আপডেট :

        জোড়াতালির শার্টে রণবীর, দাম শুনে চোখ কপালে!

        আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস: ৬ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

        জুলাই আন্দোলনকেন্দ্রিক মামলা: সালমান এফ রহমানসহ ৯ জন গ্রেপ্তার

        তীব্র গরমে বিপর্যস্ত ইউরোপ, ১২টি শহরে ২,৩০০ প্রাণহানি

        বৃষ্টির দিনে হজম ঠিক রাখতে কী খাবেন? জেনে নিন টিপস

        অন্ধকারের গভীরে: এক ভয়ানক সত্যের মুখোমুখি

        আইপিএলের বাজার মূল্য ৪৬ হাজার কোটি, আরসিবি দখল করল শীর্ষ স্থান!

        আন্দোলন দমনে হাসিনার গুলির নির্দেশ, ফাঁস হওয়া অডিও যাচাই করল বিবিসি

        ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ: ব্রিকস দেশগুলোর পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকরের হুঁশিয়ারি

        চার গুণীজনকে একান্নবর্তী-রণজিৎ বিশ্বাস স্মৃতি সম্মাননা প্রদান

        চীনের কাছ থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র সংগ্রহ করল ইরান

        শেঙেন ভাঙনের ইঙ্গিত? সীমান্তে কড়াকড়ি বাড়ছে

        ডিএমপি: সচিবালয়, যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ

        তৃতীয় বিয়ের গুঞ্জনে আমির খান, গৌরীকে নিয়ে কী বললেন?

        মুজিবুল হক চুন্নুই বৈধ মহাসচিব — মত ব্যারিস্টার আনিসুলের

        ত্রিমুখী হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ডিবি: মুরাদনগরের মা-ছেলে-মেয়ে হত্যার মামলা

        ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেস

        অলিখিত ফাইনালের লড়াইয়ে প্রথমে বল করছে বাংলাদেশ

        চকলেট দিবসে চমক দিন! তৈরি করুন মজাদার কোকোনাট বল

        ভালোবাসার শহরে গড়ে উঠছে লৌহকঙ্কাল—নতুন নির্মাণে বদলে যাচ্ছে চেহারা

রাগ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? _ ১১ উপায়

রাগ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? _ ১১ উপায়

ভালোবাসা, দুঃখ-বেদনার মত রাগও একটি আবেগ। ছোট কিংবা বড় বিভিন্ন ঘটনায় আমরা রাগ প্রকাশ করি। কিন্তু এই আবেগটি বেশি প্রকাশ পেলে নানা বিপত্তি তৈরি হয়। অনেকেই রেগে গেলে ভাঙচুর করেন, উচ্চস্বরে চিৎকার করেন, এমনকি গায়ে হাতও তুলে ফেলেন। অতিরিক্ত রাগের প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিজীবন, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে। তাই আসুন জেনে নিই যে ১১ উপায়ে রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন-


কথা বলার আগে ভাবুন
প্রচণ্ড উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তে চেষ্টা করতে হবে কোনো কিছু না বলতে। কারণ এমন মানুষ না ভেবে অনেক কিছু বলে থাকে। এতে সম্পর্ক কিংবা পরিস্থিতি খারাপের দিকে চলে যায়। মুহূর্তের উত্তেজনায় এমন কিছু বলা যাবে না যার জন্য পরবর্তীতে অনুশোচনা করতে হতে পারে। একবার শান্ত হয়ে তারপর উদ্বেগ প্রকাশ করা উচিত। অন্যদের আঘাত না করে বা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা না করে, উদ্বেগ ও চাহিদা স্পষ্টভাবে এবং সরাসরি বলার চেষ্টা করতে হবে। কল্পনায় স্টপ সাইন দেখুন। এটি মূলত আবেগ থামানোর কথা মনে করিয়ে দেবে।

