আপডেট :

        উত্তর কর্দোফানে সহিংসতার ভয়াবহতা, হাজারো মানুষ স্থানত্যাগে বাধ্য

        জুবিন গার্গের শেষ কাজ রূপ পেল, সিনেমা ‘রই রই বিনালে’ মুক্তি

        উপভোগ নয়, মিতব্যয়িতা—আজ বিশ্ব মিতব্যয়িতা দিবস

        যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর

        ফুটবল বিশ্লেষক মন্তব্য, লিভারপুলের আসল সাইজ মানুষের ধারণার চেয়ে ছোট

        তাইওয়ান স্পষ্ট বার্তা দিল, চীনের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়

        এআই যুগ শেষ, আগামী দিনের বিস্ময়কর প্রযুক্তি: এজিআই

        চীন-জাপান সম্পর্কের নতুন অধ্যায়, শি জিনপিং বৈঠকে যুক্ত নতুন প্রধানমন্ত্রী

        ১,৪০৭ টন আলু নেপালে, বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে রপ্তানি

        বঙ্গোপসাগরে নতুন লঘুচাপের সম্ভাবনা, ভারী বৃষ্টির সতর্কতা

        সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটের তারিখ নিয়ে জল্পনা

        সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বিশ্বনাথে পিএফজির সমাবেশ

        আ.লীগ নেতা নিহত, ঘটেছে নিজ বাড়িতেই

        “সংস্কার চাই, বাধা নয়”—বিরোধীদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহর সতর্কবার্তা

        হাসপাতালে ভর্তি বলিউডের বর্ষীয়ান তারকা ধর্মেন্দ্র

        নিজেদের মাটিতে লজ্জার হোয়াইটওয়াশের স্বীকার টাইগাররা

        গত ১০ মাসে ঝটিকা মিছিল থেকে ৩ হাজারের কাছাকাছি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী আটক

        ‘শাপলা কলি’ নয়, নির্বাচনী প্রতীকে শাপলা চাইছে এনসিপি

        গণভোট নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত প্রধান উপদেষ্টার: আসিফ নজরুল

        সকালে সিলেটের রেলপথ অচল রাখার ঘোষণা

উপভোগ নয়, মিতব্যয়িতা—আজ বিশ্ব মিতব্যয়িতা দিবস

উপভোগ নয়, মিতব্যয়িতা—আজ বিশ্ব মিতব্যয়িতা দিবস

আজ ৩১ অক্টোবর—বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব মিতব্যয়িতা দিবস, যা ‘বিশ্ব সঞ্চয় দিবস’ নামেও পরিচিত। প্রতি বছর এ দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—অপ্রত্যাশিত সময়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে সঞ্চয়ের বিকল্প নেই।

সঞ্চয় শুধু অর্থ জমিয়ে রাখার বিষয় নয়, এটি ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ও আর্থিক স্থিতির প্রতীক। জীবনের অনিশ্চিত মুহূর্তে—অসুস্থতা, চাকরি হারানো কিংবা মন্দার সময়—সঞ্চয়ই হয়ে ওঠে নির্ভরতার সবচেয়ে বড় ভরসা।

বিশ্ব সঞ্চয় দিবসের যাত্রা শুরু হয় প্রায় এক শতাব্দী আগে। ১৯২৪ সালে ইতালির মিলান শহরে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক সেভিংস ব্যাংক কংগ্রেসের শেষ দিনে ইতালীয় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ফিলিপ্পো রাভিজ্জা প্রস্তাব দেন ৩১ অক্টোবরকে ‘বিশ্ব সঞ্চয় দিবস’ হিসেবে পালনের। পরের বছর, অর্থাৎ ১৯২৫ সালে, প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন করা হয়—যা পরবর্তীতে একটি বৈশ্বিক উদ্যোগে রূপ নেয়।

এই দিবসের মূল লক্ষ্য হলো মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং অল্প আয়ের মধ্যেও কীভাবে ভবিষ্যতের নিরাপত্তা গড়া যায়—সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা।


বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ক্রমেই বাড়ছে। এমন সময়ে সঞ্চয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঞ্চয়ের অভ্যাস শুধু ব্যক্তিগত জীবনের উন্নতি আনে না, বরং একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করে।

এ কারণেই উন্নয়নশীল দেশগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশেও, দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ উপলক্ষে নানা উদ্যোগ নেয়—মানুষকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করতে আয়োজন করে সচেতনতামূলক প্রচারণা ও কর্মসূচি।

কারণ, জীবনের অনিশ্চিত মুহূর্তে ছোট্ট একটি সঞ্চয়ই হতে পারে সবচেয়ে বড় আশ্রয়।

সঞ্চয় ও বিনিয়োগের পথে মানসিক প্রস্তুতি
ইতিবাচক মনোভাব রাখুন
অর্থের প্রতি মনোভাবই নির্ধারণ করে আপনি ধনী হবেন, না ঋণগ্রস্ত। টাকাকে কেবল খরচের মাধ্যম নয়, বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ হিসেবে ভাবুন। আয় যতই হোক, একটি অংশ সঞ্চয়ের জন্য আলাদা রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

নিজের দক্ষতা আবিষ্কার করুন
শখ, সৃজনশীলতা বা বিশেষ দক্ষতার মাধ্যমেই তৈরি হতে পারে নতুন আয়ের পথ। কেউ লেখায়, কেউ সংগীতে, কেউ আবার ডিজাইন বা ব্যবসায় পারদর্শী—এই দক্ষতাকেই কাজে লাগান অতিরিক্ত আয়ের উৎস হিসেবে।

স্বপ্নের পিছু ছাড়বেন না
আপনার স্বস্তির আয়স্তর নির্ধারণ করুন। সেই লক্ষ্য অনুযায়ী আয় বাড়ানোর চেষ্টা করুন। কারণ আর্থিক স্বাধীনতা মানে কেবল অর্থ নয়—এটি মানসিক প্রশান্তি ও আত্মমর্যাদার বিষয়ও।

আয়ের উৎস বাড়ান
একটি চাকরি বা ব্যবসার ওপর নির্ভরশীলতা ঝুঁকিপূর্ণ। চাকরি হারানো বা ব্যবসায় ক্ষতির ঝুঁকি থাকেই। তাই ফ্রিল্যান্স কাজ, অনলাইন ব্যবসা বা বিনিয়োগের মতো অতিরিক্ত আয়ের উৎস তৈরি করুন।

মিতব্যয়ী হোন
আয় যতই হোক, খরচ যেন সবসময় নিয়ন্ত্রণে থাকে। আয়ের তুলনায় ব্যয় বাড়লে সঞ্চয় অসম্ভব। জীবনযাত্রায় মিতব্যয়িতা আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রথম ধাপ।

সঞ্চয়কে অগ্রাধিকার দিন
বেতন হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আলাদা করে রাখুন—তা জরুরি তহবিল হোক বা ভবিষ্যতের বিনিয়োগ। অনলাইন ব্যাংকিংয়ের যুগে এটি এখন সহজ ও বাস্তবসম্মত।

অবিচল থাকুন
সঞ্চয় ও বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। মাঝপথে থেমে গেলে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। মনে রাখুন, আজকের প্রতিটি সঞ্চিত টাকাই আগামী দিনের সুরক্ষা।

বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বিনিয়োগ করুন
শেয়ারবাজার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা অন্যান্য বিনিয়োগ ক্ষেত্র—সবই লাভজনক হতে পারে, যদি সঠিক তথ্য ও পরামর্শের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সাধারণত স্থিতিশীল ফল দেয়।

বিশ্ব সঞ্চয় দিবস কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি আত্মসমালোচনার সময়ও। আপনি কি নিজের ভবিষ্যতের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত? প্রতিদিনের খরচের ভেতর থেকেও কি কিছুটা সঞ্চয় করতে পারছেন?

অর্থনৈতিক বাস্তবতা যত কঠিনই হোক, সঠিক পরিকল্পনা, শৃঙ্খলা ও সচেতনতার মাধ্যমে টাকাকে নিজের জন্য কাজ করানো সম্ভব। কারণ আর্থিক স্বাধীনতা কোনো বিলাসিতা নয়—এটি প্রতিটি সচেতন মানুষের মৌলিক অধিকার।



এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত