আপডেট :

        এ নিবাসেই যাতে মৃত্যু হয়, এটাই ছিল তাঁর শেষ ইচ্ছা

        ‘আই হেট পলিটিকস’

        একই দিন একই স্থানে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সমাবেশ

        মুহূর্তেই আনন্দ পরিণত হলো বিষাদে

        পরিচালক মাজিদ মাজিদির জন্মদিনআজ

        আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক নির্বাচন

        বিভিন্ন রঙের সামুদ্রিক প্রবাল সাদা হয়ে যাচ্ছে

        ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের আরব আল–আরামাশি এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে হিজবুল্লাহর ছোড়া ড্রোন হামলায় আহত ১৮ জন

        আলফালাহর বাংলাদেশের কার্যক্রম কিনে নিচ্ছে ব্যাংক এশিয়া

        মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে

        কলকাতায় মুজিবনগর দিবস পালন

        কিশোর গ্যাং নেতার ‘টর্চার সেল’, কথার হেরফের হলেই নির্যাতন

        আসন্ন নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে

        সংসদ এলাকায় ড্রোন, মুচলেকায় ছাড়া পেলেন সাবেক এমপির পুত্র

        পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদ মুশতাক আহমেদ এখন টাইগারদের স্পিন বোলিং কোচ

        পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদ মুশতাক আহমেদ এখন টাইগারদের স্পিন বোলিং কোচ

        সম্রাট আকবর, রানি এলিজাবেথ ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্ম সম্পর্কে

        সম্রাট আকবর, রানি এলিজাবেথ ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্ম সম্পর্কে

        সম্রাট আকবর, রানি এলিজাবেথ ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্ম সম্পর্কে

        আগামী জুনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরে অংশ নেবেন টাইগাররা

চট্টগ্রামে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নাম বদলাতে গণআবেদন

চট্টগ্রামে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নাম বদলাতে গণআবেদন

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত একটি স্থান চট্টগ্রামের সার্কিট হাউস। স্বাধীনতার পর এর পূর্ব পাশের একটি রুম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য বরাদ্দ ছিল। চট্টগ্রামের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এ কক্ষে বসে সাক্ষাৎ করতেন তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই ভবন বর্তমানে 'জিয়া স্মৃতি জাদুঘর' হিসেবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারিভাবে সংরক্ষিত। কিন্তু এই স্মৃতি জাদুঘরের নাম পাল্টানোর এক আবেদনে স্বাক্ষর দিয়েছেন চট্টগ্রামের বিশিষ্টজন, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ৫০ হাজার মানুষ। স্মৃতি জাদুঘর থেকে 'জিয়া'র নাম বাদ দেওয়ার এ গণআবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

এদিকে, জিয়ার নাম বাদ দেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতারা। তাদের মতে, যে ভবনটিতে জাদুঘর করা হয়েছে সেটিতে জিয়াউর রহমান নিহত হয়েছেন। অথচ সেখান থেকে সরকার ও সরকারি দলের নেতাকর্মীরা তার নাম মুছে দিতে চাইছে। এমন সিদ্ধান্ত বিএনপি কখনও মেনে নেবে না উল্লেখ করে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, 'জিয়ার নাম নিয়েও অপরাজনীতি হচ্ছে। চট্টগ্রামে সুষ্ঠু রাজনীতির ধারাকে নষ্ট  করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে স্বাক্ষর নিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। বিএনপি কোনোভাবেই জিয়ার নাম মুছে দেওয়ার বিষয়টি মেনে নেবে না। প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনে যাব।'

'জিয়া স্মৃতি জাদুঘর' নামের স্থলে 'মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর' নাম রাখার পক্ষে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের কাছ থেকে গণস্বাক্ষর নেওয়ার কাজ শুরু করেন মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ছাত্র ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগরের নেতারা। চট্টগ্রামের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, বিভিন্ন সড়ক, ধর্মীয় উপাসনালয়সহ অলি-গলিতে বুথ খুলে প্রায় দুই মাস ধরে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন তারা। নাম বাদ দেওয়ার পক্ষে স্বাক্ষর দেওয়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মধ্যে উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রামের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনসহ প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তান, তরুণ থেকে বৃদ্ধ এবং শিক্ষার্থীও রয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, 'জিয়া স্মৃতি জাদুঘরটির অবস্থান আমার সংসদীয় এলাকায়। অনেক আগ থেকেই এটির নাম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে রূপান্তরের দাবি ছিল চট্টগ্রামবাসীর। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে সেই প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় তুলে ধরেছি। প্রধানমন্ত্রী নীতিগতভাবে তাতে সমর্থনও দিয়েছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দিয়েছি। আশা করছি দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত আসবে।'

চট্টগ্রামের প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতি ভবনটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এটির নাম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর রাখা হলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।'

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি বলেন, 'ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত একটি ভবন এটি। এখানে মহান মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতিও জড়িয়ে আছে। জিয়ার নামে স্থাপনা হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষই এই দর্শনীয় স্থানটিতে যান না। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর করে এটাকে সার্বজনীন প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করলে এটি চট্টগ্রাম তথা দেশের সম্পদে পরিণত হবে।' সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজের ছাত্র প্রতিনিধি মায়মুন উদ্দীন মামুন বলেন, 'তরুণ সমাজ মনে-প্রাণে চায় জিয়ার নামটি যাতে বাদ দেওয়া হয়।'

১৯১৩ সালে ব্রিটিশ সরকার একটি ভবন নির্মাণ করে, যা চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস হিসেবে ব্যবহূত হতো এবং সেই নামে পরিচিত ছিল। ১৯৮১ সালের ৩০ মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই সার্কিট হাউসের একটি কক্ষে সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন। ১৯৯৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের নাম পরিবর্তন করে 'জিয়া স্মৃতি জাদুঘরে' রূপান্তরিত করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ছাত্র ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মো. আব্দুর রহিম শামীম বলেন, 'জিয়ার নাম বাদ দেওয়ার লক্ষ্যে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ স্বাক্ষর দিয়েছেন। এসব স্বাক্ষরসহ একটি আবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এই জাদুঘরের নাম সঠিকভাবে রাখার আহ্বান জানিয়েছি আবেদনে।' সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাহুল দাশ বলেন, 'স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী থেকে রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রতিটি সেক্টরের মানুষ স্বতঃস্ম্ফূর্তভাবে জিয়ার নাম বাদ দেওয়ার পক্ষে স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর করেছেন। আশা করছি খুব শিগগির চট্টগ্রামের মানুষের প্রাণের এই দাবি পূরণ হবে।'


শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো খবর