দ্রুত স্থান ত্যাগ করুন
হঠাৎ বেশি রাগ করে ফেললে সেই সময় ওই স্থান দ্রুত ত্যাগ করার চেষ্টা করতে হবে। যে মানুষটির ওপর আপনার রাগ তার কাছ থেকে কিছু সময়ের জন্য দূরে থাকলে কিছুক্ষণ পর রাগ নিজে থেকেই কমে আসতে পারে। নিজেকে পরাজিত মনে করবেন না। বরং ভাবুন আপনি রাগকে পরাজিত করে নিজে জয়ী হয়েছেন। স্থান ত্যাগ করা যদি সম্ভব না হয়, অবস্থান পরিবর্তন করুন। যেমন আপনি দাঁড়িয়ে থাকলে বসে পড়ুন।

নিজেকে বলুন ‘টাইমআউট’
টাইমআউট কেবল শিশুদের জন্য নয়। দিনের যে সময়গুলো সাধারণত চাপ পূর্ণ সেই সময়গুলোতে নিজের কাজ থেকে ছোট একটি বিরতি নিন। কিছুক্ষণের নীরবতা বিরক্ত বা রাগান্বিত না হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। নিজেকে কিছু সময়ের জন্য আলাদা রাখুন, একা থাকুন, ভাবুন রাগ কমে যাবে।

লিখে রাখুন
কোন পরিস্থিতিতে আপনি কেন রাগ করছেন বা কেমন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, কীভাবে আপনি অনুভূতিকে প্রকাশ করছেন সেগুলো একটি খাতায় লিখে রাখুন। কীভাবে আপনি আপনার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান সেটিও লিখে ফেলুন এবং বারবার নোটটি পড়ুন।এই পদ্ধতিটি আপনাকে আপনার অনুভূতি প্রকাশ করার সুযোগ দেবে, পাশাপাশি নিজের রাগকে নিজেই নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি যোগাবে।

কিছু ব্যায়াম করুন
রাগের কারণ হতে পারে এমন চাপ কমাতে সাহায্য করে শারীরিক কার্যকলাপ বা ব্যায়াম। ধরুন রাগ আরও বেড়ে যাচ্ছে, তাহলে দ্রুত হাঁটুন বা দৌড়ান। অথবা অন্যান্য উপভোগ্য শারীরিক কার্যকলাপ করার জন্য কিছু সময় ব্যয় করুন। এটা অনেকেই নিজের অজান্তে করে থাকেন। ঘাড় ও কাঁধ ঘোরানোর মতো সহজ ব্যায়াম রাগ কমাতে সাহায্য করে। ধাপে ধাপে শরীরের প্রতিটি অংশে টান দিন এবং ধীরে ধীরে ছেড়ে দিন। শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে এই ব্যায়াম করুন। অথবা সুযোগ পেলে একটু সাইকেল চালিয়ে নিন।

গভীর শ্বাস নিন, কল্পনা করুন
রাগ বাড়লে আমাদের নিশ্বাস ছোট ও দ্রুত হয়। এটা প্রতিহত করুন। নাক দিয়ে ধীরে শ্বাস নিন এবং মুখ দিয়ে ছাড়ুন। অথবা সংখ্যা গণনা করতে পারেন। অর্থাৎ ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনুন। যদি খুব রেগে যান তাহলে ১০০ পর্যন্ত গুনুন। এতে আপনার হৃৎস্পন্দন ধীর হবে এবং রাগ অনেকটাই কমে আসবে। নিজেকে শান্ত করার জন্য একটি শব্দ বা বাক্য বারবার বলুন, যেমন, ‘শান্ত থাক’, ‘সব ঠিক হয়ে যাবে’, ‘নিজেকে সামলাও’, এমন কিছু। চোখ বন্ধ করে নিজেকে একটি শান্ত পরিবেশে কল্পনা করুন। কিছুক্ষণ চুপ থাকুন, ঠোঁট বন্ধ রাখুন।

উল্টো গণনা শুরু করুন
বহুকাল ধরে প্রচলিত এই প্রক্রিয়াটি রাগ নিয়ন্ত্রণে সত্যিই ভাল কাজ করে। মনে হচ্ছে কোন ঘটনায় আপনি বিরক্ত হচ্ছেন, ভেতরে ভেতরে রেগে যাচ্ছেন তখন পিছন দিক থেকে ১০০ গুনতে শুরু করুন। এটি সাময়িকভাবে আপনার মনোযোগকে সরিয়ে দেবে এবং কোনো নেতিবাচক চিন্তা করার আগে বেশ কিছুটা সময় পাওয়া যাবে রাগকে নিয়ন্ত্রণে আনার।

সম্ভাব্য সমাধানগুলো চিহ্নিত করুন
অনেক সময় এমন হয় যে, কারও কোনো কাজে রেগে গেছেন। কিন্তু সেই মানুষটি আপনার সামনে নেই। সে ক্ষেত্রে কাজটা সহজ। কিসের ওপর রাগ করেছেন তার ওপর মনোযোগ না দিয়ে, সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করুন। যেমন সন্তানের অগোছালো ঘর দেখতে বিরক্ত লাগলে সেই ঘরের দরজাটা বন্ধ করে রাখুন কিছুক্ষণ। বাড়ির লোকজন প্রতি রাতে দেরিতে খাবার খেতে চাইলে সন্ধ্যার পরে খাবারের সময়সূচি নির্ধারণ করে দিন। সব জিনিস নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। নিজের বাধা ও ক্ষমতা দুটি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নিয়ে রাখতে হবে। নিজের সম্পর্কে বাস্তববাদী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। নিজেকে মনে করিয়ে দিন, রাগ কিছুই ঠিক করবে না বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে। সমালোচনা করা বা দোষারোপ করা কেবল উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে। অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। কথা বলার ধরনে পরিবর্তন আনুন।

ক্ষমা করতে শিখুন
ক্ষমা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। রাগ ও অন্যান্য নেতিবাচক অনুভূতিকে ইতিবাচক অনুভূতি দিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে নিজের তিক্ততা বা অন্যায়ের অনুভূতি ভুলে থাকা সম্ভব। যার ওপরে রাগ, তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার মানসিকতা তৈরি করে নিতে হবে নিজে নিজেই। মুখের ওপরে বলে যদি কাউকে ক্ষমা করতে না-ও পারেন, অন্তত মনে মনে তাকে ক্ষমা করার চেষ্টা করুন। তাহলে রাগ চলে যাবে।

কখন সাহায্য চাইতে হবে তা জানুন
রাগ নিয়ন্ত্রণ করা শেখা মাঝে মাঝে চ্যালেঞ্জের বিষয় হতে পারে। যদি আপনার রাগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, আপনাকে এমন কিছু করতে বাধ্য করে যার জন্য আপনি অনুতপ্ত হতে পারেন, তাহলে রাগের সমস্যা সমাধানের জন্য সাহায্য নিন। কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন তা আগে থেকে অনুশীলন করুন। আপনার জীবনে যা ভালো, তা মনে করুন। এটা রাগ প্রশমিত করতে সাহায্য করে।

মনোযোগ অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিন 
বন্ধুর সঙ্গে কথা বলুন। যিনি আপনাকে বুঝবেন। আবার যিনি আপনাকে উসকে দিতে পারে, তেমন বন্ধুর কাছ থেকে রাগের সময় দূরত্ব বজায় রাখুন। খুব ভালো বন্ধুর সঙ্গে রাগের কারণ নিয়ে আলোচনা করুন। এতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি পেতে পারেন। জার্নাল বা ডায়েরিতে মনের কথা লিখে ফেলুন। কী বলবেন তা না ভেবে লিখে ফেলুন, এতেও রাগ কমে যাবে। অথবা গান শুনুন। প্রিয় গান চালিয়ে দিন, হেডফোন পরুন বা গাড়িতে গিয়ে গান শুনুন। এতে রাগ সহজে দূর হবে। যার ওপর আপনি রেগে আছেন, তাকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠি বা ইমেইল লিখুন, তারপর মুছে ফেলুন। এতে মন হালকা হবে। সৃষ্টিশীল কিছুর মাধ্যমে রাগ প্রকাশ করুন। রাগ কাজে লাগান আঁকায়, কবিতায়, বাগান করায় অথবা সংগীত সৃষ্টিতে। সৃষ্টিশীলতা রাগ প্রশমনের শক্তিশালী মাধ্যম।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত