে এখনও সঠিকভাবে জানা হয়ে উঠেনি এবং একে বলা হয় এসেনশিয়াল হাইপারটেনশন, বাকি ৫ শতাংশ হলো সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন এর মধ্যে কিছু আছে কিডনির রোগ, কিছু হরমোনের সমস্যাজনিত রোগ। তাছাড়া ধমনীর রোগ, অসুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং গর্ভাবস্থাও এর জন্য দায়ী হতে পারে।
প্রাপ্তবয়স্কদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কারণ নির্ণয় করা যায় না। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তনের ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হরমোন ও কিডনির ফাংশনজনিত জটিলতায় উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। তাছাড়া অনিয়মিত লাইফস্টাইল, অনিয়ন্ত্রিত ওজন, ধূমপান, এলকোহল, ফাস্টফুড খাবার গ্রহণ, রক্তে কোলেস্টেরলের আধিক্য—এসব কারণে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
ছোটদের ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদেরও উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। জেনেটিক কারণে ফ্যামিলিয়ার হাইপারটেনশনের ক্ষেত্রে (মানে বাবা-মায়ের আছে বাচ্চারও হতে পারে), কিডনির অসুখে, হৃিপণ্ডের মহাধমনীর কোনো একটি জায়গা সঙ্কুচিত থাকলে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয় এবং উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হয়। কিডনির ওপরে এডরেনালগ্রন্থি ঠিকমত কাজ না করলেও উচ্চ রক্তচাপ হয়।

উচ্চ রক্তচাপ এক নিঃশব্দ ঘাতক
উচ্চ রক্তচাপ মানুষকে নিঃশব্দে আস্তে আস্তে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। বিশ্বে এখন প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। বাংলাদেশে প্রায় শতকরা ১০ ভাগ পুরুষ এবং ১৫ ভাগ নারী উচ্চ রক্তচাপে ভুগে থাকে। ৬০ বছরের বেশি শতকরা ৬৫ জনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। গ্রামের চেয়ে শহরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ বেশি। অন্যান্য রোগের সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের পার্থক্য এটাই—যে উচ্চ রক্তচাপের সাধারণত কোনো উপসর্গ থাকে না। এ জন্য যারা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তারা উচ্চ রক্তচাপ সাধারণত অনুভব করেন না। প্রকৃতপক্ষে যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের এক-তৃতীয়াংশ জানেনই না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। সাধারণত রক্তচাপ পরীক্ষা করার সময় এটি ধরা পড়ে।

উচ্চ রক্তচাপের কারণ
উচ্চ রক্তচাপের আসল কারণ অনেক সময় জানা যায় না। কতগুলো কারণ এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত। যেমন—পারিবারিক ইতিহাস, স্থূলতা, কম কায়িক পরিশ্রম, অতিরিক্ত লবণ বা চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া, ধূমপান, বয়স, উদ্বেগ, উত্তেজনা ইত্যাদি। সম্প্রতি সমীক্ষায় দেখা গেছে, আর্সেনিকের বিষক্রিয়া রক্তচাপ বাড়ায়। যাদের রক্তে আর্সেনিকের পরিমাণ যত বেশি, তাদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কাও বেশি। আপনার উচ্চ রক্তচাপ আছে কিনা তা জানার একমাত্র উপায় রক্তচাপ পরীক্ষা করা। একবার মেপে রক্তচাপ বেশি পাওয়া গেলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বলা ঠিক হবে না। দিনের একই সময় পরপর কয়েক দিন রক্তচাপ মেপে যদি বেশি দেখা যায়, তবে উচ্চ রক্তচাপ বলা যেতে পারে। আপনার ডাক্তার আপনাকে এ ব্যাপারে সঠিক পরামর্শ দিতে পারেন।

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ
রোগের প্রাথমিক অবস্থায় অনেক সময়ই রোগীর কোনো অভিযোগ থাকে না। তবে কিছু রোগী মাথার পেছনের দিকে ব্যথা, বেশি প্রস্রাব হওয়া, হঠাত্ হঠাত্ ঘেমে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি উপসর্গ অনুভব করতে পারে। ব্লাড প্রেসার খুব বেশি হলে উপসর্গও বৃদ্ধি পেতে পারে। দীর্ঘদিন ব্লাড প্রেসার অনিয়ন্ত্রিত থাকলে তা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের স্থায়ী ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে এবং সেই জাতীয় সমস্যা নিয়েও রোগী অসুস্থ হতে পারেন। আবার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মাথাব্যথা, ঘাড় ব্যথা, চোখে দেখতে অসুবিধা হওয়া বা চোখে ঝাপসা দেখা। রাতে ঘুমাতে না পারা। সব সময় খিটখিটে মেজাজ থাকা।

উচ্চ রক্তচাপের চিকিত্সা
উচ্চ রক্তচাপের চিকিত্সা দু’ভাবে করা যায়। একটি ওষুধ ছাড়া অন্যটি ওষুধ দিয়ে।
ওষুধ ছাড়া : যাদের হাইপারটেনশনের মাত্রা খুব বেশি নয় কিংবা অল্প কিছুদিন হয় সমস্যা দেখা দিয়েছে তাদের এ পদ্ধতিতে চিকিত্সা দেয়া হয়।
পরিমাণ মতো খাওয়া : খাবার পরিমিত মাত্রায় গ্রহণ করা উচিত। অতিরিক্ত লবণ বা লবণ জাতীয় খাবার পরিহার করা উচিত। ফাস্টফুড বা ফ্রোজেন ফুডে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। প্রাণিজ প্রোটিন ত্যাগ করে শাক-সবজি, সালাদের দিকে ঝোঁকা ভালোু। আতিরিক্ত শর্করা বা চর্বিজাতীয় খাবার না খাওয়া, ধূমপান বা এলকোহলের অভ্যাস থাকলে তা সম্পূর্ণ ত্যাগ করা।
শরীরের বাড়তি ওজন কমানো : শরীরের ওজন অতিরিক্ত হলে ধীরে ধীরে তা কমানো উচিত। এজন্য উচিত নিয়মিত হাঁটা এবং পরিশ্রম করা। অনেকেই ওজন কমানোর জন্য তাড়াহুড়ো করেন—এটা কিছুতেই ঠিক নয়।
ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করা, উপাসনা বা প্রার্থনা করা, দুশ্চিন্তা পরিহার করা, অতিরিক্ত চিন্তা পরিহার করে সহজ-সরল স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে হবে। সকাল অথবা বিকেলে হালকা ব্যায়াম, হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করতে হবে ইত্যাদি।
প্রাথমিক অবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়লে উপরের নিয়ম মানলে অনেকের রক্তচাপ ৩-৬ মাসের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে আসে। এরপরও যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় সেক্ষেত্রে কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া লাগতে পারে।
ওষুধের মাধ্যমে : কার্ডিওলজিস্টরা সাধারণত ডায়েরুটিক্স, বিটা ব্লকার, ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার, এসিই ইনহিবিটর, এআরবি ব্লকার, আলফা ব্লকার বা মস্তিষ্কের কেন্দ্রে কাজ করে প্রেসার কমানোর এমন ওষুধগুলো বিভিন্ন মাত্রায় রোগীর অবস্থা অনুযায়ী ব্যবহার করে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেন।

সতর্কতা
— চল্লিশোর্ধ্ব বয়সে প্রত্যেকেরই উচিত নির্দিষ্ট সময় পরপর রক্তচাপ পরীক্ষা করা। হঠাত্ করে ওষুধ বন্ধ রাখা বা অনিয়মিতভাবে ওষুধ গ্রহণ না করা।
— ওষুধ গ্রহণ অবস্থায়ও অন্তত প্রতিমাসে একবার রক্তচাপ পরীক্ষা করা।
— একজন বিশেষজ্ঞের অধীনে থাকা এবং পরামর্শ অনুযায়ী চলা।
— আলগা লবণ, ফাস্টফুড, ফ্রোজেন ফুড খাওয়ায় সতর্ক থাকা।
— যেহেতু এ রোগে দীর্ঘদিন ওষুধ খেতে হয়, কাজেই বছরে অন্তত একবার কিডনি এবং হার্টের পরীক্ষা অথবা শারীরিক সব পরীক্ষা চেকআপ করানো উচিত।

বাড়িতে কেন রক্তচাপ পরিমাপ করবেন?
বাড়িতে রক্তচাপ মাপার ফলে আপনি নিজে এবং আপনার চিকিত্সক আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত প্রতিদিনের একটি চিত্র পাবেন। এর ফলে জীবন-যাপনের পরিবর্তন এবং ওষুধ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কতখানি ভূমিকা রাখছে সেটা বোঝা যাবে। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগের এক সপ্তাহে প্রতিদিন দু’বার করে রক্তচাপ মাপা এবং রেকর্ড রাখা ভালো। আপনার প্রাত্যহিক জীবনে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে এই রেকর্ড বিশেষ ভূমিকা রাখবে। আপনার উচ্চ রক্তচাপ আছে কিনা সেটা জানার একমাত্র উপায় রক্তচাপ পরিমাপ করা। এজন্য বাসায় রক্তচাপ মাপুন।

রক্তচাপ কীভাবে পরিমাপ করবেন?
— রক্তচাপ পরিমাপের আগে পাঁচ মিনিট বিশ্রাম নিন এবং প্রশান্ত (রিলাক্স) থাকুন। এ সময় মনোযোগ সহকারে কোনো কিছুতে নিবিষ্ট থাকবেন না (যেমন টিভি দেখা)। কথা বলবেন না।
— স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করলে, ঠাণ্ডা লাগলে, রাগাম্বিত হলে, কোনো কিছুর চাপ বা টেনশনে থাকলে কিংবা ব্যথা অনুভূত হলে সেসময় রক্তচাপ পরিমাপ করবেন না।
— খাওয়ার পর অন্ততপক্ষে ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন এবং কফি বা ধূমপান করার পর আধাঘণ্টা অপেক্ষা করুন।
— প্রস্রাব এবং পায়খানার বেগ থাকলে রক্তচাপ মাপার আগে তা সেরে ফেলুন।
— অনাবৃত বাহুতে বাহুবন্ধনী জড়ান।
— এমন চেয়ারে বসুন, যাতে আপনি হেলান দিয়ে বসতে পারেন এবং বাহু রাখার জন্য সাইড টেবিল ব্যবহার করুন।
— বাহুর নিচে তোয়ালে অথবা বালিশ রাখুন, যাতে বাহুটা হার্টের বা হৃিপণ্ডের লেভেলে থাকে।
— পায়ের পাতা মেঝের সমান্তরালে রাখুন, পায়ের ওপর পা উঠিয়ে বসবেন না।
— সাতদিন ধরে বাড়িতে সকাল-সন্ধ্যা দু’বার রক্তচাপ পরিমাপের মাত্রাকে বাড়ির রক্তচাপের রেকর্ড হিসাবে গণ্য করা উচিত।
— সঠিক নিয়মে রক্তচাপ পরিমাপের পরপরই তা লিপিবদ্ধ করুন।
— বাড়িতে একদিন অথবা প্রথমদিন রক্তচাপ মাপার মাত্রাকে সঠিক ধরা উচিত নয়।

উচ্চ রক্তচাপকে ‘না’ বলুন
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এলে এবং নিয়ম-কানুন মেনে চললে যে কোনো মানুষ সাধারণ জীবন-যাপন করতে পারে। সর্বশেষ একমাত্র সচেতনতাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং প্রতিরোধ করা যায়। তাই সবাই সচেতন হোন এ ব্যাপারে।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত