“ফরিদপুরে এ.কে. আজাদ বাড়িতে বিএনপি মিছিল নিয়ে চড়াও, গণসংহতি আন্দোলনের তীব্র প্রতিবাদ
পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি : আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
কর ফাঁকির গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ার পর পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুনডার ডাভিড গুনলাগসন।কর ফাঁকির বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর এই প্রথম কোনো বিশ্বনেতা পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন।কৃষিমন্ত্রী এখন নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন।
গত কয়েক দিন ধরেই আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সেদেশে বিক্ষোভ হচ্ছিল।আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত তিনি সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন।এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি চাপের মুখে ছিলেন গুনলাগসন। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কর ফাঁকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত দুদিন ধরে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে শত শত মানুষ পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভ করছিল।
কর ফাঁকির গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর বিশ্বের অনেক দেশের ক্ষমতাধর রাজনীতিক এবং ব্যবসায়ীরা এখন চাপের মুখে পড়েছেন।
“পানামা পেপার্স” নামে পরিচিতি পাওয়া এই গোপন দলিলপত্রকে এযাবত কালের সবচেয়ে ব্যাপক গোপন তথ্য ফাঁসের ঘটনা বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।
ক্ষমতাধর রাজনীতিক থেকে শুরু করে নামকরা সেলিব্রেটি- অনেকের কর ফাঁকির গোপন তথ্য বেরিয়ে এসেছে এসব দলিলপত্রে। পানামার একটি লিগ্যাল ফার্ম ‘মোসাক ফনসেকা’ থেকে এসব গোপন দলিল ফাঁস হয়ে যায়।
আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুনডার ডাভিড গুনলাগসন ছাড়াও এ পর্যন্ত এই কর ফাঁকির কেলেংকারিতে যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে আছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর আত্মীয়-স্বজন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন এবং বার্সেলোনার ফুটবল তারকা লায়নেল মেসি।
একটি জার্মান সংবাদপত্রের হাতে এসব দলিল আসার পর তারা ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট’ তা শেয়ার করে বিশ্বের প্রায় একশোটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। তাদের এক বছরের অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসে কর ফাঁকির এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।
চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির বর্তমান ও সাবেক আটজন প্রভাবশালী নেতাও কর ফাঁকির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠে। এদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। এ ঘটনার ব্যাপরে বেইজিং এখনো কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
অন্যদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সমর্থকরা এ ঘটনাকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন ষড়যন্ত্র বলে বর্ণনা করেছেন।
ক্রেমলিনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যে সাংবাদিকরা এই গোপন দলিল নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছেন বলে বলা হচ্ছে তাদের অনেকেই সিআইএ বা মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাবেক কর্মকর্তা।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের প্রয়াত বাবাও একটি অফশোর কোম্পানি স্থাপন করেছিলেন যেটি তিরিশ বছর ধরে ব্রিটেনে কোন কর দেয়নি বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, এই কোম্পানিতে মিস্টার ক্যামেরনের কোন শেয়ার নেই।
কিন্তু কর ফাঁকির এই প্রবণতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের ওপর চাপ বাড়ছে।
ব্রিটেনের বিরোধী দলীয় নেতা লেবার পার্টির জেরেমি করবিন কর ফাঁকির এই প্রবণতার বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
শেয়ার করুন